পুলিশের গাড়িতে লিঙ্কন। বৃহস্পতিবার। — নিজস্ব চিত্র
ছেলে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার উচ্চপদস্থ কর্মী। পাড়ায় বাবাও পরিচিত ব্যবসায়ী হিসেবে। এখন অবশ্য দু’জনেরই নতুন পরিচয় বধূ-মৃত্যু মামলার অভিযুক্ত। বাগুইআটির অশ্বিনীনগরে কাজল দাস নামে ওই বধূর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় ধৃত তাঁর স্বামী লিঙ্কন দাস ও শ্বশুর নারায়ণচন্দ্র দাসকে বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থলে নিয়ে যায় পুলিশ। পাড়ার লোকের সামনে কোমরে দড়ি পরা অবস্থায় নিজেদের বাড়িতে ঢুকতে গিয়ে লজ্জায় মুখ ঢাকল দু’জনেই।
গত সোমবার রাতে অস্বাভাবিক মৃত্যু হয় কাজলের। তাঁর বাপের বাড়ির লোকজন মৃতদেহ দেখতে পান ভিআইপি রোডের একটি নার্সিংহোমে এসে। কাজলের পরিবারের অভিযোগ, পণের জন্য তাঁদের বাড়ির ছোট মেয়েকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন খুন করছে। অন্য দিকে কাজলের স্বামী ও শ্বশুর পুলিশকে জানিয়েছে, কাজল গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। কাজলের স্বামী, শ্বশুর এবং শাশুড়িকে গ্রেফতারের পরে পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে পণের দাবি ঘিরে মৃত্যু (৩০৪বি) ধারায় মামলা রুজু করেছে।
মঙ্গলবারই তিন জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। এ দিন কাজলের স্বামী ও শ্বশুরকে নিয়ে যাওয়া হয় তাদের বাড়িতে। সেখানে ঘটনার রাতে কী ঘটেছিল তা জানতে চাওয়া হয় তাদের কাছে। প্রায় পঁয়তাল্লিশ মিনিট ধরে বাড়ির একতলা ও দোতলার প্রতিটি ঘরে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। কোন ঘরে কাজল ঘুমোতেন, কাজলের গয়না-সহ অন্য জিনিসপত্র কোথায় থাকত, ঘটনার রাতে কাজলের ঝুলন্ত দেহ কোনখানে পাওয়া গিয়েছিল, কেন পুলিশকে খবর না দিয়ে কাজলের দেহ নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হল— এহেন নানা প্রশ্নের উত্তর বাবা ও ছেলের থেকে জানতে চায় পুলিশ।
যদিও তদন্তকারীদের দাবি, এ পর্যন্ত কাজল আত্মহত্যা করেছেন বলেই দাবি করেছে ধৃতেরা। বৃহস্পতিবারও তারা পুলিশকে একই কথা জানায়। বাবা ও ছেলে বারবার জানিয়েছে, তাঁরা কাজলকে খুন করেনি। এ দিন তারা পুলিশকে জানায়, দোতলায় শোবার ঘরের দরজায় ভিতর থেকে ছিটকিনি দিয়ে রেখেছিলেন কাজল। অনেকক্ষণ ডাকাডাকির পরেও সাড়া না পেয়ে তারা দরজায় ধাক্কা দেয়। ছিটকিনি আলগা থাকায় দরজা খুলে যায়। কাজলের দেহ বাবা ও ছেলে মিলেই ঝুলন্ত অবস্থা থেকে নামিয়েছিলেন। তার পরে গাড়ি
ডেকে কাজলের দেহ নিয়ে তারা নার্সিংহোমে নিয়ে যায় বলে পুলিশকে জানিয়েছে ধৃতেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy