Advertisement
২১ অক্টোবর ২০২৪
Sealdah ESI Fire

পুলিশের নজরে ইএসআই হাসপাতালের অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা

গত শুক্রবার ভোরে শিয়ালদহের ইএসআই হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মৃত্যু হয় সেখানে ভর্তি থাকা ক্যানসার আক্রান্ত উত্তমের।

শিয়ালদহ ইএসআইয়ে অগ্নিকান্ড।

শিয়ালদহ ইএসআইয়ে অগ্নিকান্ড। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২৪ ০৮:২০
Share: Save:

শিয়ালদহ ইএসআই হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এ বার পুলিশের নজরে ওই হাসপাতালের অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা। যে সংস্থা ওই হাসপাতালের অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে ছিল, তাদের আধিকারিকদের ডাকা হবে বলে পুলিশ
সূত্রের খবর। জানা গিয়েছে, হাসপাতালে নতুন করে কিছু অগ্নি-নির্বাপণ সংক্রান্ত কাজ শুরু হয়েছিল। ছ’মাসের মধ্যে সেই কাজ শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু কোনও অজ্ঞাত কারণে এক বছর বাদেও তা শেষ করা হয়নি। হাসপাতালে অগ্নি-নির্বাপণের জন্য কী
ধরনের ব্যবস্থা ছিল, তা খতিয়ে দেখতে চাইছেন তদন্তকারীরা। পাশাপাশি, ময়না
তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট শোনার পরে মৃত উত্তম বর্ধনের পরিবারের তরফেও লিখিত অভিযোগের ভাবনা শুরু হয়েছে বলে তাঁরা জানিয়েছেন।

গত শুক্রবার ভোরে শিয়ালদহের ইএসআই হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মৃত্যু হয় সেখানে ভর্তি থাকা ক্যানসার আক্রান্ত উত্তমের। ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে পরিবারের তরফে দাবি করা হলেও তা অস্বীকার করেছিলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে শনিবার উত্তমের দেহের ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে বলেই 0প্রাথমিক ভাবে ইঙ্গিত মিলেছে। এমনকি, মৃতের ফুসফুসে কার্বনের উপস্থিতি ছিল। যা ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়ে মৃত্যুর দিকেই ইঙ্গিত করছে বলে জানা গিয়েছে।

যদিও ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট হাতে না পেলেও দমবন্ধ হয়ে মৃত্যুর ইঙ্গিত মিলতেই মৃতের পরিবার অভিযোগ জানানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। রবিবার মৃতের মেয়ে মাম্পি বর্ধন এ কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘বাবার মৃত্যু যদি স্বাভাবিক হত, তা হলে কোনও ভাবেই ফুসফুসে কার্বনের উপস্থিতি থাকত না। আমরা ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট হাতে পাওয়ার অপেক্ষায় আছি। পুলিশের তরফে দু’-এক দিনের মধ্যে তা আমাদের হাতে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। ওই রিপোর্ট হাতে পেলেই আমরা অভিযোগ করব।’’

তবে, এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় শিয়ালদহের ইএসআই হাসপাতালের অগ্নি-নির্বাপণ
ব্যবস্থা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। পুলিশের তরফে এই ঘটনায় ইতিমধ্যে একটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করেছে নারকেলডাঙা থানার পুলিশ। অগ্নিকাণ্ডের তদন্তে ঘটনাস্থলের ফরেন্সিক পরীক্ষাও হয়েছে।

জানা গিয়েছে, হাসপাতালের অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হচ্ছিল। ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে সেই কাজ শুরু হয়। যদিও ছ’মাসের মধ্যে সেই কাজ শেষ করার কথা থাকলেও তা এখনও শেষ হয়নি। এমনকি, দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা রক্ষণাবেক্ষণের কাজও ঠিক মতো করত না বলে একাধিক বার অভিযোগ করেছেন হাসপাতালের সুপার অদিতি দাস। তিনি পুলিশকে লিখিত ভাবে এ কথা জানিয়েছেন।

ইতিমধ্যেই পুলিশের তরফে রক্ষণাবেক্ষণের কাগজপত্র খতিয়ে দেখা শুরু হয়েছে। কিছু কাগজপত্র খতিয়ে দেখার পরে সোমবার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার আধিকারিকদের পুলিশ ডেকে পাঠাতে পরে বলে খবর। মূলত, হাসপাতালের অগ্নি নির্বাপণে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া ছিল, নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ হত কিনা— এমন একাধিক প্রশ্নের উত্তর পেতে চাইছেন তদন্তকারীরা। এক তদন্তকারী আধিকারিক বলেন, ‘‘তদন্তের যে যে দিকগুলি দেখা দরকার, তার প্রত্যেকটি দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সকলের সঙ্গে কথা বলা হবে।’’

অন্য দিকে, এ দিন হাসপাতালের সুপার বলেন, ‘‘যতটা সম্ভব দ্রুত পরিষেবা স্বাভাবিক
করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আজ, সোমবার থেকে হাসপাতালে বহির্বিভাগের পরিষেবা চালু করা হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Sealdah
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE