পার্থর মায়ের মৃত্যুর পরেই ধীরে ধীরে গুটিয়ে গিয়েছিল পরিবারটি। বাইরের জগতের সঙ্গে সব সম্পর্কও ছিন্ন করে দিয়েছিলেন শেক্সপিয়র সরণির দে পরিবার। এমনকি নিজেদের মধ্যেও তেমন কথাবার্তা বলতেন না তাঁরা। বাড়িতেও কোনও রান্না হত না। শুধু মাঝে মধ্যে বাইরে থেকে খাবার আসত সেটুকুই। ৩ নম্বর রবিনসন লেনের বাড়ি থেকে ইতিমধ্যেই অরবিন্দবাবুর একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, তাতে লেখা রয়েছে ‘আমি নিজের ইচ্ছায় পৃথিবী ছেড়ে চলে যাচ্ছি’। উদ্ধার করা হয়েছে পার্থর একটি ডায়েরিও। তা থেকেই পার্থর মানসিক অবসাদের প্রমাণ স্পষ্ট বলে পুলিশ জানিয়েছে। পার্থকে পরে গোবরা মানসিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
অথচ বরাবর এমনটা ছিল না। বি টেক নিয়ে পাশ করার পরে আমেরিকায় একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কাজ করতে গিয়েছিলেন পার্থ। প্রায় ১০ বছর সে দেশে কাজ করার পর ২০০৭ সালে ফিরে আসেন তিনি। দিদি দেবযানী ছিলেন কলকাতার নামী স্কুলের গানের শিক্ষিকা। অসম্ভব ভাল পিয়ানো বাজাতেন তিনি। আর অরবিন্দবাবু বেঙ্গালুরুর আলফ্রেড হারবার্টের ডিরেক্টর ছিলেন। ১৯৮৭ সালে তিনি কর্মজীবন থেকে অবসর নেন। এর পরের বছর সপরিবারে কলকাতায় চলে আসেন। তারও এক বছর পরে শেক্সপিয়র সরণির ৩ নম্বর রবিনসন লেনের ওই বাড়িতে থাকতে শুরু করেন তাঁরা। কলকাতায় আসার পরেও টলি ক্লাবে নিয়মিত গল্ফ খেলতে যেতেন অরবিন্দবাবু। কিন্তু সব কিছু পাল্টে যায় ২০০৫ সালে স্ত্রী মারা যাওয়ার পর। মায়ের মৃত্যুর দু’বছরের মধ্যেই পার্থ এবং দেবযানী দু’জনেই একসঙ্গে কাজ থেকে ইস্তফা দেন। তার পর থেকেই তাঁদের আর বাইরে বিশেষ দেখা যেত না। এর পরেই ঘটে দুই প্রিয় পোষ্যের মৃত্যু এবং অবশেষে ৬ মাস আগে দিদিও মারা যাওয়ার পর পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে ওঠে। বহির্জগতের সঙ্গে সম্পর্ক সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। শুধু প্রায়ই পিৎজা, বার্গারের মতো প্রচুর খাবার বাড়ির বাইরে পড়ে থাকতেন দেখতেন প্রতিবেশীরা। এই খাবারগুলি রাতে দিদিকে ‘খাওয়ানোর জন্য’ পার্থ অর্ডার দিতে আনাতেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
এই সংক্রান্ত আরও:
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy