হবু স্বামী ও দেওরের বিরুদ্ধে ধর্ষণ এবং খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করেছেন এক তরুণী। প্রতীকী ছবি।
হবু স্বামী ও দেওরের বিরুদ্ধে ধর্ষণ এবং খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করেছেন এক তরুণী। পুলিশি সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সকালে নরেন্দ্রপুর থানার বনহুগলির নতুনহাট এলাকায় রাস্তার পাশে ঝোপের ভিতর থেকে জখম অবস্থায় ওই তরুণীকে উদ্ধার করা হয়। তাঁর হাতে সিগারেটের একাধিক ছেঁকার দাগ ও শরীরের নানা জায়গায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। অভিযুক্তদের অবশ্য এখনও ধরতে পারেনি পুলিশ।স্থানীয়েরা নরেন্দ্রপুর থানায় খবর দিলে পুলিশ ওই অচৈতন্য তরুণীকে উদ্ধার করে প্রথমে সোনারপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। এর পরে ধীরে ধীরে কিছুটা সুস্থ হওয়ায় শনিবার রাতে তাঁর বয়ান লিপিবদ্ধ করা হয়। পুলিশকে তিনি জানিয়েছেন, তাঁর বাড়ি মুর্শিদাবাদ জেলার লালগোলায়। বছরখানেক আগে স্থানীয় এক যুবকের সঙ্গে তাঁর বিয়ে ঠিক হয়। তার পরেই হবু স্বামী তাঁর নামে লক্ষাধিক টাকা ঋণ নেয় ব্যাঙ্ক থেকে। তরুণীর দাবি, হবু স্বামী ও তার বাড়ির লোকেরা বুধবার রাতে তাঁকে নিজেদের বাড়িতে ডেকেছিল। সেখানেই খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ানো হয় তাঁকে। তাতে তিনি আধা-অচৈতন্য হয়ে পড়েন। এর পরে সেখানেই তাঁকে পর পর ধর্ষণ করে হবু স্বামী ও দেওর। জ্ঞান ফিরলে তরুণী বুঝতে পারেন, তাঁকে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়েছে। শিয়ালদহ স্টেশনে ট্রেন থেকে নামানোর পরে তাঁকে যে ফের ঘুমের ওষুধ মেশানো খাবার খাওয়ানো হয়েছিল, সে কথাও মনে পড়ে তাঁর। তবে তার পরে আর হুঁশ ছিল না।পুলিশি সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে ওই তরুণীকে অচৈতন্য অবস্থায় ঝোপে ফেলে আসা হয়। শুক্রবার সকালে তাঁকে দেখতে পেয়ে নতুনহাট এলাকার বাসিন্দারা থানায় খবর দেন। প্রত্যক্ষদর্শী রাবিয়া বিবি বলেন, ‘‘সকালে রাস্তার পাশে ঝোপের মধ্যে ওই তরুণীকে পড়ে থাকতে দেখা যায়। প্রথমে মনে হয়েছিল, হয়তো প্রাণ নেই। তার পরে বোঝা যায়, বেঁচে আছেন। পুলিশে খবর দিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই তরুণীর পাশে পড়ে থাকা একটি কাপড়ের ব্যাগে কিছু কাগজপত্র ছিল। তা পুলিশ নিয়ে গিয়েছে।’’তদন্তকারীরা জানান, অভিযুক্ত যুবকেরা পেশায় রাজমিস্ত্রি। সোনারপুর-নরেন্দ্রপুর এলাকায় মুর্শিদাবাদের অনেক রাজমিস্ত্রি কাজ করেন। তাই ওই এলাকা তাঁদের অনেকেরই পরিচিত। লালগোলা থেকে অচৈতন্য করে নিয়ে আসার পরে অতিরিক্ত পরিমাণ ঘুমের ওষুধ খাইয়েই ওই তরুণীকে খুন করার চেষ্টা হয়েছিল বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করছে পুলিশ। পুলিশের ধারণা, ওই যুবকেরাও হয়তো কাজের সূত্রে নরেন্দ্রপুর-সোনারপুর এলাকা খুব ভাল ভাবে চেনে। সেই কারণেই সেখানে নিয়ে আসা হয়েছিল তরুণীকে।ওই তরুণীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাঁর হবু স্বামী ও দেওর সম্পর্কে নানা সূত্র পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি তদন্তকারীদের। তাদের ধরতে মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তরুণীর বয়ান অনুযায়ী, প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, তাঁর নামে ব্যাঙ্ক থেকে টাকা ধার নেওয়ার পরেই তাঁকে খুনের ছক কষা হয়েছিল। কারণ, তিনি মারা গেলে ব্যাঙ্ককে ঋণের টাকা ফেরত দিতে হত না। পুরো টাকাটাই তাঁর হবু স্বামী ও তার পরিজনেরা আত্মসাৎ করত। পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে নরেন্দ্রপুর থানা সূত্রের খবর।তরুণী জানিয়েছেন, তিনি বেহুঁশ হয়ে যাওয়ার পরে তাঁর ডান হাতের কব্জিতে বার বার সিগারেটের ছেঁকা দেওয়া হয়েছিল। তিনি মারা গিয়েছেন কি না, ওই ভাবে সম্ভবত সেটাই বোঝার চেষ্টা করছিল অভিযুক্ত দুই যুবক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy