Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Police Welfare Board

পুলিশকর্মীদের পরিবারের স্বাস্থ্যরক্ষায় উদ্যোগী পর্ষদ

পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, সাংসারিক নানা চাপে নিজেদের শরীর-স্বাস্থ্যের প্রতি একেবারেই খেয়াল রাখতে পারেন না অধিকাংশ পুলিশ পরিবারের গৃহিণীরা।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

শুভাশিস ঘটক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২১ ০৪:৫০
Share: Save:

নিচুতলার পুলিশকর্মীদের পরিবারের মহিলা ও প্রবীণ সদস্যদের স্বাস্থ্য-সুরক্ষা দিতে উদ্যোগী হল পুলিশ কল্যাণ পর্ষদ।

পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতা পুলিশের ২২টি আবাসনে নিচুতলার কর্মীদের হাজার চারেক পরিবার থাকে। জরুরি পরিষেবার কাজে ব্যস্ত থাকায় পুলিশকর্মীদের অনেকেই পরিবারের খুঁটিনাটি বিষয়ে নজর দিতে পারেন না। পর্ষদের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘আমপান ও করোনার সময়ে পুলিশকর্মীদের পরিবারের মহিলা ও বয়স্কদের নানা ধরনের সমস্যা আমাদের সামনে এসেছে। সেই কারণেই তাঁদের জন্য এই পরিকল্পনা করা হয়েছে।

কেমন সেই পরিকল্পনা?

পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, সাংসারিক নানা চাপে নিজেদের শরীর-স্বাস্থ্যের প্রতি একেবারেই খেয়াল রাখতে পারেন না অধিকাংশ পুলিশ পরিবারের গৃহিণীরা। তাঁদের অনেকেই ভুগছেন রক্তাল্পতায়। কোনও রকম পরীক্ষা না করানোয় বেশির ভাগ সময়ে তা ধরাও পড়ছে না। অন্য রোগের চিকিৎসা করাতে গিয়ে মাঝেমধ্যে এই ধরনের সমস্যার হদিস পাওয়া যাচ্ছে। নিয়মিত শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করানোয় অনেকেই জটিল নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।

সেই কারণেই গত এক মাস ধরে কলকাতা পুলিশের ২২টি আবাসনের মহিলা ও প্রবীণ বাসিন্দাদের রক্ত পরীক্ষা করা হচ্ছে। ওই পরীক্ষায় কোনও রোগ ধরা পড়লে তার চিকিৎসার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে পর্ষদের তরফে। এমনকি, যে সব পরিবারের চিকিৎসা বিমা নেই, তাদের জন্য সরকারি প্রকল্পের আওতায় চিকিৎসা বিমার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।

পর্ষদের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘প্রতিটি পরিবারের সদস্যদের কার রক্তের গ্রুপ কী, সেই নথি তৈরি হচ্ছে। তাঁরা কেউ কোনও রোগে ভুগছেন কি না, তা-ও লিপিবদ্ধ করা থাকছে। পুলিশকর্মীদের পরিবারের কেউ আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেখিয়ে প্রয়োজনে হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করা হবে।’’

ওই আধিকারিক জানান, গত কয়েক মাসে বহু পুলিশকর্মী ও তাঁদের পরিজনেরা কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। ওই সময়ে কোভিড রোগীকে হাসপাতাল বা চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে গিয়ে অনেককেই বেগ পেতে হয়েছে। অসুস্থ ব্যক্তির কোনও রকম কো-মর্বিডিটি আছে কি না, তা আগাম জানা না থাকায় অনেক ক্ষেত্রেই অঘটন ঠেকানো যায়নি। সেই কারণেই বহু পুলিশকর্মী ও তাঁদের পরিজনদের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। পর্ষদের মতে, প্রতিটি পরিবারের মহিলা ও প্রবীণদের একটি স্বাস্থ্য-নথি তৈরি করা থাকলে তাঁদের চিকিৎসা করানোর ক্ষেত্রে অনেকটাই সুবিধা হবে।

পর্ষদের এক সদস্য জানান, অধিকাংশ পরিবারের ক্ষেত্রেই বাজার-দোকান করে থাকেন মহিলারা। তাঁদের সুবিধার জন্য এ বার প্রতিটি আবাসনে তাজা আনাজ ও মাছের ভ্যান আনানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সকালে ও বিকেলে প্রতিটি পুলিশ আবাসনের গেটে ওই ভ্যান হাজির হবে। আপাতত কয়েকটি আবাসনে আনাজ ও মাছের ওই ভ্যান আসতে শুরু করেছে। ধাপে ধাপে প্রতিটি আবাসনের ক্ষেত্রেই এই ব্যবস্থা চালু করা হবে।

পর্ষদের আহ্বায়ক তপনকুমার মাইতি বলেন, ‘‘আপাতত অ্যাম্বুল্যান্স এবং আনাজ ও মাছের ভ্যানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি দল গঠন করা হয়েছে। প্রতিটি পুলিশ পরিবারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। স্বাস্থ্য-সুরক্ষা ও পরিষেবামূলক নানা বিষয়ে তাদের

সাহায্য করা হবে। আপাতত রক্তাল্পতায় ভোগা মহিলাদের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসকের পরামর্শ ও ওষুধের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আগামী কয়েক মাস তাঁদের বিনামূল্যে ওই ওষুধ দেওয়া হবে।’’ উল্লেখ্য, মাস কয়েক আগে নিচুতলার পুলিশকর্মীদের কাছে নানা সরকারি পরিষেবা পৌঁছে দিতে রাজ্য ও কলকাতা পুলিশের কল্যাণ পর্ষদ গঠন করা হয়েছে। গত ১০ ডিসেম্বর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আলিপুর বডিগার্ড লাইন্সে পুলিশ আবাসন পর্ষদের অধীনে রাজ্য ও কলকাতা পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের উদ্বোধন করেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Police Welfare Board Kolkata Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy