থমকে: মিছিলের ফাঁসে ধর্মতলায়। বুধবার। ছবি: রণজিৎ নন্দী
দুপুরে মিছিল এবং সন্ধ্যায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড— এই জোড়া ফলায় বুধবার দফায় দফায় থমকাল শহর। দুপুরে যে বিপত্তি তৈরি হয়েছিল বিজেপির শিক্ষক সেলের বিধানসভা অভিযান ঘিরে, রাতে তাকেও ছাপিয়ে গেল বাগবাজারের অগ্নিকাণ্ড। অবরুদ্ধ পথে গাড়িতে বসে চরম ভোগান্তিতে পড়লেন মানুষ। রাতে এক সময়ে পরিস্থিতি এমন হয় যে, কলকাতা থেকে উত্তর শহরতলি যাওয়ার রাস্তা চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ হয়ে বাগবাজার স্ট্রিট এবং কাশীপুরের পথ বন্ধ করতে হয় পুলিশকে।
পুলিশ সূত্রের খবর, ঘটনার সূত্রপাত সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ। বাগবাজার স্ট্রিটে উইমেন্স কলেজের পাশে হাজার বস্তিতে আগুন লাগে। উত্তুরে হাওয়ায় তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। আগুন ধরে যায় বাগবাজার মঠের উদ্বোধন কার্যালয়ে। বাদ যায়নি বাগবাজার উইমেন্স কলেজও। আগুনের জেরে ওই কলেজের সামনে ক্ষীরোদপ্রসাদ বিদ্যাবিনোদ অ্যাভিনিউয়ের সামনের রাস্তায় নেমে পড়েন হাজার বস্তির লোকজন। সেখানে দমকলের একটি গাড়িতে ভাঙচুরও চালানো হয়। এর জেরে ব্যাপক যানজটে সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিতে হয় ওই রাস্তা।
টালা সেতু বিপর্যয়ের পরে এই মুহূর্তে উত্তর শহরতলিতে আসা-যাওয়ার অন্যতম বড় ভরসা গিরিশ অ্যাভিনিউ ও ক্ষীরোদপ্রসাদ বিদ্যাবিনোদ অ্যাভিনিউ। সাধারণত দুপুর ৩টের পর থেকে বেলগাছিয়া সেতুর পাশাপাশি এই রাস্তা ধরেই কাশীপুর বা লকগেট উড়ালপুল হয়ে উত্তর শহরতলির দিকে গাড়ি পাঠায় ট্র্যাফিক পুলিশ। কিন্তু ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের জেরে এ দিন এই রাস্তাই বন্ধ করে দিতে হয়। ফলে গাড়ির লম্বা লাইন রাজবল্লভপাড়া, যতীন্দ্রমোহন অ্যাভিনিউ হয়ে গিরিশ পার্ক পর্যন্ত পৌঁছে যায়। বাড়তি পুলিশকর্মী নামিয়েও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাচ্ছিল না। এক সময়ে গিরিশ পার্ক থেকে বিবেকানন্দ রোডের দিকে গাড়ি ঘুরিয়ে দেয় পুলিশ। সে দিক থেকে বিধান সরণি, শ্যামবাজার পাঁচমাথার মোড়, বেলগাছিয়া সেতু, রাজা মণীন্দ্র রোড হয়ে চিড়িয়ামোড় দিয়ে গাড়িগুলিকে বার করতে হয়। পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলে কিছু গাড়ি বাগবাজার স্ট্রিট দিয়ে শ্যামবাজারের দিকে বার করারও চেষ্টা করে পুলিশ।
আরও পড়ুন: বায়ুসেনার জন্য দেশীয় যুদ্ধবিমান তেজস কিনতে বরাদ্দ ৪৮ হাজার কোটি
আরও পড়ুন: পরীক্ষা কমলেও বাড়ল সংক্রমণের হার, অস্বস্তি উত্তর ২৪ পরগনা নিয়ে
এক বাসযাত্রীর বক্তব্য, ‘‘বার বার অগ্নিকাণ্ডের পরেও হুঁশ ফেরে না। দ্রুত যান নিয়ন্ত্রণ করা গেলে এই অবস্থা হত না।’’ অন্য যাত্রীর দাবি, ‘‘ধর্মতলা থেকে বাসে উঠেছিলাম সন্ধ্যা ৭টায়। ডানলপে নামলাম রাত ১১টা। এত ক্ষণ লাগল স্রেফ শ্যামবাজার কাটিয়ে বার হতে।’’
দিনের শুরুতেও অবরুদ্ধ ছিল চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ-যোগাযোগ ভবনের সামনের রাস্তা। সেখানে বিজেপির শিক্ষক সেলের বিধানসভা অভিযান আটকাতে গিয়ে দেখা দেয় ওই যানজট। যোগাযোগ ভবনের সামনেই রাস্তায় বসে পড়েন আন্দোলনকারীরা। তখন গাড়ির লম্বা লাইন পৌঁছে যায় গিরিশ পার্ক পর্যন্ত। সেই যানজটে থাকা এক ব্যক্তির দাবি, ‘‘এই সব মিছিল-মিটিংয়ে আটকে থাকা মানুষের দুর্ভোগ নিয়ে তো কেউ ভাবেনই না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy