Advertisement
E-Paper

‘ভুল হয়ে গিয়েছে’ বলে টাকা ফেরতের হিড়িক

ক্ষতিপূরণের দুর্নীতি নিয়ে রাজ্য সরকার কার্যত হুঁশিয়ারি দেওয়ার পরে এ বার সেই টাকা ফেরত দেওয়ার হিড়িক পড়ে গিয়েছে।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০২০ ০২:৪৮
Share
Save

কেউ বলছেন, ‘‘অন্যায় করেছি।’’ কারও বক্তব্য, ‘‘ভুল হয়ে গিয়েছে।’’ আমপানে বাড়ি ভাঙার ক্ষতিপূরণের টাকা নেওয়ার পরে এখন এমনই প্রতিক্রিয়া এক-এক জনের।

ক্ষতিপূরণের দুর্নীতি নিয়ে রাজ্য সরকার কার্যত হুঁশিয়ারি দেওয়ার পরে এ বার সেই টাকা ফেরত দেওয়ার হিড়িক পড়ে গিয়েছে। সোমবার থেকে উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন ব্লকে টাকা ফেরত দিতে দেখা গিয়েছে তৃণমূলের জনপ্রতিনিধি ও তাঁদের ঘনিষ্ঠদের। মঙ্গলবার পর্যন্ত একশো জনেরও বেশি প্রাপক ২০ হাজার টাকা করে ফেরত দিয়েছেন বলে জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর। একলপ্তে এত টাকা ফেরত নেওয়া সম্ভব নয় বলে ধাপে ধাপে টাকা ফেরত নেওয়া হচ্ছে বিডিও দফতর থেকে।

আমপানের ত্রাণে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিডিও অফিস ঘেরাওয়ের পাশাপাশি রাস্তা অবরোধ করেছিলেন কয়েক হাজার স্থানীয় মানুষ। ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছিল গোটা জেলায়। শাসকদলের জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে কারা টাকা পেয়েছেন, সেই তালিকা প্রকাশের দাবিও তুলেছিলেন বিক্ষোভকারীরা। প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা দেওয়ার দাবিতে অনড় ছিলেন তাঁরা।

সোমবার বিডিও অফিসে ১৩টি পঞ্চায়েতের মধ্যে কেবল একটি পঞ্চায়েতের (হাদিপুর-ঝিকরা ২) টাকা ফেরত নেওয়া হয়। টাকা ফেরত দেন ১২ জন। অন্যায় ভাবে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল ওই পঞ্চায়েতের শাসকদল ঘনিষ্ঠ জাহাঙ্গির আলমের বিরুদ্ধে। তিনি সেই টাকা ফেরত দেন ।

মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘‘ঘর আমারও ভেঙেছে। তবে তার ক্ষতিপূরণ হিসেবে আট-দশ হাজার টাকা পেলেই ঠিক ছিল। পঞ্চায়েত বলার পরে আবেদন করেছিলাম। কিন্তু আংশিকের বদলে পুরো ক্ষতিপূরণ বাবদ ২০ হাজার টাকাই যে চলে আসবে, ভাবতে পারিনি। তাই বিডিও অফিসে গিয়ে টাকা ফেরত দিয়ে এসেছি। কারণ, সত্যিই অত বেশি টাকা পাওয়ার মতো ক্ষতি আমার হয়নি।’’

আরও পড়ুন: বাসস্থান কি পরিচ্ছন্ন, চাওয়া হতে পারে ছবি

সোমবার বারাসত ১ নম্বর ব্লক অফিসে গিয়ে টাকা ফেরত দেন কদম্বগাছি পঞ্চায়েতের একশো দিনের কাজের সুপারভাইজার তারিকুল ইসলামও। সঙ্গে ছিলেন আরও কয়েক জন। তারিকুল বলেন, ‘‘আমি কিন্তু ভুল করে আবেদন করিনি। আমার বাড়ি ভেঙেছিল, তাই টাকা নিয়েছিলাম। পরে মনে হল, যাঁদের আরও বেশি ক্ষতি হয়েছে, টাকাটা তাঁদেরই বেশি প্রয়োজন। তাই ফেরত দিয়েছি।’’

বারাসত ২ নম্বর ব্লকে গিয়ে কেমিয়া খামারপাড়ার মদনপুরের পঞ্চায়েত সদস্য ঝন্টু আলিও টাকা ফেরত দেন। তিনি বলেন, ‘‘ভুল হয়েছিল, তাই টাকা ফেরত দিয়েছি।’’ ওই ব্লকেরই পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ আসের আলি, তাঁর আত্মীয় এবং ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধেও টাকা নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। তবে ভুল স্বীকার করে আসেরও বলেছিলেন, ‘‘টাকা ফেরত দেব।’’

টাকা ফেরতের ভিড় বাড়ছে প্রতিদিনই। তবে লজ্জায় অনেকেই টাকা ফেরতের আবেদনপত্র তোলা বা চেক পৌঁছে দেওয়ার কাজ করছেন অন্য কারও মাধ্যমে। জেলাশাসক চৈতালি চক্রবর্তী এ দিন বলেন, ‘‘সবে টাকা ফেরত নেওয়া শুরু হয়েছে। এর পরে মোট কত জন টাকা ফেরত দিলেন, তার হিসেব হবে।’’ তবে বেশ ভাল অঙ্কের টাকাই রাজ্যের কোষাগারে ফেরত আসতে চলেছে বলে জানিয়েছেন প্রশাসনের এক কর্তা।

Cyclone Amphan Cyclone Disaster

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}