বিপত্তি: কলকাতা বিমানবন্দরের এরোব্রিজের ভিতরে ছাতা ধরে দাঁড়িয়ে আছেন এক উড়ান সংস্থার কর্মী। নিজস্ব চিত্র
বড়জোর আধ ঘণ্টা একটানা বৃষ্টি হয়েছে। আর তাতেই ভিজে একসা এরোব্রিজের মেঝে। মাথায় ছাদ রয়েছে। কিন্তু, সেই ছাদ চুঁইয়েও জল পড়ছে। মঙ্গলবার বিকেলে বৃষ্টির পরে কলকাতা বিমানবন্দরের ১৯ নম্বর এরোব্রিজ ঠিক এই কারণেই প্রায় এক ঘণ্টার জন্য বন্ধ করে দিতে হয়েছিল।
বিমান এসে দাঁড়ানোর পরে এই এরোব্রিজ দিয়ে যাত্রীরা সরাসরি টার্মিনালে চলে আসতে পারেন। আবার টার্মিনাল থেকে এরোব্রিজ দিয়ে যাত্রীরা সরাসরি বিমানে পৌঁছে যান। কলকাতায় মাত্র ১৬টি এরোব্রিজ রয়েছে। সম্প্রসারণের নতুন পরিকল্পনায় আরও এরোব্রিজ তৈরি করার কথা।
বিমানবন্দর সূত্রের খবর, এখন যে ১৬টি এরোব্রিজ রয়েছে, তার বেশির ভাগেই এই জল পড়ার সমস্যা দেখা দিয়েছে। এই কারণে গত বছর ২২ নম্বর এরোব্রিজ নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়েছিল বিমানবন্দরের অফিসারদের। কিন্তু, বাকিগুলি নিয়ে ততটা সমস্যা হয়নি। অভিযোগ, এ বার অনেকগুলি এরোব্রিজ থেকে কম-বেশি জল পড়তে শুরু করেছে। ১৯ নম্বর বন্ধ করার পরে মঙ্গলবারই ১৪ নম্বর এরোব্রিজেও জল পড়তে শুরু করে। সেখান দিয়ে তখন যাত্রীরা এয়ার ইন্ডিয়ার দিল্লিগামী বিমানে উঠছিলেন। অভিযোগ, জল পড়ায় যাত্রীদের বিমানে উঠতে দেরি হয়। বিমান ছাড়তেও দেরি হয়ে যায়। দিন কয়েক আগে অন্য একটি এরোব্রিজে জল পড়ার জন্য সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের যাত্রীদের মাথায় ছাতা ধরে নিয়ে যাওয়া হয়।
অফিসারদের আশঙ্কা, আধ ঘণ্টার বৃষ্টিতে যদি এই হাল হয়, তা হলে আসন্ন বর্ষায় অবস্থা আরও করুণ হবে। ইদানীং কলকাতায় বৃষ্টির সঙ্গে থাকছে দমকা হাওয়াও। এরোব্রিজ না পেলে বিমানগুলি যেখানে দাঁড়ায়, সেখান থেকে বাসে করে যাত্রীরা টার্মিনালে যাতায়াত করেন। বিমান থেকে সিঁড়ি দিয়ে এবং বাসে নামা-ওঠার সময়ে বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়ার আশঙ্কা থাকবে। ফলে, বেশির ভাগ উড়ান সংস্থাই চাইবে এরোব্রিজ পেতে। প্রশ্ন উঠেছে, এরোব্রিজ দিয়েও যদি জল চুঁইয়ে পড়ে, তা হলে যাত্রীরা কোথায় যাবেন?
এমনিতে এখনও বৃষ্টি পড়লে নতুন টার্মিনালের ছাদ দিয়ে জল এসে টার্মিনালে পড়ে। বাইরে একটানা বৃষ্টি হলে টার্মিনালের ভিতরে বিভিন্ন জায়গায় বালতি রেখে জল ধরার দৃশ্য কলকাতায় নতুন নয়। বিমানবন্দরের অফিসারদের একাংশের অভিযোগ, আন্তর্জাতিক মানের এক বিমানবন্দরে এই দৃশ্য দেখে যাত্রীদের অবাক হওয়া ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না। ২০১৩ সালে এই নতুন টার্মিনাল চালু হওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত বিমানবন্দর। প্রথমে কাচ ভাঙতে শুরু করে। পরের দিকে কনভেয়র বেল্টে যাত্রীদের ব্যাগ আটকে যেতে শুরু করে। এখনও মাঝেমধ্যে কনভেয়ার বেল্ট আটকে যায়। এ বার বাড়ছে এরোব্রিজে জল পড়ার সমস্যা। কলকাতা বিমানবন্দরের বর্তমান অধিকর্তা কৌশিক ভট্টাচার্য কয়েক মাস আগে দায়িত্ব নিয়েছেন। এখন নিয়মিত এরোব্রিজ রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলছে। মাঝেমধ্যেই কখনও ১২ ঘণ্টা, কখনও ৪৮ ঘণ্টার জন্য কোনও না কোনও এরোব্রিজ বন্ধ রেখে কাজ চলছে। তবু, জল পড়ার সমস্যা কমছে না।
বিমানবন্দরের অধিকর্তা কৌশিকবাবু বলেন, ‘‘আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি সমস্যার সমাধান করতে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy