প্রতীকী ছবি।
হাওড়া স্টেশন সংলগ্ন গোলাবাড়ি এলাকার দু’টি হোটেলে জঙ্গিদের আশ্রয় নেওয়ার ঘটনায় উদ্বিগ্ন হাওড়া সিটি পুলিশ। কারণ এমনিতেই সারা বছর ধরে ওই হোটেলগুলিতে প্রচুর বাংলাদেশি নাগরিক এসে আশ্রয় নেন। কিন্তু তাদের সকলের ওপর নজরদারি করা যে সম্ভব নয় তা মানছেন পুলিশ কর্তারা। তাই ওই হোটেলগুলির ওপর নজরদারি বাড়াবার পাশাপাশি হোটেলগুলিতে পর্যাপ্ত সংখ্যক ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা লাগাবার জন্য পুলিশ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার কলকাতা পুলিশের স্পেশাল ট্যাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)-এর পক্ষ থেকে ডবসন রোডে ওই দু’টি হোটেলে তল্লাশি চালানো হয়। সেখানকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে দুই সন্দেহভাজন জঙ্গির সন্ধান মেলে। জানা যায় বাংলাদেশে ব্লগার খুনে অন্যতম অভিযুক্ত তামিম ওরফে মুন ওরফে স্বপন বিশ্বাস ও নয়ন গাজি ওরফে সইফুল গাজি নামে দুই জঙ্গি ওই হোটেলে ছিল। এ ছাড়াও ওই এলাকারই আর একটি লজে গত ৮ অক্টোবর মহম্মদ আফতাব খান ওরফে মাহি নামে আর এক জঙ্গি যে আশ্রয় নিয়েছিল সেই প্রমাণও পুলিশের হাতে এসে গিয়েছে।
হাওড়া সিটি পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধুমাত্র গোলাবাড়ি থানা এলাকাতেই রয়েছে ৭০টি হোটেল। যার মধ্যে কয়েকটি হোটেল বাদে অধিকাংশ হোটেল মাঝরি মানের। এবং ওই হোটেলগুলি অধিকাংশই মূল রাস্তার ওপর নয়, অলিগলির মধ্যে। পুলিশের দাবি, আগে ওই সব হোটেলগুলিকে কেন্দ্র করে মধুচক্রের আসর গড়ে উঠেছিল। দুষ্কৃতীরাও আশ্রয় নিত। কিন্তু পুলিশ কমিশনারেট হওয়ার পর সে সব কমেছে। তা ছাড়া বর্তমানে পুলিশের চাপে প্রত্যেকটি হোটেল কতৃর্পক্ষকে প্রতিনিয়ত বোর্ডারদের আসা-যাওয়ার খাতা ঠিক রাখতে হয়। কারণ পুলিশের পক্ষ থেকে হোটেলগুলিতে নিয়মিত রেজিস্ট্রার পরীক্ষা করা হয়।
কিন্তু তারপরেও বাংলাদেশ থেকে আসা জঙ্গি আশ্রয় নেয় কী করে?
হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ অফিসার বলেন, ‘‘কেউ আধার কার্ডের মতো গুরুত্বপূর্ণ পরিচয় পত্র দিলে তখন হোটেল মালিকের কী করার আছে বলুন। তাঁর কাছে তো ওই কার্ড পরীক্ষা করার মত ব্যবস্থা নেই। এটাই উদ্বেগের।’’ ওই পুলিশ কর্তার বক্তব্য, পরিস্থিতি এখন যা তাতে পুলিশের নজরদারি বাড়াতে যেমন হবে তেমনি পুলিশে অফিসার ও কর্মী সংখ্যা না বাড়ালে হাওড়া স্টেশন চত্বরের মত জায়গার নিরাপত্তা দেওয়া শুধু মুশকিলই নয়, অসম্ভব।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওড়া হোটেলগুলিতে বাংলাদেশ থেকে আসা অনেক নাগরিকরা প্রায়ই থাকেন। তাঁদের কাছ থেকে পাসপোর্ট বা ভিসার জেরক্স নেওয়া হয়। তারপরেই তাঁদের থাকতে দেওয়া হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জঙ্গীরা নিজেদের উত্তর ২৪ পরগণার বাজিতপুরের বাসিন্দা হিসাবে আধার কার্ড জমা দিয়েছিল। তাই সন্দেহের অবকাশ ছিল না। তাছাড়া হোটেলের কর্মীরাও তাঁদের আচরণে কোনও সন্দেহজনক কিছু পাননি বলে পুলিশকে জানিয়েছেন।
হাওড়ার পুলিশ কমিশনার দেবেন্দ্র প্রকাশ সিংহ অবশ্য বলেন, ‘‘আমরা গোলাবাড়ির দিকে আরও আধুনিক ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা বসাচ্ছি। হোটেল মালিকদের আগেই বলা হয়েছিল হোটেলে আরও বেশি করে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা লাগাতে হবে। কিন্তু অনেকেই লাগাননি। তাই আমরা ঠিক করেছি প্রত্যেকটি হোটেলে আচমকা তল্লাশি চালানো হবে। সন্দেহজনক কোনও কাজকর্ম দেখলেই কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মাঝে মাঝে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy