ভারতীয় নৌসেনার অবসরপ্রাপ্ত কর্মী উজ্জ্বল চক্রবর্তীর (৫৫) খণ্ডিত মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় তদন্তে নেমে কূলকিনারা পাচ্ছেন না তদন্তকারীরা। পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বারুইপুর থানার ডিহিমল্ল এলাকার একটি পুকুর থেকে উজ্জ্বলের মৃতদেহের উপরের অংশটি পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু পাঁজরের নীচের অংশ উধাও। পাশাপাশি, কাঁধ থেকে তাঁর দু’টি হাতও কেটে নেওয়া হয়েছে বলে দাবি তদন্তকারীদের। উজ্জ্বলের মাথাটি মোড়া ছিল স্থানীয় একটি বস্ত্র বিপণির প্লাস্টিকের প্যাকেট দিয়ে। যা দেখে পুলিশের ধারণা, খুনিরা স্থানীয় বাসিন্দা হতে পারে। তদন্তকারীরা জানান, দেহের যেটুকু অংশ পাওয়া গিয়েছে, সেটুকু মোটামুটি অক্ষতই আছে। তবে, শুক্রবার দিনভর খোঁজ চালিয়েও মৃতদেহের বাকি অংশের খোঁজ মেলেনি।
বারুইপুর থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, গত সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন স্থানীয় সালেপুরের বাসিন্দা উজ্জ্বল। মঙ্গলবার সকালে তাঁর স্ত্রী শ্যামলী ও ছেলে রাজু থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। বৃহস্পতিবার উজ্জ্বলের খণ্ডিত মৃতদেহ পুকুর থেকে উদ্ধার হওয়ার পরে তাঁর ছবির সঙ্গে সেটি মিলিয়ে দেখা হয়। তার পরেই মৃতের স্ত্রী ও ছেলেকে ডেকে দেহ শনাক্ত করতে বলা হয়।
তদন্তকারীদের অনুমান, উজ্জ্বলকে খুন করার পরে মৃতদেহ খণ্ড খণ্ড করা হয়। ঊর্ধ্বাংশটি ফেলা হয় ওই পুকুরে। পাঁজরের নীচ থেকে এমন ভাবে দেহটি কাটা হয়েছে, যা দেখে স্তম্ভিত তদন্তকারীরা। তাঁদের মতে, সুঠাম চেহারার উজ্জ্বলের দেহ কারও একার পক্ষে ওই ভাবে দু’ভাগ করা কার্যত অসম্ভব। সে ক্ষেত্রে একাধিক আততায়ী ওই খুনের ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে বলে মনে করছে পুলিশ। নৌসেনার ওই প্রাক্তন কর্মীকে ভাড়াটে খুনি লাগিয়ে খুন করানো হয়েছে কি না, সেটাও আপাতত ভাবাচ্ছে পুলিশকে। খুনের তদন্তে কোনও সূত্র পেতে উজ্জ্বলের স্ত্রী ও ছেলেকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
পুলিশি সূত্রের দাবি, প্রায় ১৫ বছর আগে নৌসেনার চাকরি থেকে অবসর নিয়েছিলেন উজ্জ্বল। এর পরে বিভিন্ন সংস্থায় নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করেছেন। মদে আসক্ত ছিলেন উজ্জ্বল। প্রায় প্রতিদিনই মদ্যপান করতেন। ঘটনার দিন বাড়িতেই মোবাইল ফোনটি রেখে বেরিয়েছিলেন তিনি। তাঁর ফোনের তথ্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এ দিন মৃতের ছেলে রাজু বলেন, ‘‘আমরা কিছুই বুঝতে পারছি না। বাবা মাঝে মাঝে মদ খাওয়ার পরে এলাকার লোকজনের সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়তেন। গালিগালাজও করতেন। সেই কারণে আমাদের পরিবারকে কেউ পছন্দ করে না।’’
এই ঘটনায় অবশ্য মৃতের পরিবার নির্দিষ্ট কারও নামে অভিযোগ দায়ের করেনি। আপাতত একটি খুনের মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। বারুইপুর পুলিশ জেলার এক কর্তার কথায়, ‘‘সমস্ত সম্ভাবনাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। রাজু ও শ্যামলী-সহ উজ্জ্বলের বাকি আত্মীয়স্বজনদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। উজ্জ্বলের কর্মস্থলেও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy