Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

পঞ্চসায়র-কাণ্ডে দ্রুত চার্জশিটের পথে পুলিশ

গত ১১ নভেম্বর রাতে পঞ্চসায়রের ‘সেবা ওল্ড এজ হোম’ থেকে বেরিয়ে গণধর্ষিতা হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন এক মহিলা।

পঞ্চসায়র হোমের ঘটনার পরেই নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র

পঞ্চসায়র হোমের ঘটনার পরেই নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০১৯ ০২:৩৫
Share: Save:

পঞ্চসায়র গণধর্ষণ-কাণ্ডে আদালতে খুব দ্রুত চার্জশিট পেশ করতে চলেছে পুলিশ। ফরেন্সিক পরীক্ষার রিপোর্ট এবং শহরের সিসি ক্যামেরার ফুটেজও এ ক্ষেত্রে অন্যতম তথ্যপ্রমাণ হিসেবে পেশ করা হতে পারে। একই সঙ্গে যে ব্যক্তির সঙ্গে বসে মদ্যপান করছিল ধৃত দুই অভিযুক্ত, তাঁকেও ঘটনার অন্যতম সাক্ষী হিসেবে ব্যবহার করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন লালবাজারের এক কর্তা। এ দিকে, ওই ঘটনায় ধৃত উত্তম রামের পুলিশি হেফাজতের মেয়াদ শুক্রবারই বাড়ানো হয়েছে আগামী ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত। এ দিন স্পেশ্যাল এডুকেটরের উপস্থিতিতে গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে অভিযোগকারিণীরও।

গত ১১ নভেম্বর রাতে পঞ্চসায়রের ‘সেবা ওল্ড এজ হোম’ থেকে বেরিয়ে গণধর্ষিতা হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন এক মহিলা। মৃগীরোগিণী, মানসিক সমস্যায় ভোগা ওই মহিলাকে একটি সাদা ট্যাক্সিতে তুলে নরেন্দ্রপুর থানার কাঠিপোতায় নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করা হয় বলে তদন্তে উঠে আসে। প্রথমে ট্যাক্সিচালক উত্তম এবং পরে ঘটনায় অভিযুক্ত হিসেবে এক নাবালককে গ্রেফতার করে পুলিশ। তদন্তে আরও জানা যায়, কাঠিপোতায় যাওয়ার পথে রাস্তার ধারের একটি ক্লাবের গায়ে যে সিসি ক্যামেরা বসানো রয়েছে, তা জানত উত্তম। সেই কারণে সে মাটির রাস্তা ধরে। এর পরে একটি ফাঁকা জায়গায় প্রথমে উত্তম এবং পরে ওই নাবালক মহিলাকে ধর্ষণ করে ধাক্কা মেরে ট্যাক্সি থেকে ফেলে দেয়।

তবে ওই ফাঁকা জায়গায় কোনও ক্যামেরা না থাকায় ফুটেজ পায়নি পুলিশ। তেমনই মেলেনি ঘটনার কোনও প্রত্যক্ষদর্শী। যদিও লালবাজারের এক কর্তার দাবি, ‘‘ধর্ষণের ক্ষেত্রে অভিযোগকারিণীর বয়ানই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পায়। তা ছাড়া ফরেন্সিক পরীক্ষায় গণধর্ষণের প্রমাণ মিলেছে। ধৃতেরাও ধর্ষণের কথা স্বীকার করে নিয়েছে।’’ ওই কর্তা জানান, ঘটনার দিন এক ব্যক্তির

সঙ্গে বসে মদ্যপান করছিল ধৃতেরা। তাঁকেও সাক্ষী হিসেবে ব্যবহার করা হতে পারে।

এ দিনই আলিপুরের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় বিচারকের এজলাসে পেশ করা হয়েছিল উত্তমকে। সেখানে সরকারি আইনজীবী রাধানাথ রং বলেন, ‘‘জেরার মুখে এক নাবালকের জড়িত থাকার কথা বলে ফেলেছিল উত্তম। এতেই পরিষ্কার যে, এই ঘটনায় আরও কেউ জড়িত থাকতে পারে। তাই অভিযুক্তকে হেফাজতে নিয়ে আরও জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন রয়েছে।’’ অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী তাঁর মক্কেলের জামিনের আবেদন করেন। দু’পক্ষের সওয়াল শুনে বিচারক সুব্রত মুখোপাধ্যায় ধৃতের পুলি‌শি হেফাজতের মেয়াদ ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়ে দেন।

অন্য দিকে, বর্তমানে লুম্বিনী পার্কের মানসিক হাসপাতালে থাকা অভিযোগকারিণীকে এ দিন দুপুর দু’টো নাগাদ আলিপুর আদালতে গোপন জবানবন্দির জন্য আনা হয়। ছিলেন এক জন স্পেশ্যাল এডুকেটরও। অভিযোগকারিণীর দিদি অবশ্য বলেন, ‘‘জবানবন্দির আগে সকাল থেকেই বোন কান্নাকাটি করছে আগামী রবিবার লুম্বিনী পার্কের হাসপাতাল ওকে ছুটি দেবে না জেনে। সে দিনই আমাদের মায়ের ১১ দিনের কাজ।’’ প্রসঙ্গত, গণধর্ষণের অভিযোগের দু’দিনের মাথায় গত ১৪ নভেম্বর রাতে হঠাৎই মৃত্যু হয় অভিযোগকারিণীর মায়ের।

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Rape Panchasayar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy