Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

চেতলায় পিটিয়ে খুন ফুচকাবিক্রেতাকে

সাতসকালে ক্লাবের বাইরে এক ব্যক্তিকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেছিলেন কয়েক জন যুবক। তড়িঘড়ি তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান তাঁরা। সেখানেই মারা যান ওই ব্যক্তি। রবিবার আলিপুর থানার চেতলা হাট রোডে এই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, মৃত মুন্সি সাউ (৪৫) পেশায় ফুচকাবিক্রেতা। আদতে বিহারের বাসিন্দা মুন্সি তাঁর তিন ভাইয়ের সঙ্গে চেতলা হাট রোডে থাকতেন।

মুন্সি সাউ

মুন্সি সাউ

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৪ ০২:২৪
Share: Save:

সাতসকালে ক্লাবের বাইরে এক ব্যক্তিকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেছিলেন কয়েক জন যুবক। তড়িঘড়ি তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান তাঁরা। সেখানেই মারা যান ওই ব্যক্তি। রবিবার আলিপুর থানার চেতলা হাট রোডে এই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, মৃত মুন্সি সাউ (৪৫) পেশায় ফুচকাবিক্রেতা। আদতে বিহারের বাসিন্দা মুন্সি তাঁর তিন ভাইয়ের সঙ্গে চেতলা হাট রোডে থাকতেন। শনিবার রাতে সন্দীপ সিংহ নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি তাঁকে মারধর করেছিলেন বলে অভিযোগ।

পুলিশ জানিয়েছে, মুন্সির দাদা রামবিলাস সাউয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে সন্দীপকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সন্দীপ মারধর করেছিলেন, তার কয়েক জন প্রত্যক্ষদর্শীরও বয়ানও মিলেছে। সন্দীপও জেরায় মারধরের কথা স্বীকার করেন বলে পুলিশের দাবি।

পুলিশ সূত্রের খবর, ওই রাতে সন্দীপের স্ত্রী মেয়েকে নিয়ে চেতলা হাট রোডের ওই গলি দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। সে সময়ে মুন্সিকে বিবস্ত্র অবস্থায় রাস্তায় প্রস্রাব করতে দেখে প্রতিবাদ করলে মুন্সি তাঁদের কটূক্তি ও অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করেন বলে অভিযোগ। তখন একটু দূরেই দাঁড়িয়ে ছিলেন সন্দীপ। ঘটনার কথা জানতে পেরে মুন্সিকে ঘুষি মারেন তিনি। ওই ফুচকাবিক্রেতার ভাইয়েরা এসে ক্ষমা চাওয়ায় বচসা তখনকার মতো মিটে যায়। বাড়ি ফিরে যান মুন্সি।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, রাতে প্রতিদিনের মতোই গলির ফুটপাথে ঘুমোতে গিয়েছিলেন মুন্সি। অভিযোগ, সে সময়ে সন্দীপ ফের তাঁর উপর চড়াও হয়ে মারধর করেন। তদন্তকারীদের দাবি, জেরায় সন্দীপ জানিয়েছেন, মুন্সির নাকমুখ দিয়ে রক্ত ঝরতে এবং তাঁকে বমি করতে দেখে ভয় পেয়ে তাঁকে স্থানীয় একটি ক্লাবের সামনে ফেলে পালিয়ে যান তিনি। এ দিন সকালে সেখান থেকেই মুন্সিকে উদ্ধার করেন ক্লাব সদস্যেরা। এসএসকেএম হাসপাতালে দুপুরে মারা যান ওই ব্যক্তি।

তদন্তে পুলিশ জেনেছে, এই ঘটনার সঙ্গে ওই ক্লাবের কোনও যোগ নেই। ক্লাবের সম্পাদক সুরেশ সিংহও বলেন “আমাদের ক্লাবের মধ্যে কিছু হয়নি। যা হয়েছে, পুরোটাই ক্লাবের বাইরে।” কিন্তু ঘটনায় সন্দীপ ছাড়াও আর কেউ জড়িত কি না, তা নিয়ে রাত পর্যন্ত নিশ্চিত হতে পারেননি তদন্তকারীরা। কলকাতা পুলিশের ডিসি (সাউথ) মুরলীধর শর্মা বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে সন্দীপকে আরও জেরা করতে হবে।”

তবে মুন্সিকে কী ভাবে মারধর করা হল, কী ভাবেই বা তিনি ক্লাবের কাছে পুজোমণ্ডপের সামনে গিয়ে পড়লেন, তা খতিয়ে দেখতে এলাকার সিসিটিভির ফুটেজ জোগাড় করতে গিয়েছিলেন তদন্তকারীরা। কিন্তু পারেননি। কারণ ওই সিসিটিভির ক্যামেরা খারাপ হয়ে গিয়েছে! তবে পুলিশের দাবি, ফুটেজ না মিললেও তদন্তে প্রভাব পড়বে না। কারণ সে ক্ষেত্রে অভিযুক্তের জবানবন্দি আদালতে পেশ করা হতে পারে।

তবে ক্যামেরার বিষয়টি জেনে আলিপুরের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। তাঁরা বলছেন, আলিপুর এলাকায় অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তি বাস করেন। তাঁদের এবং সহ-নাগরিকদের নিরাপত্তার কথা ভেবেই বিভিন্ন মোড়ে নজরদারি-ক্যামেরা বসানো হয়েছিল। সেই ক্যামেরা পুলিশই দেখভাল করে। তা হলে ক্যামেরা খারাপ থাকার কথা পুলিশ জানতে পারল না কেন?

লালবাজারের কর্তারা জানিয়েছেন, ক্যামেরা খারাপ হওয়ার বিষয়টি কোনও ভাবে চোখ এড়িয়ে গিয়েছে। এতে কারও দোষ রয়েছে কি না, খতিয়ে দেখা হবে। ক্যামেরাটিও দ্রুত সারানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে পুলিশের দাবি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy