গ্রাফিক শৌভিক দেবনাথ
রবিবার বঙ্গে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রথমে ঠিক ছিল শুধুই সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে কয়েকটি প্রকল্পের সূচনা ও শিলন্যাস করবেন তিনি। সেই অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কিন্তু সূত্রের খবর, রবিবার মমতা ওই অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন না।
মোদীর সরকারি অনুষ্ঠান ঠিক হওয়ার পরে পরিকল্পনা বদল হয়। ঠিক হয় হলদিয়ার হেলিপ্যাড ময়দানে একটি রাজনৈতিক সমাবেশও করবেন। পূর্ব মেদিনীপুরে হলদি নদীর পারে হলদিয়া থেকেই শুরু হবে মোদীর নীলবাড়ি দখলের লক্ষ্যে প্রচারাভিযান। বিধানসভা নির্বাচনের আগে মোদীর প্রথম রাজনৈতিক সভা নিয়ে বিজেপি-তে যেমন চূড়ান্ত ব্যস্ততা, তেমনই প্রস্তুতি চলছে সরকারি তরফেও। ইতিমধ্যেই রাজ্যে চলে এসেছেন পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। হলদিয়ায় গিয়ে প্রস্তুতির তদারকিও করেছেন তিনি।
বঙ্গ সফরে আসার আগের দিন শনিবার বাংলায় টুইট করে মোদীও বুঝিয়ে দিলেন, সরকারি অনুষ্ঠানের মাধ্যমেও বাংলার মন ছুঁতে চাইছেন তিনি। শনিবার সন্ধ্যায় পর পর দু’টি টুইট করে তিনি তাঁর সরকারি অনুষ্ঠানের গুরুত্ব বোঝাতে চেয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘আগামী কাল সন্ধ্যায়, আমি পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়ায় থাকব। সেখানে একটি অনুষ্ঠানে, বিপিসিএল নির্মিত এলপিজি আমদানি টার্মিনালটি জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করব। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী উর্জা গঙ্গা প্রকল্পের অন্তর্গত ধোবি- দুর্গাপুর প্রাকৃতিক গ্যাস পাইপলাইন বিভাগ জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করব’। রবিবার তিনি হলদিয়ায় ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনের পরিশোধনাগারের দ্বিতীয় ক্যাটালিটিক-আইসোডিওয়াকসিং ইউনিটের শিলান্যাসও করবেন। একই সঙ্গে ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কে হলদিয়ার রানিচকে রেল লাইনের উপরে ৪ লেনের উড়ালপুলেরও উদ্বোধন করার কথা।
এর পরেই রাজনৈতিক সভায় উপস্থিত থাকবেন তিনি। তবে সরকারি অনুষ্ঠানেও রয়েছে রাজনৈতিক বার্তা দেওয়ার উদ্যোগ। নিয়ম অনুযায়ী, ওই মঞ্চে উপস্থিত থাকার জন্য রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
সেই সঙ্গে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ৪ সাংসদকেও ডাকা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে মেদিনীপুরের সাংসদ তথা রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি দিলীপ ঘোষকে বাদ দিলে বাকি ৩ জন কাঁথির শিশির অধিকারী, তমলুকের দিব্যেন্দু অধিকারী এবং ঘাটালের দীপক অধিকারী (অভিনেতা দেব)-কে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
রবিবারের সফরের ফলে এক পক্ষ কালের মধ্যে এই নিয়ে দু’বার বঙ্গে আসছেন মোদী। গত ২৩ জানুয়ারি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫ তম জন্ম জয়ন্তী পালনের জন্য এক গুচ্ছ সরকারি অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন তিনি। যার মূলটি ছিল ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলে। যেখানে মমতা বক্তব্য রাখার সময় মোদীর উপস্থিতিতে বিজেপি কর্মীরা ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি তুলে বাধা দেয় বলে অভিযোগ ওঠে। এর পরে বক্তৃতা না দিলেও গোটা অনুষ্ঠান মঞ্চেই ছিলেন মমতা। তবে তার পর থেকে যে বিতর্ক শুরু হয়, তা এখনও চলছে। শনিবার রাজ্যে এসে ওই প্রসঙ্গে মমতাকে খোঁচা দিয়েছেন বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডাও। এরই মধ্যে রবিবার মোদীর সফর।
সম্প্রতি শুভেন্দু অধিকারী, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো প্রাক্তন মন্ত্রী-সহ বেশ কয়েকজন বিধায়ক অন্য দল থেকে বিজেপিতে এসেছেন। তাঁদের নিয়ে অমিত শাহ বিভিন্ন কর্মসূচি করলেও এই দলবদল পর্বের পরে প্রথমবার রাজনৈতিক সমাবেশ করবেন মোদী। আর সেই সভা যেহেতু শুভেন্দুর গড় পূর্ব মেদিনীপুরে তাই তার আলাদা রাজনৈতিক তাৎপর্যও রয়েছে। বিজেপি সূত্রে খবর, রবিবার মোদীর মঞ্চে থাকতেও পারেন শুভেন্দু। একই সঙ্গে দলের লক্ষ্য ওই সমাবেশে যেন ভাল লোকজন হয়। বিজেপি নেতারা দাবি করছেন, হলদিয়ার হেলিপ্যাড ময়দানে রবিবার ২ লাখ মানুষের জমায়েত হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy