প্রতীকী ছবি
আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে নতুন শিক্ষাবর্ষের পঠনপাঠন শুরু হচ্ছে শহরের বেসরকারি স্কুলগুলিতে। অধিকাংশ স্কুলই জানিয়ে দিয়েছে, প্রথম থেকেই তারা পুরোপুরি অফলাইনে ক্লাস শুরু করবে। দু’-একটি স্কুল জানিয়েছে, তারা প্রথমে অনলাইন এবং অফলাইন উভয় পদ্ধতিতে পঠনপাঠন শুরু করলেও শীঘ্রই পুরোপুরি অফলাইন ক্লাসে ফিরে আসবে। কিন্তু স্কুল শুরু হতে চললেও ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে পাঠানোর জন্য স্কুলবাস বা গাড়ি আগের মতো মিলবে কি? সেই চিন্তাই এখন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে অভিভাবকদের কাছে।
অনেকে জানাচ্ছেন, যে সব স্কুলের নিজস্ব বাস নেই, সেই ক্ষেত্রে কয়েক জন অভিভাবক মিলে ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাতে বাস বা গাড়ি ঠিক করেন। তাঁদের ক্ষেত্রে সমস্যা বেশি। কারণ, ওই সব গাড়ি বা বাসের মালিকেরা এখনও অভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। তাঁদের কেউ কেউ জানিয়েছেন, করোনাকালে আর্থিক সঙ্কটে পড়ায় বাস বা গাড়ি বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন। এখন আর নতুন করে সেই ব্যবসায় ফিরছেন না। ফলে ওই অভিভাবকদের ফের বাস বা গাড়ির খোঁজ করতে হচ্ছে। কোনও অভিভাবক আবার জানাচ্ছেন, বাস বা গাড়ি পাওয়া গেলেও মাসিক ভাড়া আগের চেয়ে অনেক বেশি।
বৌবাজার এলাকার একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের পড়ুয়াদের জন্য পুলকার এবং স্কুলবাসের ব্যবসা করেন বিপ্লব সরকার। তিনি বলেন, ‘‘করোনাকালে উপার্জন ছিল না, অথচ প্রতি মাসে গাড়ি কেনার ঋণের কিস্তি মেটাতে হয়েছে। খরচ বাঁচাতে বাধ্য হয়ে একটি বাস বিক্রি করে দিয়েছি।’’ বিপ্লববাবু জানান, তাঁর কয়েকটি ছোট গাড়ি রয়েছে। কিন্তু তাঁরই পরিচিত কয়েক জন স্কুলগাড়ি এবং স্কুলবাসের ব্যবসা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে গিয়েছেন। দক্ষিণ কলকাতার এক স্কুলগাড়ি-মালিক বলেন, ‘‘আমার একটি গাড়ি রাস্তায় থাকত। সেটির ব্যাটারি চুরি হয়ে গিয়েছে। আবার ব্যাটারি কিনে গাড়ি নামাতে হবে।’’ স্কুলগাড়ি ও বাসের মালিকেরা এ-ও বলছেন, করোনা পরিস্থিতিতে যখন সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়েছিল, তখন ডিজ়েলের দাম ছিল লিটারপিছু ৬৪ টাকার মতো। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৩ টাকা। ফলে বাধ্য হয়েই তাঁদের বাস ও গাড়ির ভাড়া বাড়াতে হচ্ছে।
প্রশ্ন উঠছে আরও— প্রায় দু’বছর স্কুলবাস ও গাড়িগুলি কার্যত চলেনি। এত দিন পরে সেগুলি নামানোর আগে ঠিক মতো পরীক্ষা করা হচ্ছে তো? যদিও স্কুলগাড়ি মালিকদের দাবি, গাড়িগুলির যন্ত্রাংশ পরীক্ষা করা হয়েছে। ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল কন্ট্র্যাক্ট ক্যারেজ ওনার্স অ্যান্ড অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সাধারণ সম্পাদক হিমাদ্রি গঙ্গোপাধ্যায় জানান, এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ থেকে স্কুলগাড়ি পরিষেবা প্রায় স্বাভাবিক হওয়ার কথা। কিন্তু তাঁদের কিছু সমস্যা এখনও মেটেনি। হিমাদ্রিবাবু বলেন, ‘‘লকডাউনে গাড়ি বসে থাকায় অনেকেই গাড়ির স্বাস্থ্য সংক্রান্ত শংসাপত্র (সার্টিফিকেট অব ফিটনেস) জোগাড় করতে পারেননি। কিছু দিন আগে সরকার মৌখিক ভাবে বলে, এককালীন ১৫০০ টাকা দিলে আর জরিমানা দিতে হবে না। কিন্তু তার লিখিত নির্দেশ না হওয়ায় যাঁরা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সিএফ করাতে পারেননি, তাঁদের জরিমানা দিতে হচ্ছে। যাঁরা করোনার কারণে পারমিট নবীকরণ করতে পারেননি, জরিমানা দিতে হচ্ছে তাঁদেরও। স্কুলবাস ও স্কুলগাড়ির মালিকেরা এত টাকা কোথা থেকে দেবেন?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy