Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

ছাত্রের খোঁজে ডায়েরি হাতে পেল পুলিশ

ধৃত সাধু শীতল দাসের থেকে একটি ডায়েরি উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই ডায়েরিতে যে হাতের লেখা রয়েছে, তা প্রীতমের বলেই পুলিশের কাছে দাবি করেছেন ওই ছাত্রের বাবা।

প্রীতমের ডায়েরির পাতায় তাঁর লেখা ও আঁকা মানচিত্র। নিজস্ব চিত্র

প্রীতমের ডায়েরির পাতায় তাঁর লেখা ও আঁকা মানচিত্র। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৮ ০২:০৪
Share: Save:

মাস তিনেক আগে গড়িয়ার কৃতী ছাত্রের রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় নতুন তথ্য হাতে এসেছে তদন্তকারীদের। প্রীতম বেরা নামে ওই ছাত্রকে অপহরণের অভিযোগে এ মাসে উত্তরাখণ্ড থেকে দুই সাধুবাবাকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। ধৃত সাধু শীতল দাসের থেকে একটি ডায়েরি উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই ডায়েরিতে যে হাতের লেখা রয়েছে, তা প্রীতমের বলেই পুলিশের কাছে দাবি করেছেন ওই ছাত্রের বাবা।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, উদ্ধার হওয়া ওই ডায়েরিতে উত্তরাখণ্ডের একাধিক পাহা়ড়ি পথে বেশ কিছু দিনের রোজনামচা লেখা রয়েছে। এমনকি, উত্তরাখণ্ডের বিভিন্ন পাহাড়ি পথে পৌঁছতে হলে তার রাস্তার মানচিত্র কী হওয়া উচিত, তা-ও ডায়েরিতে এঁকে বোঝানো হয়েছে। ডায়েরিতে আঁকা সেই স্কেচ এবং লেখনি পড়ে তাজ্জব বনে গিয়েছেন তদন্তকারী আধিকারিকেরাও। বিশেষত যে দার্শনিক ভাবে ইংরেজি ভাষায় ওই রোজনামচা লেখা হয়েছে, সেটা সত্যিই প্রীতমের লেখা কি না, তা যাচাই করার জন্য ডায়েরিটি ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠাচ্ছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রের খবর, গত ২৩ মে গড়িয়ার বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন প্রীতম। তার পরে আর বাড়ি ফেরেননি চলতি বছরেই উচ্চ মাধ্যমিক ও জয়েন্ট এন্ট্রান্সে ভাল ফল করা ওই ছাত্র। পরের দিন বাঁশদ্রোণী থানায় ছেলের নিখোঁজ ডায়েরি করেন বাবা প্রদীপ বেরা। গত ৪ আগস্ট প্রদীপবাবু ছেলের মোবাইলে ফোন করলে এক সাধু ওই ফোন ধরে জানান, ওই সিম তিনি কেদারনাথের কাছে রাস্তার ধারে পড়ে থাকা এক ব্যাগ থেকে উদ্ধার করেছেন।

এর পরেই বাঁশদ্রোণী থানার অতিরিক্ত ওসি’র সঙ্গে ছেলের খোঁজে সে দিনই উত্তরাখণ্ড রওনা দিয়েছিলেন প্রদীপবাবু। সেখানে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় ছেলের খোঁজে পুলিশের সঙ্গে ঘুরে বেড়ান তিনি। এর পরে গত ২২ অগস্ট উত্তরাখণ্ড থেকে দুই সাধুকে গ্রেফতার করে কলকাতায় ট্রানজিট রিমান্ডে নিয়ে আসা হয়। ধৃত দুই সাধুর থেকে প্রীতমের ব্যাগ, কাপড়, সিম ছাড়াও মূল্যবান একটি ডায়েরি উদ্ধার করেছে পুলিশ। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জেনেছে, উত্তরাখণ্ডে ওই সাধুদের আশ্রমে বেশ কিছু দিন ছিলেন প্রীতম। তবে এখন তিনি কোথায় রয়েছেন, সে বিষয়ে পুলিশকে তেমন কিছু বলতে পারেনি ধৃতেরা। এ দিকে, উত্তরাখণ্ডে গিয়ে ছেলের সাধু-সঙ্গের ঘটনায় বেশ অবাক তাঁর পরিবার। প্রদীপবাবু বলছেন, ‘‘ও বরাবরই পড়াশোনা নিয়ে থাকত। আধ্যাত্মিক হওয়ার প্রবণতা বা ঈশ্বরভক্তিও ছিল না ওর।’’ তিনি আরও জানিয়েছেন, প্রতি বছর সপরিবার তাঁরা বেড়াতে যেতেন। তবে উত্তরাখণ্ডে কখনও যাওয়া হয়নি তাঁদের।

পুলিশ সূত্রের খবর, প্রীতমের খোঁজে উত্তরাখণ্ড ছাড়াও মহারাষ্ট্রের ঔরঙ্গাবাদে একটি তদন্তকারী দল পাঠানো হয়েছে। লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘প্রীতমের খোঁজে জোর তল্লাশি চলছে। প্রতিটি রাজ্য পুলিশকে নিখোঁজ ছাত্রের ছবি পাঠানো হয়েছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Student Missing diary Police Invesitigation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE