Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪

বেহাল রাস্তার দোসর হয়েছে বুলবুলের দুর্যোগ

সব চেয়ে খারাপ অবস্থা বেড়াচাঁপা থেকে কাউকেপাড়া পর্যন্ত। কায়ুম আলি মণ্ডল, বিশাল বৈদ্য, লালন রায় নামে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ছেলেমেয়েদের নিয়ে আতঙ্কে পথ চলতে হয়।

খন্দ-পথ: এমনই অবস্থা বারাসত-টাকি রোডের। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়

খন্দ-পথ: এমনই অবস্থা বারাসত-টাকি রোডের। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০১৯ ০৪:৪৭
Share: Save:

এমনিতেই বেহাল হয়ে পড়েছিল রাস্তা। তার উপরে বুলবুলের জেরে দু’দিনের বৃষ্টিতে দুই জাতীয় সড়ক-সহ বারাসত-টাকি, বাদু রোডের মতো চারটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার একেবারে শোচনীয় অবস্থা হয়েছে। অভিযোগ, রাস্তা জুড়ে তৈরি হয়েছে ছোট-বড় গর্ত। তাতে বৃষ্টির জল ভরে থাকায় সেই সব গর্তের গভীরতা বুঝতে পারছেন না অনেকেই। যার ফলে ঘটছে দুর্ঘটনাও। স্থানীয়দের দাবি, ওই সব রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করাই দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।

বারাসতের ডাকবাংলো মোড় থেকে যশোর রোড ধরে চাঁপাডালির দিকে যেতে গেলেই বোঝা যাবে রাস্তার হাল। গোটা রাস্তায় পিচ, পাথর উঠে ইট, মাটি বেরিয়ে পড়েছে। প্রসেনজিৎ মণ্ডল নামে এক গাড়িচালকের কথায়, ‘‘এই দু’দিনের বৃষ্টিতে জল জমে যাওয়ায় কোথায় গর্ত রয়েছে, কতটা গভীর কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। গাড়ির চাকা গর্তে পড়ে অ্যাক্সেল, পাতি ভেঙে যাচ্ছে।’’ স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ওই রাস্তা ধরে চাঁপাডালি মোড় থেকে হাবড়ার দিকে যেতেও এমন বেহাল অবস্থা হয়ে রয়েছে যশোর রোডের।

আরও খারাপ হাল ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের। ডাকবাংলো মোড় থেকে ওই রাস্তা ধরে কলোনি মোড় হয়ে হেলাবটতলা যাওয়ার রাস্তাও ভেঙেচুরে কঙ্কালসার চেহারা নিয়েছে। মাল বোঝাই বড় ট্রাকের চাকা গর্তে পড়ে খারাপ হয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকছে। লেগে থাকছে যানজট। স্থানীয় ব্যবসায়ী নান্টু সরকারের কথায়, ‘‘দোকানের সামনের গর্ত ভরে রয়েছে কাদা জলে। গাড়ির চাকা গর্তে পড়ায় কাদা-জল ছিটকে দোকানের ভিতরে চলে আসছে। পথচারীদের গায়েও তা লাগছে।’’ বাসিন্দারা জানান, ওই রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ চলছে। এক দিকে রাস্তার দু’পাশে নর্দমা, অন্য দিকে রাস্তা উঁচু করা হচ্ছে। তার জেরে হেলাবটতলা থেকে আমডাঙা যাওয়ার রাস্তা মরণফাঁদ হয়ে রয়েছে। সম্প্রতি বাস উল্টে যায় সেখানে।

একই অবস্থা মধ্যমগ্রাম-বাদু রোডের। তবে সব চেয়ে খারাপ অবস্থা বারাসত-টাকি রোডের। স্থানীয় মানুষ জানান, মাস খানেক আগে লোকনাথ উৎসবের সময়ে মেরামতি হয়েছিল ওই রাস্তা। দুর্গা ও কালীপুজোর আগে ফের রাস্তা বেহাল হয়ে পড়ায় পিচ-পাথর ফেলতে দেখা যায় পূর্ত দফতরকে। এত বার মেরামতির পরে এই বৃষ্টিতে ফের রাস্তা বেহাল হয়ে পড়েছে বলেই অভিযোগ তাঁদের।

এক দিকে বারাসত-টাকি রোডের সম্প্রসারণের কাজ চলছে ঢিমেতালে। অন্য দিকে, বারবার তাপ্পি মারার কাজে ক্ষুব্ধ স্থানীয় মানুষ। তাঁদের অভিযোগ, রাজ্য সরকার হাজার হাজার টাকা খরচ করে যে ঠিকা সংস্থাকে দিয়ে মেরামতি করাচ্ছে, তারা এত নিম্নমানের কাজ করছে যে রাস্তা এক মাসও ঠিক থাকছে না। সব চেয়ে খারাপ অবস্থা বেড়াচাঁপা থেকে কাউকেপাড়া পর্যন্ত। কায়ুম আলি মণ্ডল, বিশাল বৈদ্য, লালন রায় নামে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ছেলেমেয়েদের নিয়ে আতঙ্কে পথ চলতে হয়।

রাস্তার কাজ এবং এই সব অভিযোগ প্রসঙ্গে জেলাশাসক চৈতালি চক্রবর্তী বলেন, ‘‘রাস্তাগুলি সংস্কারের কাজ চলছে। কোথায় কী অসুবিধা রয়েছে সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দফতরকে দেখতে বলা হচ্ছে।’’ জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, ওই চারটি রাস্তা যাদের, সেই সব দফতরের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। বৃষ্টির পরে পুরোদমে কাজ শুরু হবে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy