ছাত্রছাত্রীদের অন্যায় আবদারের কাছে রাশ আলগা করেননি অনুরাধা লোহিয়া। পড়ুয়াদের অন্যান্য দাবির ব্যাপারে বিবেচনার সুযোগ থাকলেও হাজিরা-বিধি নিয়ে আপস করা হবে না বলে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন। তিনি সিদ্ধান্তে অনড় থাকায় শেষ পর্যন্ত নিজেদের অন্যায় দাবি থেকে সরে আসতে বাধ্য হলেন প্রেসিডেন্সির অন্দোলনকারী পড়ুয়ারাই। তুলে নিলেন অনশন।
নিয়ম অনুযায়ী ক্লাসে ৭৫ শতাংশ হাজিরা না-থাকলে পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হবে না বলে প্রেসিডেন্সিতে আগেই বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল। তার পরে অধিকাংশ পড়ুয়ারই ৭৫ শতাংশ হাজিরা নেই দেখে কর্তৃপক্ষ বুঝতে পারেন, এই অবস্থায় পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হবে না। তখন তাঁরা নিয়মবিধি কিছুটা শিথিল করে জানান, যে-সব ছাত্রছাত্রীর হাজিরা ৫০ শতাংশ বা তার বেশি, এ বারের মতো তাঁদের পরীক্ষায় বসার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু ৫০ শতাংশের কম হাজিরা থাকা সত্ত্বেও পরীক্ষায় বসতে দেওয়ার দাবিতে গত শনিবার অনশন শুরু করেন এক দল ছাত্রছাত্রী। উপাচার্য জানিয়ে দেন, ইতিমধ্যেই শিথিল করা নিয়ম আর শিথিল করা হবে না।
কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আজ, মঙ্গলবার থেকে যে-সেমেস্টার শুরু হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮০ জন ছাত্রছাত্রী তাতে বসার অনুমতি পাচ্ছেন না। সোমবার বিকেলে উপাচার্য জানান, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বা ইউজিসি-র নিয়ম অনুযায়ী পরীক্ষায় বসার জন্য ক্লাসে ৭৫ শতাংশ হাজিরা থাকা দরকার। কিন্তু প্রেসিডেন্সিতে ওই নিয়ম কঠোর ভাবে মানলে পরীক্ষা নেওয়াই কঠিন হতো। কারণ, অধিকাংশ পড়ুয়ারই তো ক্লাসে ৭৫ শতাংশ হাজিরা নেই। তাই নিয়ম কিছুটা শিথিল করে কর্তৃপক্ষ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত হাজিরা থাকলেই ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষায় বসার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে আর ছাড় নয়।
উপাচার্য এখানেই থামেননি। স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ছাত্রছাত্রীদের ক্লাস না-করার প্রবণতা বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ আর কোনও মতেই মেনে নেবেন না। তিনি বলেন, ‘‘এ বারের পরীক্ষার জন্য নিয়ম কিছুটা শিথিল করা হয়েছে। আর তা করা হবে না।” অনুরাধাদেবী সেই সঙ্গেই আশ্বাস দিয়েছেন, যে-সব ছাত্রছাত্রী আজ, মঙ্গলবার শুরু হওয়া সেমেস্টারে বসতে পারছেন না, তাঁরা ‘স্পেশ্যাল সেমেস্টার’ দিতে পারবেন। পড়ুয়াদের বছর যাতে নষ্ট না-হয়, কর্তৃপক্ষ সেটা খেয়াল রাখবেন।
উপাচার্য এ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পরে আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের কয়েক জন প্রতিনিধি তাঁর সঙ্গে দেখা করেন। ক্লাসে হাজিরা কম কেন, তার হরেক ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করেন তাঁরা। অনুরাধাদেবী পড়ুয়াদের বিভিন্ন দাবি সম্পর্কে বিবেচনার আশ্বাস দিলেও হাজিরায় খুব বেশি ঘাটতি থাকা ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষায় বসতে দেওয়া সম্ভব নয়। পরীক্ষার ব্যাপারে উপাচার্য তাঁর সিদ্ধান্ত কোনও ভাবেই বদলাবেন না বুঝতে পেরে ছাত্রছাত্রীরা শেষ পর্যন্ত অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেন। তাঁদের তরফে উপাচার্যের কাছে একটি স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy