Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Presidency University

প্রেসিডেন্সি ক্যাম্পাসে ‘প্রেম’ ফেরত? জারি করা নতুন আচরণবিধি স্থগিত, দাবি এসএফআইয়ের

সোমবার সকাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ‘ভালবাসা বিরোধী’ অবস্থানের বিরুদ্ধে বসেছেন ছাত্র-ছাত্রীরা। সকাল থেকেই স্লোগানে, প্রেমের গানে, কবিতায়, তুলি-কলমে মুখর হয় ক্যাম্পাস।

Image of Presidency University

প্রেসিডেন্সির ক্যাম্পাসে বহাল পুরনো নিয়ম রেখেছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। দাবি আন্দোলনকারীদের। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০২৩ ২১:১৪
Share: Save:

চেনা প্রেমের চিত্র কি ফিরছে প্রেসিডেন্সির ক্যাম্পাসে? ‘চাপের মুখে’ পড়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আপাতত ‘পিছু হঠলেন’ বলে দাবি আন্দোলনকারী পডুয়াদের। ছাত্র সংগঠন এসএফআইয়ের দাবি, সোমবার সন্ধ্যায় লিখিত আকারে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন আচরণবিধি জারি হচ্ছে না। বরং পুরনো নিয়মগুলি বহাল থাকছে। তবে নতুন নিয়মগুলি যে তাঁদের বিবেচনাধীন, তা-ও জানিয়েছেন। যদিও পড়ুয়াদের একাংশের মতে, এই সিদ্ধান্তে আচরণবিধির কোন কোন নিয়ম থেকে আপত্তি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, তা স্পষ্ট নয়।

প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কোনও যুগলকে নিভৃতে সময় কাটাতে দেখলেই নাকি তাঁদের ধরছিলেন কর্তৃপক্ষ। এমনকি, সে জন্য তলব করা হচ্ছিল ওই পড়ুয়াদের অভিভাবকদেরও। ২০০ বছরের প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ‘নীতিপুলিশি’র অভিযোগ তুলেছিলেন বহু পড়ুয়া। তা নিয়ে সরব হয়েছিলেন প্রেসিডেন্সির প্রাক্তনীদের একাংশ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়া আচরণবিধি নিয়েও আপত্তি জানিয়েছিলেন বহু পড়ুয়া। ওই আচরণবিধি অনুযায়ী, ক্যাম্পাসে মিটিং–মিছিল করতে হলে অথবা প্রেসিডেন্সি সংক্রান্ত অডিয়ো বা ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে পোস্ট করার ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের অনুমতি প্রয়োজন। সেখানে প্রাক্তনীদের প্রবেশেও কড়া নিয়মের জাল বিছানো হয়েছে। ক্যাম্পাসের ভিতর যখন খুশি পড়ুয়াদের পরিচয়পত্র দেখতে চাইতে পারেন নিরাপত্তারক্ষীরা। এমনকি, প্রেক্ষাগৃহ বুকিংয়ের আগে অনুষ্ঠান সম্পর্কে সবিস্তার তথ্য জানাতে হবে কর্তৃপক্ষকে। এ সব নিয়ম আপত্তিকর বলে মত পড়ুয়াদের একাংশের। এ নিয়েই সম্প্রতি বিতর্ক জোরালো হয়েছে।

কর্তৃপক্ষের মৌখিক প্রতিশ্রুতিতে তাঁরা সন্তুষ্ট নন বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। মঙ্গলবার ‘জেনারেল বডি মিটিং’য়ে কর্তৃপক্ষের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করে আন্দোলনের পরবর্তী গতিপথ স্থির করতে চান তাঁরা।

সোমবার সকাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ‘ভালবাসা বিরোধী’ অবস্থানের বিরুদ্ধে বসেছেন ছাত্র-ছাত্রীরা। সকাল থেকেই স্লোগানে, প্রেমের গানে, কবিতায়, তুলি-কলমে মুখর হয় ক্যাম্পাস। অবস্থানের সময় শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির রুদ্ধদ্বার বৈঠক চলেছে। তাতে আলোচ্য ছিল, হস্টেলের ছাত্র-ছাত্রীদের অবাধ চলাফেরা নিয়ন্ত্রণ।

পড়ুয়াদের অভিযোগ, তাঁদের আন্দোলনের দিশা ঘুরিয়ে দিতেই এ হেন প্রয়াস কর্তৃপক্ষের। ছাত্র সংগঠন আইসি-র তরফে অহন কর্মকারের বক্তব্য, ‘‘চালাকি করে আন্দোলন ভাঙতে চাইছেন কর্তৃপক্ষ। স্পষ্ট ভাষায় কর্তৃপক্ষের তরফে ‘কোড অফ কনডাক্ট’ (আচরণবিধি) পুরোপুরি প্রত্যাহার করার লিখিত বিবৃতি এবং যাঁদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি বসানো হয়েছে, তাঁদের বিনা শর্তে ছাড়পত্র না পাওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে।’’

সোমবার পূর্বপরিকল্পনা অনুসারে ডিন অফ স্টুডেন্টস অরুণ মাইতির হাতে ভালবাসার স্মারক হিসাবে রক্তিম গোলাপের তোড়া তুলে দেন আন্দোলনকারীরা। সন্ধ্যায় কর্তৃপক্ষের তরফে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে দেখা করেন রেজিস্ট্রার। পড়ুয়াদের দাবি, আচরণবিধিতে নতুন কোনও আইন যুক্ত হচ্ছে না বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। বরং পরীক্ষা থেকে ভর্তি— সবেতেই পুরনো নিয়ম চালু থাকবে। তবে সাম্প্রতিককালে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে অভিযুক্তদের কী হবে, সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষের তরফে কিছুই জানানো হয়নি বলে দাবি। যদিও গোটা বিষয় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন এবং ডিন অফ স্টুডেন্টস-এর প্রতিক্রিয়া মেলেনি। আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে সোমবার সন্ধ্যায় ফোন করা হলে তা ধরেননি তাঁরা।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy