হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে চালক সুকুমার জানাকে। ধৃত সৌমেন রায় (ইনসেটে)। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র
ভাড়া নিয়ে গোলমাল। তার জেরে বচসা, তার থেকে হাতাহাতি। অভিযোগ, এর পরে যাত্রীর মারে অচৈতন্য হয়ে পড়েন ট্যাক্সিচালক। পরে তাঁকে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।
শুক্রবার বিকেলে কেষ্টপুরের রবীন্দ্রপল্লির কাছে একটি বাজার এলাকার ঘটনা। মৃতের নাম সুকুমার জানা (৪৮)। ঘটনার পরে বাগুইআটি থানার পুলিশ গ্রেফতার করেছে ওই যাত্রীকে। ধৃতের নাম সৌমেন রায়। পুলিশ সূত্রের খবর, তাঁর বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত ভাবে মৃত্যু ঘটানোর অভিযোগে মামলা রুজু করা হয়েছে।
তদন্তে পুলিশ জেনেছে, এ দিন বিকেল সওয়া ৪টে নাগাদ কেষ্টপুরের বাসিন্দা সৌমেন রায় বেলঘরিয়া যাবেন বলে একটি ট্যাক্সিকে (ডব্লিউবি ০৪এইচ ৪৬০৮) দাঁড় করান। মিটারে যেতে না চেয়ে ওই যাত্রীকে বেলঘরিয়া নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ভাড়া চান চালক সুকুমারবাবু। তদন্তকারীরা জানান, প্রাথমিক তদন্তের পরে জানা গিয়েছে ওই ভাড়া দিতে রাজি হননি সৌমেনবাবু। তা নিয়েই দু’ পক্ষের প্রথমে বচসা বাধে।
অভিযোগ, সৌমেনবাবু উত্তেজিত হয়ে পড়েন। দু’জনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হতে থাকে। এর মধ্যে ট্যাক্সি থেকে টেনে চালককে বার করার চেষ্টা করেন সৌমেনবাবু। ট্যাক্সির দরজা খুলে এগিয়ে যান সুকুমারবাবুও। তার পরেই দু’জনের হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। এর মধ্যে সৌমেনবাবু ওই ট্যাক্সিচালককে চড়, ঘুসি মারতে থাকেন বলে অভিযোগ। মার খেয়ে রাস্তায় পড়ে যান সুকুমারবাবু। তার পরেই অচৈতন্য হয়ে পড়েন।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জেনেছে, এ দিন রবীন্দ্রপল্লি থেকে কিছুটা এগিয়ে ওই বাজারের কাছেই ট্যাক্সি নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন ওই চালক। গরমের কারণে প্রথমে তিনি যেতে রাজি হননি। পরে রাজি হলেও মিটারে না গিয়ে নির্দিষ্ট একটি ভাড়া চান। তা ওই যাত্রীর কাছে বেশি মনে হয়। তার জেরেই শুরু হয় গোলমাল। স্থানীয়েরা জানান, যাত্রীর চেহারা যতটা শক্তপোক্ত, চালক ততটাই দুর্বল চেহারার। হাতাহাতিতে চালক ওই মার সহ্য করতে পারেননি। স্থানীয়দের মতে, চালক যেতে রাজি না হলে ওই যাত্রী পুলিশের কাছে অভিযোগ করতে পারতেন। তা না করে তিনি মাথা গরম করে ফেলায় ওই কাণ্ড ঘটেছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, কেষ্টপুরের স্থানীয় এক অটোচালক ওই সময়ে ওই পথে যাত্রী নিয়ে যাচ্ছিলেন। ট্যাক্সিচালক ও যাত্রীর মধ্যে বচসা হচ্ছিল। ফেরার পথে ওই অটোচালক দেখেন লোকের ভিড়। ট্যাক্সিচালককে বাঁচানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন স্থানীয়েরা। অটোচালক প্রথমে ১০০ ডায়ালে ফোন করেন। কিন্তু সেটি ব্যস্ত থাকায় তিনি বাগুইআটির দিকে এগিয়ে গিয়ে এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে খবর দেন। পুলিশ গিয়ে জানতে পারে, সুকুমারবাবুকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়েছেন সৌমেনবাবু। খোঁজাখুঁজি করে স্থানীয় হানাপাড়ায় এক চিকিৎসকের চেম্বারের কাছে তাঁদের সন্ধান পায় মেলে। সৌমেনবাবুকে গ্রেফতার করা হয়। সুকুমারবাবুকে পুলিশ স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ সূত্রের খবর, সুকুমারবাবু মহেশতলার বাসিন্দা। তাঁর পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে। দেহ ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ জানায়, সৌমেনবাবু কেষ্টপুরের বাসিন্দা। তিনি একটি রেস্তোরাঁর শেফ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy