Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪

ভাল্‌ভ খুলে ভেসে গেল হাওড়া স্টেশন

অগ্নি-নির্বাপণের পাইপে লাগানো পিতলের একটি মূল্যবান ভাল্ভ চুরি হয়ে গিয়েছিল বছর আড়াই আগে। ওই ধরনের আর একটি ভাল্ভ ফের যাতে চুরি না যায়, তা ঠিক করতে গিয়ে বুধবার বেলা পৌনে ১২টা নাগাদ বিপত্তি ঘটল হাওড়া স্টেশনে।

জল থইথই। বুধবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

জল থইথই। বুধবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৬ ০০:৩৪
Share: Save:

অগ্নি-নির্বাপণের পাইপে লাগানো পিতলের একটি মূল্যবান ভাল্ভ চুরি হয়ে গিয়েছিল বছর আড়াই আগে। ওই ধরনের আর একটি ভাল্ভ ফের যাতে চুরি না যায়, তা ঠিক করতে গিয়ে বুধবার বেলা পৌনে ১২টা নাগাদ বিপত্তি ঘটল হাওড়া স্টেশনে। পাইপ থেকে ভাল্‌ভ খুলে গিয়ে জলে ভাসল স্টেশন চত্বর। জমা জলে নাজেহাল হলেন যাত্রীরা। সেই সঙ্গে প্রশ্ন উঠল, হাওড়া স্টেশনের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা কি এতটাই ঠুনকো যে, সামান্য চুরিও রেল কতৃর্পক্ষ ঠেকাতে পারেন না?

পূর্ব রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওড়া স্টেশনে আগুন লাগলে আপৎকালীন ব্যবস্থা হিসেবে ৬ নম্বর প্ল্যাটফর্ম ও ১২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে একটি করে হাইড্রান্টের ব্যবস্থা রয়েছে। হাইড্রান্টের পাইপলাইন সরাসরি যুক্ত রয়েছে গঙ্গার সঙ্গে। বছর আড়াই আগে ১২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে থাকা ওই হাইড্রান্টের মাথা থেকে পিতলের ভাল্‌ভ চুরি হয়ে যাওয়ায় ধু্ন্ধুমার কাণ্ড ঘটে যায়। উচ্চ চাপে থাকা পাইপলাইনের জল বেরিয়ে হাওড়া স্টেশনের ছাদে ঠেকে যায়। জলে ভেসে যায় গোটা স্টেশন চত্বর। রাতে এই ঘটনা ঘটার পরে সকালে ট্রেন ধরতে এসে নাস্তানাবুদ হন যাত্রীরা। ওই ঘটনার প্রাথমিক তদন্তের পরে রেলপুলিশ জানিয়েছিল, স্টেশন চত্বরে থাকা মাদকাসক্তরাই টাকার লোভে ওই ভাল্ভ চুরি করেছিল।

কিন্তু কী ঘটেছিল এ দিন?

পুর্ব রেল সূত্রে খবর, ওই ঘটনায় শিক্ষা নিয়ে এ দিন রেলের ইঞ্জিনিয়ারিং দফতরের লোকজন ৬ নম্বর প্ল্যাটফর্মের ভাল্ভ পরীক্ষা করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁরা দেখেন, ওই গুরুত্বপূর্ণ ভালভের পিতলের অংশটি কে যেন খোলার চেষ্টা করেছে। ফলে নড়বড়ে হয়ে গিয়েছে। এর পরেই ভ্যাল্ভটি ঝালাই করে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন ইঞ্জিনিয়ারেরা। অভিযোগ, তড়িঘড়ি সেই কাজ করতে গিয়ে পাইপলাইনে জলের চাপ না কমিয়েই খুলে ফেলা হয় ভাল্ভটি। আর এতেই ঘটে বিপত্তি। হাইড্রান্ট থেকে হু হু করে জল বেরিয়ে ভরিয়ে দেয় ৬ নম্বর প্ল্যাটফর্ম ও সংলগ্ন স্টেশন চত্বর। মুহূর্তের মধ্যে প্ল্যাটফর্ম চত্বরে যাত্রীদের হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। ওই সময়ে ৬ ও ৭ নম্বর প্ল্যাটফর্মে কোনও ট্রেন না থাকলেও পাশের প্ল্যাটফর্মে কয়েকটি লোকাল ট্রেন এসে পড়ায় তার যাত্রীরা বিপাকে পড়েন। জল মাড়িয়েই যাত্রীদের আসা-যাওয়া করতে হয়।

এত কিছুর পরেও হাওড়ার স্টেশন ম্যানেজার অঞ্জন চন্দের দাবি, ‘‘এই ঘটনায় যাত্রীরা খুব একটা সমস্যায় পড়েননি বা স্টেশনেও সমস্যা হয়নি। আসলে স্টেশনের মাদকাসক্তেরা ফের ভাল্ভ চুরি করতে পারে, এই ভয়েই সেটি ঠিক ভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করতে যাওয়ায় এই কাণ্ড। তবে জল দ্রুত পরিষ্কার করে দেওয়া হয়েছে।’’ অঞ্জনবাবু এ কথা বললেও যাত্রীদের অভিযোগ, স্টেশন চত্বরে জমা জল পরিষ্কার করতে প্রায় এক ঘণ্টা লেগে যায়।

কিন্তু হাওড়া স্টেশনে এত কড়া নিরাপত্তা থাকা সত্বেও কী করে মাদকাসক্তেরা স্টেশনে ঢোকে? কী করেই বা চুরি হয়?

হাওড়া আরপিএফের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘আড়াই বছর আগে চুরির ঘটনা ঘটেছিল। তখন হয়তো মাদকাসক্তেরা স্টেশনে ঢুকতে পারত। কিন্তু এখন আমাদের কড়া নজরদারি থাকায় অবাঞ্ছিত লোকেদের ঢুকতে দেওয়া হয় না। তবে সাবধানের মার নেই। তাই রেল আগে থেকেই অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা সুরক্ষিত রাখার কাজ করছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Howrah station Water
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy