Advertisement
২৭ ডিসেম্বর ২০২৪
CAA

সামিদার মৃত্যু দেখেও প্রতিবাদে অনড় পার্ক সার্কাস

আনন্দ পালিত রোডের একটা গলির মধ্যে একটা ছোট ঘরে স্বামী ও ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে থাকতেন সামিদা।

স্মরণ: পার্ক সার্কাসে প্রতিবাদীদের জমায়েতে মৃত সামিদা খাতুনকে শ্রদ্ধা। রবিবার। ছবি: সুমন বল্লভ

স্মরণ: পার্ক সার্কাসে প্রতিবাদীদের জমায়েতে মৃত সামিদা খাতুনকে শ্রদ্ধা। রবিবার। ছবি: সুমন বল্লভ

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০১:৩৪
Share: Save:

অনেক দিন ধরেই তিনি অসুস্থ। তবু প্রায় জোর করে মেয়ের সঙ্গে যেতেন পার্ক সার্কাসে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) বিরুদ্ধে প্রতিবাদী অবস্থানে। অসুস্থ শরীর নিয়ে কেন যান জিজ্ঞাসা করলে বলতেন, ওখানে গেলে শান্তি মেলে। সকলে মিলে এই প্রতিবাদ করা খুব জরুরি।

যে প্রতিবাদ-অবস্থানে গেলে তাঁর শান্তি মিলত, সেখানেই মৃত্যু হল আনন্দ পালিত রোডের বাসিন্দা সামিদা খাতুনের (৫৭)। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, সামিদার মৃত্যু হয়েছে অসুস্থতার জেরে। তবে আন্দোলনকারীদের দাবি, সিএএ-বিরোধী আন্দোলনে ‘শহিদ’ হলেন সামিদা। তাঁকে রবিবার রাজাবাজারের মুন্সিবাজারের কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।

আনন্দ পালিত রোডের একটা গলির মধ্যে একটা ছোট ঘরে স্বামী ও ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে থাকতেন সামিদা। ঘরে আর্থিক অনটনের ছাপ স্পষ্ট। সামিদার এক ছেলে মহম্মদ তাহির আল আনসারি বলেন, ‘‘মায়ের হাই প্রেশার ছিল। সুগার ছিল খুব বেশি। হার্টেও কিছু সমস্যা ছিল। কিন্তু মা অসুস্থ শরীরেই রোজ পার্ক সার্কাসের ওই প্রতিবাদ মঞ্চে যেতেন। মা আসলে নতুন নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বেশ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন। তাই বলতেন, ওখানে গেলে শান্তি পান।’’

শনিবার বিকেল পাঁচটা নাগাদ মেয়ে জেবার সঙ্গে পার্ক সার্কাস ময়দানে গিয়েছিলেন সামিদা। জেবা বলেন, ‘‘রাত বারোটা কুড়ি নাগাদ মা হঠাৎ বলতে শুরু করেন, শরীর খুব খারাপ লাগছে। শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। ওখানেই অজ্ঞান হয়ে যান। তার পর মাকে দ্রুত চিত্তরঞ্জন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে জানতে পারি, মা আর নেই।’’ পার্ক সার্কাসের এক আন্দোলনকারী দেবু সাহু বলেন, ‘‘নাগরিকত্ব আইন নিয়ে ওঁর খুব উৎকন্ঠা ছিল। সে জন্যই হয়তো ওঁর অসুস্থতা বেড়ে গিয়েছিল।’’

সামিদার মৃত্যুতে এ দিন পার্ক সার্কাস ময়দানের আন্দোলনকারীরা কালো ব্যাজ পরেছিলেন। সন্ধ্যায় সেখানকার প্রতিবাদ-মঞ্চে মোমবাতি জ্বালিয়ে দু’মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। সন্ধ্যায় ওই অবস্থানে যান সিপিআইয়ের মহিলা ফেডারেশনের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অ্যানি রাজা।

সামিদার মৃত্যুর পরেও কটাক্ষ অব্যাহত রেখেছেন সায়ন্তন বসুর মতো বিজেপি নেতারা। এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের মহাসচিব তথা রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যে কোনও মৃত্যুই দুঃখজনক। প্রতিবাদ করতে গিয়ে কারও মৃত্যু হয়ে থাকলে অবশ্যই সেটা দুঃখজনক। তবে এতে কি সরকারের ঘুম ভাঙবে? মনে তো হয় না! এ রকম বর্বর, অমানবিক সরকার এবং দল আগে দেখা যায়নি। এরা সব সংবেদনশীলতা হারিয়েছে!’’

অন্য বিষয়গুলি:

CAA Park Circus Sameeda Kahtun
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy