পার্ক স্ট্রিটে টহলদারি। — নিজস্ব চিত্র
রথযাত্রার দিনেই ইদ পালিত হওয়ার সম্ভাবনা মাথায় রেখে কলকাতার সব থানার ওসিদের সঙ্গে বিশেষ বৈঠক করলেন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার। বাংলাদেশে জঙ্গি হানার পরে কাল, বুধবার দুই ধর্মীয় উৎসব যাতে শান্তিপূর্ণ এবং সুশৃঙ্খল ভাবে উদ্যাপিত হয়, সে ব্যাপারে ওসিদের সতর্ক থাকতে বলেছেন তিনি। প্রায় প্রতি বছরই পুজোর দিনগুলোর মধ্যেই পড়ে মহরম। কখনও বা বিজয়া দশমীতেও। তা ঘিরে জন-সমাগম যথেষ্ট মুনশিয়ানার সঙ্গেই সামলায় কলকাতা। সেই ধাঁচেই বুধবারও শহর জুড়ে থাকবে পুলিশি তৎপরতা।
সোমবার সন্ধ্যায় ওসিদের ডেকে পাঠিয়ে রাজীব কুমার জানিয়ে দেন, ‘‘প্রতি বছরই এই দিনগুলিতে সতর্কতা বেশি থাকে, এ বারও থাকবে। ঢাকায় হামলার কথা মাথায় রেখে আরও সতর্ক থাকতে হবে আমাদের।’’ শহরের যে সব জায়গায় ভিন্দেশি পর্যটকদের সমাগম বেশি— চিড়িয়াখানা, জাদুঘর, পার্ক স্ট্রিটের মতো জায়গাগুলিতে নজরদারি বাড়াতে নির্দেশ দিয়েছেন সিপি। বিশেষ নজরদারির তালিকায় থাকছে বিভিন্ন হোটেল, মেট্রো স্টেশন, রেলস্টেশন, হাওড়া ব্রিজ, দ্বিতীয় হুগলি সেতুও। নজরদারি বাড়াতে বলা হয়েছে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলির উপরেও। লালবাজারের নির্দেশে উৎসবের দিনে মহিলাদের সুরক্ষিত রাখতে ডিসি অফিস, থানাগুলিতে আরও বেশি সংখ্যক মহিলা পুলিশ রাখা হবে।
শুধু তা-ই নয়, সাম্প্রতিক কিছু ঘটনার নিরিখে পুলিশ কমিশনার ওসিদের জানান, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার সঙ্গে প্রত্যেক পুলিশকর্মী যেন নিজেদের সুরক্ষাতেও গুরুত্ব দেন ও সেইমতো প্রস্তুত হয়ে বেরোন। ঢাকায় জঙ্গি হানার মোকাবিলা করতে যাওয়া দুই পুলিশ অফিসারের মৃত্যুর প্রসঙ্গও ওঠে বৈঠকে।
বৈঠকে ডাক পেয়েছিলেন ট্রাফিক গার্ডের ওসিরাও। তাঁদের সিপি জানান, রথযাত্রার মিছিল যে সমস্ত রাস্তা দিয়ে বেরোবে, তার কাছাকাছি গাড়ি পার্কিং যেন না থাকে। শহরের সমস্ত শপিং মল, বাজার-সহ জনবহুল এলাকাগুলির গাড়ি পার্কিং এলাকায় কড়া পুলিশি নজরদারির ব্যবস্থা করতে হবে। ওই সব জায়গায় যাতে দীর্ঘ সময় গাড়ি না দাঁড়ায়, তা-ও দেখতে বলা হয়। সন্দেহজনক কিছু দেখলে মানুষ যাতে তা সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থানায় জানান, তার জন্য প্রচার চালাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে থানাগুলিকে।
দুই ধর্মীয় সম্প্রদায়ের দুই উৎসব একইসঙ্গে পড়ে যাওয়া এ শহরের কাছে নতুন নয়। বিজয়া দশমীর সঙ্গে মহরম বা কালীপুজোর সঙ্গে ইদ পালন করেছে কলকাতা। এই দিনগুলিতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজির বরাবরই গড়ে এসেছে এ শহর। যার তত্ত্বাবধানে থেকেছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত বছরই যেমন বিজয়া দশমী এবং মহরম ছিল গায়ে গায়ে। এ বার বাংলাদেশে জঙ্গিহানা, কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের পরিস্থিতিতে পুলিশ অতিরিক্ত সতর্ক। এ দিন বিধানসভায় জবাবি ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও রাজ্য জুড়ে কড়া নজরদারির প্রসঙ্গ আনেন। সেই সময়ে দর্শক আসনে ছিলেন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারও। লালবাজারে পৌঁছেই তিনি ডেকে পাঠান সব ডিসি এবং ওসিদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy