প্রতীকী ছবি।
রাজ্যে প্রায় প্রতিদিনই ডেঙ্গিতে মৃত্যু ঘটছে। সোমবার বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে বারাসতের বাসিন্দা, পঁচিশ বছরের এক তরুণীর। তাঁর ডেথ সার্টিফিকেটে ডেঙ্গি শক সিন্ড্রোমের উল্লেখ রয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিজনেরা। মশাবাহিত এই রোগের প্রকোপ কত দিন চলবে, তা নিয়ে সংশয়ে চিকিৎসকেরাও। তাঁরা জানাচ্ছেন, সংক্রমণ না কমলে মৃত্যুও কমবে না।
জানা গিয়েছে, বারাসতের ছোট জাগুলিয়ার বাসিন্দা মল্লিকা দাস মালিক কয়েক দিন ধরে জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন। গত ৮ নভেম্বর জানা যায়, তিনি ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় বারাসতের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাঁকে। সেখানেই ডেঙ্গি শকে আক্রান্ত হন মল্লিকা। বাইপ্যাপ দেওয়া অবস্থায় গত ১১ নভেম্বর তাঁকে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১২ নভেম্বর, শনিবার তরুণীকে ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়েছিল। সোমবার তাঁর মৃত্যু হয়।
ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে আজ, বুধবার সমস্ত জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, সরকারি মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষদের নিয়ে বৈঠক করবেন স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম। সূত্রের খবর, ২১ নভেম্বর রাজ্যের ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক রয়েছে। এ দিকে, বার বার বলা সত্ত্বেও জেলার অধিকাংশ ছোট ও মাঝারি বেসরকারি হাসপাতাল, নার্সিংহোম এবং ল্যাবরেটরি থেকে ডেঙ্গি আক্রান্তের প্রকৃত তথ্য মিলছে না। ফলে পরিসংখ্যান বা বাস্তব পরিস্থিতি নিয়ে বিভ্রান্তি থাকছে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, রাজ্যে সব থেকে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি উত্তর ২৪ পরগনা, কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, মুর্শিদাবাদ-সহ উত্তরবঙ্গের দু’-একটি পাহাড়ি জেলায়। কলকাতা পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডের পাশাপাশি খোদ ফিরহাদ হাকিমের ওয়ার্ড, চেতলা এলাকায় ৮২ নম্বরেও ডেঙ্গি পরিস্থিতি ভাবনার কারণ হয়ে উঠেছে। পুরসভার স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, সেখানে ডেঙ্গি পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক নয়। চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত ৮২ নম্বর ওয়ার্ডে আক্রান্তের সংখ্যা ২০০ পেরিয়ে গিয়েছে। গত সপ্তাহে নিজের ওয়ার্ডে ডেঙ্গি নিয়ে মানুষকে সচেতন করতে রাস্তায় নেমেছিলেন মেয়র। নিজেই জানিয়েছিলেন, আগে ডেঙ্গি কমলেও ফের তা বাড়ছে। তাঁর দেখানো পথে শহর জুড়ে ডেঙ্গি মোকাবিলায় রাস্তায় নেমেছেন কাউন্সিলরেরা। তবে বিরোধীদের অভিযোগ, তাঁরা তিন মাস আগে থেকে রাস্তায় নামলে ডেঙ্গি পরিস্থিতি এতটা ভয়াবহ চেহারা নিত না। কাউন্সিলরদের সচেতনতার অভাবের বিষয়টি ইতিমধ্যেই স্বীকার করেছেন মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) তথা ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ।
কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, টালি নালা লাগোয়া শহরের একাধিক ওয়ার্ডে গত তিন মাস ধরে ডেঙ্গি যথেষ্ট বেড়েছে। ৮২ নম্বর ওয়ার্ড ছাড়াও ১০, ১১, ১৩ নম্বর বরোর একাধিক ওয়ার্ডের মধ্যে দিয়ে টালি নালা গিয়েছে। অভিযোগ, নালার দু’পাশে প্রচুর আবর্জনা জমায় সেখানে মশা জন্মাচ্ছে। পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের দাবি, টালি নালায় নিয়মিত সাফাই অভিযান চলছে। তবু এক শ্রেণির নাগরিক কোনও সচেতনতার তোয়াক্কা না করে ময়লা ফেলছেন। অন্য দিকে, নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ভিতরে নির্মীয়মাণ একটি বহুতলেই জল জমে রয়েছে বলে অভিযোগ। রোগীর পরিজনেরা প্রশ্ন তুলছেন, যেখানে স্বাস্থ্য দফতর বার বার করে জমা জল, আবর্জনা সাফাইয়ের কথা বলছে, সেখানে শহরের এক মেডিক্যাল কলেজে এমন ছবি কেন?
এন আর এসের অধ্যক্ষ পীতবরণ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘অনেক জায়গায় জল জমে রয়েছে তেমনটা নয়। নির্মাণকাজের জন্য খোঁড়া গর্তে অল্প কিছু জায়গায় জল থাকতে পারে। পূর্ত দফতরকে বলা হয়েছে বিষয়টি দেখতে। তবে হাসপাতাল চত্বরে নিয়মিত ডেঙ্গি প্রতিরোধের কাজ চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy