প্রতিবারই তাক লাগিয়েছে বড়িশা ক্লাব। নিজস্ব চিত্র।
ভিড়কেও যাঁরা দুর্গাপুজোর অঙ্গ হিসাবে মনে করেন তাঁদের প্রশ্ন আলাদা। কিন্তু যাঁরা ভিড় এড়িয়ে ঠাকুর দেখতে চান, তাঁদের জন্য এ বার দারুণ সুযোগ। কলকাতায় বারোয়ারি এবং বনেদি বাড়ি মিলিয়ে ২৬টি মণ্ডপে উমা এসে যাচ্ছেন মহালয়ার আগেই। পিতৃপক্ষে দেবী এলেও তাঁর পুজো হবে না। কিন্তু দর্শনার্থীদের জন্য প্রস্তুত থাকবেন দশভূজা।
এমনিতেই এ বারের দুর্গাপুজো অন্যবারের তুলনায় আলাদা। ইউনেসকোর থেকে ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পাওয়া পুজো নিয়ে শুধু কলকাতা নয়, গোটা রাজ্যেই অন্য উন্মাদনা। সেই উন্মাদনাই বাড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘মাসআর্ট’। তারা ঠিক করেছে, আগামী ২২ সেপ্টেম্বর থেকে তিনদিনের জন্য মণ্ডপ ও প্রতিমার বিশেষ প্রদর্শনের ব্যবস্থা করবে। ২২ সেপ্টেম্বর মানে আগামী বৃহস্পতিবার। সে দিন থেকে শুরু হয়ে শনিবার পর্যন্ত সারারাত ঘুরে ঘুরে ঠাকুর দেখার সুযোগ। সেই সঙ্গে আরও নানা কিছু।
ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে হাত মিলিয়েছে ইউনেসকো এবং ব্রিটিশ কাউন্সিল। বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরাও আসবেন মণ্ডপ ও প্রতিমা দেখতে। ইউনেসকোর ক্লাস্টার ডিরেক্টর এরিক ফ্ল্যাট আগেই কথা দিয়েছিলেন, এ বার পুজোয় তিনি কলকাতায় আসবেন। তিনি ছাড়াও এই উদ্যোগে শামিল হওয়ার কথা ব্রিটেন, ফ্রান্স, ইতালি, স্পেন এবং জার্মানির ভারতে নিযুক্ত রাষ্টদূতেদের। এই ন’টি দেশের আরও প্রতিনিধি তিন দিনের সফরে কলকাতায় ঠাকুর দেখতে বেরতে পারেন। সংস্থার তরফে ধ্রুবজ্যোতি বসু শুভ জানিয়েছেন, উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতার বেশ কয়েকটি পুজোমণ্ডপ আগেই তৈরি হয়ে যাবে। প্রতিমাও এসে যাবে। প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরের দিন ভোর ৫টা পর্যন্ত ঠাকুর দেখা যাবে ঘুরে ঘুরে। এই মণ্ডপগুলির মধ্যে ২৪টি সর্বজনীন পুজো। যার মধ্যে দু’টি কলকাতার ‘ঐতিহ্যমণ্ডিত’ পুজোর তালিকাভুক্ত। এ ছাড়াও দু’টি বনেদি বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে দর্শনার্থীদের। তালিকায় যেমন দক্ষিণের ত্রিধারা, চেতলা অগ্রণী, বড়িশা ক্লাব রয়েছে, তেমনই রয়েছে উত্তরের কাশী বোস লেন, দমদম পার্ক তরুণদলের পুজো।
সংস্থার সম্পাদক ধ্রুবজ্যোতির কথায়, ‘‘কলকাতার দুর্গাপুজো হল বিশ্বের সবচেয়ে বড় আর্ট গ্যালারি। আমরা সেটাই বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে চাইছি।’’ এই সফর আয়োজনের জন্য নির্দিষ্ট পুজো কমিটি ও পরিবারগুলিকে ২২ সেপ্টেম্বরের আগেই প্রস্তুতি শেষ করতে অনুরোধ করা হয়েছে। সংস্থার প্রতিনিধিরা জানাচ্ছেন, বিদেশি অতিথিরা অনেক সময়েই ভিড় ঠেলে ঠাকুর দেখতে যেতে চান না। বিশেষত, করোনাকালের পর সেই অনীহা থাকবে। এই উদ্যোগ সেই কারণেও। সারা রাত ফাঁকায় ফাঁকায় ঠাকুর দেখানো হবে। বিশেষ বাসের ব্যবস্থা থাকবে। কেউ নিজেদের গাড়িতে যেতে চাইলে তাঁরাও অংশ নিতে পারবেন। গুগ্ল ম্যাপের মাধ্যমে পথনির্দেশ দেওয়া হবে। কেমন করে দুর্গাপুজো হয়, কলকাতার টাউন হলে সেই বিষয়ে একটি প্রদর্শনীরও আয়োজন করা হচ্ছে। সবাই ঠাকুর তৈরি হওয়া, সাজানো দেখতে পাবেন। ঠিক হয়েছে, পরে ওই প্রতিমাগুলি কয়েকটি ছোট বাজেটের পুজো কমিটিকে দিয়ে দেওয়া হবে। প্রদর্শনীতে বাংলার ডোকরা, পটচিত্র, শীতলপাটিও থাকবে।
কী ভাবে কোনও আগ্রহী পুজো-সফরে অংশ নিতে পারবেন? আগে থেকে সংস্থার ওয়েবসাইটে (massart.in) গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। তা হলে প্রত্যেককে একটি করে কিউআর কোড পাঠানো হবে। সেটিই হবে প্রতিটি মণ্ডপে প্রবেশের ছাড়পত্র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy