Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
Covid

COVID19: বাড়ছে কোভিড-আতঙ্ক, শপিং মল থেকে বাজার, শহর জুড়ে চলছে বিধি ভাঙার ‘উৎসব’

সংক্রমণের প্রকোপ কমতেই করোনা-বিধি শিথিল করার পথে হেঁটেছিল শহরের একাধিক শপিং মল। চলছিল স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরার তোড়জোড়।

অবাধ: (বাঁ দিকে) দক্ষিণ কলকাতার একটি শপিং মলে নেই  কোভিড-সচেতনতার বালাই। (ডানদিকে) নিউ মার্কেট চত্বরে ভিড়ে মাস্ক পরে নেই কার্যত এক জনও। শনিবার।

অবাধ: (বাঁ দিকে) দক্ষিণ কলকাতার একটি শপিং মলে নেই কোভিড-সচেতনতার বালাই। (ডানদিকে) নিউ মার্কেট চত্বরে ভিড়ে মাস্ক পরে নেই কার্যত এক জনও। শনিবার। ছবি: সুমন বল্লভ

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২২ ০৬:২৮
Share: Save:

সংক্রমণ ফের ঊর্ধ্বমুখী হতেইকরোনা-বিধি কঠোর ভাবে বলবৎ করার কথা বলেছিলেন শহরের বিভিন্ন শপিং মল কর্তৃপক্ষ। যদিও বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, মলের ভিতরে অধিকাংশ মানুষই বিধি মানার কোনও রকম তোয়াক্কা করছেন না। কড়াকড়ি যা রয়েছে, তার প্রায় সবটাই খাতায়-কলমে। মাস্ক ছাড়াই লোকজন অবাধে ঢুকছেন মলে। আর এ নিয়ে শপিং মলের কর্মীদের প্রশ্ন করলেই উত্তর আসছে, ‘‘আমরা আর কত বলব!’’ তবে, বিধি না মানার এই ‘প্রতিযোগিতা’য় শপিং মলের চেয়েও বেশ কয়েক কদম এগিয়ে রয়েছে শহরের বাজারগুলি।

সংক্রমণের প্রকোপ কমতেই করোনা-বিধি শিথিল করার পথে হেঁটেছিল শহরের একাধিক শপিং মল। চলছিল স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরার তোড়জোড়। কিন্তু সম্প্রতি সংক্রমণের লেখচিত্র ফেরঊর্ধ্বমুখী হতেই কঠোর বিধিনিষেধ চালু করার কথা বলেছিল শহরেরএকাধিক শপিং মল। জানানো হয়েছিল, মলে ঢুকতে হলে মাস্ক পরতেই হবে। ঢোকার সময়ে প্রত্যেকের শরীরের তাপমাত্রা মাপা হবে বলেও জানানো হয়েছিল। সেই সঙ্গেই দাবি করা হয়েছিল, প্রতিদিন একাধিক বার জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে গোটা মল।

কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, আমজনতার একটা বড় অংশই শপিং মলে ঢোকার পরে কোনও রকম বিধি মানার তোয়াক্কা করছেন না। তখন মাস্ক চলে যাচ্ছে পকেটে বা ঝুলে থাকছে থুতনিতে। বেপরোয়া এই মনোভাব কম বয়সিদের মধ্যে যেন আরও বেশি। যা দেখেশনিবার দক্ষিণ কলকাতার একটি শপিং মলে বেড়াতে যাওয়া এক ব্যক্তি বললেন, ‘‘নিয়ম তো কেবল খাতায়-কলমে। সকলেই নিজের মর্জির মালিক। দেখার কোনও লোক নেই।’’ এ দিন কসবার একটি শপিং মলে মাস্ক ছাড়া ঘুরে বেড়ানো এক ব্যক্তিকে মাস্ক না পরার কারণজিজ্ঞাসা করতেই উত্তর এল, ‘‘দেখুন, কোভিড আসলে কাগুজে বাঘ। যতটা হাবভাব দেখিয়েছিল, তার কিছুই এখন আর নেই। ভয় পেয়ে কী হবে?’’ এ দিন প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের একটি শপিং মলের জেনারেল ম্যানেজার দীপ বিশ্বাস বললেন, ‘‘সরকারি তরফে নতুন করে কোনও বিধিনিষেধের কথা আমাদেরজানানো হয়নি। তবে, আমরা কয়েক দিন আগে থেকেই কোভিড-বিধি কঠোর ভাবে মেনে চলছি।’’ অনেকটা একই বক্তব্য কসবার একটি শপিং মলের জেনারেল ম্যানেজার কে বিজয়নের। তিনি বললেন, ‘‘শুরু থেকেই করোনা-বিধি কঠোর ভাবে মেনে চলা হচ্ছিল। তা এখনও বজায় রয়েছে।’’

বিধি ভাঙায় পাল্লা দিচ্ছে নিউ মার্কেট, গড়িয়াহাট–সহ শহরের একাধিক বাজারও। ক্রেতা ও বিক্রেতাদের অধিকাংশেরই মুখে মাস্কের বালাই নেই। দূরত্ব-বিধি উড়িয়েই চলছে ‘সিজ়ন সেল’-এর বাজার। শনিবার বিকেলে নিউমার্কেট চত্বরে গিয়ে দেখা গেল, উপচে পড়ছে ভিড়। ক্রেতা থেকে বিক্রেতা, প্রায় কারও মুখেই মাস্কের বালাই নেই। মাস্ক পরছেন না? প্রশ্ন শুনেই ‘দেড়শো দেড়শো’ বলে চিৎকারের ফাঁকে এক বিক্রেতা বললেন, ‘‘দাদা, সিজ়ন সেলের বাজার। ও সব করোনার ভয়-টয় আর দেখাতে আসবেন না। ও সব আবার পরে হবে।’’

শহরের এক বেসরকারি হাসপাতালের বক্ষরোগ চিকিৎসক অনির্বাণ নিয়োগী বললেন, ‘‘সাধারণ মানুষকে তো মাথায় বন্দুকঠেকিয়ে নিয়ম মানতে বাধ্য করা যায় না। এত মৃত্যু ও ভোগান্তির পরেও যদি শিক্ষা না হয়ে থাকে, তা হলে আবার একটা ঢেউয়ের জন্য অপেক্ষা করাছাড়া আমাদের আর কোনও উপায় থাকবে না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Covid COVID Rules
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE