উৎসব পালনের নামে বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালানোর প্রবণতাও বিন্দুমাত্র কমানো যায়নি বলে অভিযোগ। প্রতীকী ছবি।
শহরে সম্প্রতি একের পর এক দুর্ঘটনার পরে প্রশ্ন উঠেছিল, বড়দিন এবং বর্ষবরণের আগে পথের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে কী ভাবে? পুলিশ কমিশনার অবশ্য আশ্বাস দিয়েছিলেন। পথ-নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছিলেন। পুলিশের আশ্বাস অনুযায়ী, শহরের রাস্তায় নজরদারি বাড়লেও উৎসবের নামে নিয়ম ভাঙার পুরনো রোগ সারল না এ বছরেও। কোথাও বড় রাস্তা ছেড়ে গলিপথে বেসামাল হাতে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি ছোটালেন চালক, কোথাও আবার মোটরবাইকের পিছনে একাধিক জনকে বসিয়ে চলল ‘জয়রাইড’। নিয়ম ভাঙার বহর দেখে প্রশ্ন উঠল, বড়দিনের সময়ে কড়া ব্যবস্থা না নিলে এঁদের কি বর্ষবরণে ঠেকানো যাবে?
বড়দিন এবং বর্ষবরণের রাতে বিগত বছরগুলিতে এমন নিয়ম ভাঙার একাধিক অভিযোগ উঠেছে। কোভিড-বিধি উপেক্ষা করেই চলেছে দেদার উৎসব পালন। কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল আশ্বাস দিয়েছিলেন, সাধারণ মানুষের পাশাপাশি পথের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতেও কড়া বন্দোবস্ত করা হবে। মত্ত চালকদের দৌরাত্ম্য রুখতেও পুলিশি ব্যবস্থা থাকবে বলে জানিয়েছিল লালবাজার।
যদিও বড়দিনের দু’দিন আগেও নিয়ম ভাঙার চিত্রে কোনও বদল দেখা যায়নি। উৎসব পালনের নামে বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালানোর প্রবণতাও বিন্দুমাত্র কমানো যায়নি বলে অভিযোগ। শুক্রবার রাতে ই এম বাইপাস, এ জে সি বসু রোড, উল্টোডাঙা, গড়িয়াহাট, শিয়ালদহ, পার্ক স্ট্রিট, মল্লিকবাজার, পার্ক সার্কাস-সহ শহরের একাধিক রাস্তায় দেখা গিয়েছে নিয়ম ভাঙার অসংখ্য ঘটনা। এমনকি, রাত বাড়তেই মত্ত অবস্থায় গাড়ি ছোটাতে দেখা গিয়েছে অনেককে। বড় রাস্তায় পুলিশি নজরদারিতে পরিস্থিতি তা-ও কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও গলিপথ ছিল কার্যত ‘গড়ের মাঠ’। বেলেঘাটা রোডে কর্তব্যরত এক পুলিশকর্মী বললেন, ‘‘এদের থামাবে কে? গাড়ি থামালে এমন ভাব করবে যেন, অন্যায়টা আমিই করে ফেলেছি! পরিস্থিতি মাঝে মাঝে এমন থাকে যে, সব দেখেও না দেখার ভান করে থাকতে হয়।’’
লালবাজার অবশ্য দাবি করেছে, বড়দিনের আগে থেকেই শহরে নজরদারি চলছে। এমনকি, শুক্রবার রাতে ৫০টি জায়গায় বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থা ছিল বলেও জানানো হয়েছে ট্র্যাফিক পুলিশের তরফে। রাত সাড়ে ১০টা থেকে শুরু হওয়া সেই নজরদারি ভোর পর্যন্ত চলে। শুক্রবার রাতেই পুলিশের বিশেষ নজরদারিতে ৪৯ জন মত্ত চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে লালবাজার জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে ৬৪ জন মত্ত চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। লালবাজারের এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘বাহিনীকে বলা হয়েছে, কোনও রকম ছাড় না দিয়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে। বিশেষ নাকা-তল্লাশিরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। আইন ভাঙলে উৎসব বলে কাউকেই ছাড়া হবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy