E-Paper

দিল্লি ডায়েরি: বাইরের অভ্যাস সংসদ-কক্ষেও, দুঃখিত কল্যাণ

সপ্রতিভ প্রিয়ঙ্কা কঙ্গনাকে দেখিয়ে বলেন, “আমি না, ওই যে উনি সুন্দরী!” ছদ্ম-প্রতিবাদী কঙ্গনাও। চলল কিছু ক্ষণের ত্রিকোণ খুনসুটি।

অগ্নি রায়, অনমিত্র সেনগুপ্ত, প্রেমাংশু চৌধুরী

শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২৫ ০৭:০৫
Share
Save

তৃণমূল কংগ্রেসের লোকসভার মুখ্য সচেতক, ডাকাবুকো সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলার ডেসিবেলে মাঝেমধ্যেই কম্পন ধরে অধিবেশন কক্ষের ‘ওয়েল’-এ। তবে বুধবার সংসদে ঢোকার মুখে ঘটনাচক্রে নিজের এক দিকে প্রিয়ঙ্কা গান্ধী অন্য দিকে কঙ্গনা রানাওতকে দেখে তিনিও ললিত। বললেন, “কী সৌভাগ্য, দুই সুন্দরীর সঙ্গে এক সঙ্গে দেখা হল!” সপ্রতিভ প্রিয়ঙ্কা কঙ্গনাকে দেখিয়ে বলেন, “আমি না, ওই যে উনি সুন্দরী!” ছদ্ম-প্রতিবাদী কঙ্গনাও। চলল কিছু ক্ষণের ত্রিকোণ খুনসুটি। লোকসভায় রেল-বাজেট নিয়ে বিতর্কে আর এক কাণ্ড। বাংলার সঙ্গে বঞ্চনা নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দাগছেন কল্যাণ। বিজেপির হয়ে শাসক শিবির থেকে একা পাল্টা প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। বাধা পেয়ে সুকান্তকে কল্যাণ বলে বসলেন, “মন্ত্রী হয়েছিস, সমালোচনা তো সহ্য করতে হবে।” মন্ত্রীকে ‘তুই’ বলে ফেলেছেন বুঝেই শুধরে নিয়ে কল্যাণ বললেন, “বাইরে তুই-তুই করে কথা বলি তো! তাই সংসদ-কক্ষেও বলে ফেলেছি। খুব দুঃখিত।” হেসে সুকান্ত বুঝিয়ে দিলেন তৃণমূল সাংসদের কথায় কিছুই মনে করেননি।

সৌহার্দ: সংসদে ঢোকার মুখে কঙ্গনা, কল্যাণ ও প্রিয়ঙ্কার কথোপকথন।

সৌহার্দ: সংসদে ঢোকার মুখে কঙ্গনা, কল্যাণ ও প্রিয়ঙ্কার কথোপকথন। ছবি: পিটিআই।

স্বচ্ছ ভারত

আলোচনা এড়িয়ে গিলোটিনের মাধ্যমে সদ্য পাশ হয়েছে বিভিন্ন মন্ত্রকের কেন্দ্রীয় বাজেট। দলের হুইপ থাকায় লোকসভায় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী-সহ প্রায় সব বিজেপি সাংসদই। বাজেট পাশ হতেই আসন থেকে উঠে নিজের দফতরের দিকে হাঁটা শুরু করেও দু’পা এগিয়ে দাঁড়িয়ে যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। একটা কাগজ পড়ে থাকতে দেখে সেটা তুলে পকেটে ভরেন। সামনেই ছিলেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। প্রধানমন্ত্রীকে নিচু হয়ে কাগজ কুড়িয়ে নিতে দেখে তিনিও ব্যস্ত হয়ে পড়েন মাটিতে পড়ে থাকা কাগজ কুড়াতে। দেখাদেখি নিচু হন আশেপাশে থাকা অন্য মন্ত্রী ও সাংসদেরা। কে ক’টা কাগজ পেলেন বোঝা যায়নি। তবে কয়েক মুহূর্তের জন্য স্বচ্ছ ভারত যোজনার সাক্ষী থাকল লোকসভা-কক্ষও।

দেড় দশকের অপেক্ষা

সংসদ অধিবেশনের প্রশ্নোত্তর পর্বে সাংসদদের প্রশ্ন করার সুযোগ মেলে। দু’রকম প্রশ্ন হয়। তারকা চিহ্নিত না হলে, লিখিত উত্তর মেলে শুধু। তারকা চিহ্নিত হলে মৌখিক প্রশ্ন এবং জবাবের সুযোগ মেলার সম্ভাবনা। সবটাই লটারি ও সময় পাওয়ার উপর নির্ভরশীল। কংগ্রেস সাংসদ এবং পূর্বতন মন্ত্রী মণীশ তিওয়ারির দাবি, ১৫ বছর ৯৬ দিন পরে তাঁর কোনও তারকা চিহ্নিত প্রশ্ন লোকসভায় এল। তাঁর আরও দাবি, তাঁরশেষ তারকা চিহ্নিত প্রশ্ন এসেছিল ২০০৯-এর ১০ ডিসেম্বর। তার পরে দেড় দশকের অপেক্ষা। তাঁর চিন্তা, ভবিষ্যতে লোকসভার আসন পুনর্বিন্যাস হয়ে সাংসদ-সংখ্যা বাড়লে প্রশ্নের উত্তর পেতে আরও অপেক্ষা করতে হবে না তো!

শিবাজির জন্মতিথি

জন্মদিন অনুযায়ী ছত্রপতি শিবাজি মহারাজের জন্মবার্ষিকী ১৯ ফেব্রুয়ারি পালিত হয়। কিন্তু তাঁর জন্মতিথি অনুযায়ী শিবজয়ন্তী পালিত হয় ১৭ মার্চ। সে দিন শিবসেনার একনাথ শিন্দে গোষ্ঠীর সাংসদ নরেশ মাস্কে মহারাষ্ট্রের সমস্ত দলের সাংসদকে দিল্লির নতুন মহারাষ্ট্র সদনে সকাল সওয়া দশটায় শিবজয়ন্তী উদ্‌যাপনে শিবাজির মূর্তির সামনে জড়ো হওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। ঔরঙ্গজেবের সমাধি সরানো নিয়ে এখন মহারাষ্ট্র রাজনীতিতে বিজেপি ও অ-বিজেপি জোটের মধ্যে জোর বিবাদ। তবুও সকলে হাজির ছিলেন। কিন্তু দেখা গেল, শিন্দের শিবসেনার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রতাপরাও যাদব অনুপস্থিত। তাই অনুষ্ঠান শুরু হতে দেরি হল। প্রশ্ন উঠল, প্রতাপরাও ঔরঙ্গজেবের সমাধি সরানোর পক্ষে নন, সেই জন্যই কি গরহাজির! মন্ত্রিমশাই অবশ্য দেরিতে হলেও পৌঁছলেন। শিবজয়ন্তী ভালয় ভালয় মিটল।

উৎসব: শিবাজির মূর্তি ও সাংসদেরা।

উৎসব: শিবাজির মূর্তি ও সাংসদেরা।

সীতারামনের গ্রামে

অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের জন্ম তামিলনাড়ুর পেরামবালুর জেলার এক গ্রামে। কিন্তু এটি তামিলনাড়ুর একমাত্র জেলা, যেখানে আজও রেল নেই। লোকসভায় রেল নিয়ে আলোচনায় এই তথ্য নিয়ে হাজির অরুণ নেহরু। তিনি নেহরু পরিবারের কেউ নন। পেরামবালুর-এর ডিএমকে সাংসদ। প্রশ্ন তুলেছেন, বুলেট ট্রেন নিয়ে মোদী সরকারের এত বড়াই, অথচ অর্থমন্ত্রীর জন্মভূমিতে রেল নেই! বিজেপির কেউ জানতেনই না। তাই অভিযোগ শুনেও টুঁ শব্দ করেননি।


(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Member of Parliament Budget 2025

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।