কর্মযজ্ঞ: এ বছর হয়তো দেখা যাবে না এই ব্যস্ততা। ফাইল চিত্র
অতিমারি আবহে গত বছরের মার্চ থেকেই টানা বন্ধ রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি। সংক্রমণ এড়াতে এখনও পর্যন্ত অনলাইনেই চলছে পঠনপাঠন। তাই আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে স্কুল বা কলেজগুলিতে সরস্বতী পুজো করা হবে কি না, সেই প্রশ্ন এখন উঁকি দিচ্ছে পড়ুয়াদের মনে। কোভিড পরিস্থিতিতে একই প্রশ্ন ভাবিয়ে তুলেছে স্কুল-কলেজ কর্তৃপক্ষদেরও।
গত মার্চ মাস থেকে সংক্রমণ এড়াতে বন্ধ রয়েছে রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি। কবে সেগুলি খোলা হবে, তা নিয়ে রাজ্য সরকার এখনও কিছু জানায়নি। এ দিকে, এ বছরের সরস্বতী পুজোর দিন ক্রমশ এগিয়ে আসছে। ফলে এ বার পুজো ঘিরে দ্বন্দ্বে ভুগছেন স্কুল-কলেজ কর্তৃপক্ষেরাও। কেউ পড়ুয়াদের কথা ভেবে পুজো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, আবার কেউ কেউ পুজোর আয়োজনের ভিন্ন পন্থা বার করছেন।
বুধবার বেথুন স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শাশ্বতী অধিকারী জানালেন, এ বছর স্কুলে নিয়মরক্ষার্থে পুজো হবে ঠিকই, কিন্তু ছাত্রীদের সেখানে তাঁরা আসতে বলতে চাইছেন না। অতিমারি পরিস্থিতিতে পুজো উপলক্ষে ছাত্রীদের স্কুলে আসতে দেওয়া ঠিক হবে না বলেই মনে করছেন প্রধান শিক্ষিকা। আবার রাজ্য সরকারের থেকে কোনও নির্দেশ না এলে পুজোর আয়োজন আদৌ করা যাবে কি না, সেটাই এখনও বুঝতে পারছেন না গড়িয়ার বরদাপ্রসাদ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মৃণালকান্তি মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘‘২৩ এবং ২৬ জানুয়ারিতে স্কুলে কী করব, সে নিয়েও কোনও নির্দেশ এখনও পাইনি। নির্দেশ না পেলে ওই দু’দিন স্কুলে গিয়ে নিজেই পতাকা তুলে আসব।’’
কোচবিহার সদর গভর্নমেন্ট স্কুলের প্রধান শিক্ষক মলয়কান্তি রায় জানালেন, এ বছর স্কুলে সরস্বতী পুজো হবে কি না, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই খোঁজখবর নেওয়া শুরু করেছে পড়ুয়ারা। তাই কোভিড-বিধি মেনে ছোট করে পুজো করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।
যাদবপুরের আদর্শ বালিকা শিক্ষায়তনে আবার স্থির হয়েছে, এ বার স্কুলে পুজো হলেও সেখানে পড়ুয়াদের প্রবেশাধিকার থাকবে না। প্রধান শিক্ষিকা শাশ্বতী গোস্বামী জানালেন, যে ভাবে এর আগে ছাত্রীদের অভিভাবকদের হাতে মিড-ডে মিল তুলে দেওয়া হয়েছিল, সে ভাবেই কোভিড-বিধি মেনে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হবে পুজোর প্রসাদ। তিনি বলেন, ‘‘কোভিড পরিস্থিতিতে সকলে যাতে সুরক্ষিত থাকেন, সে বিষয়ে আমাদের গুরুত্ব দিতেই হবে।’’
শুধু স্কুলেই নয়, পুজো নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন বিভিন্ন কলেজ কর্তৃপক্ষও। এ প্রসঙ্গে মহারাজা মণীন্দ্রচন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ মন্টুরাম সামন্ত জানালেন, এর মধ্যে স্কুল-কলেজ খোলার কোনও সরকারি নির্দেশ না এলে এ বছরের মতো বীণাপাণির আরাধনা বন্ধ থাকবে কলেজে। তিনি বলেন, ‘‘পুজো হলে পড়ুয়ারা আসবেই। তাতে সংক্রমণের ভয় থেকেই যাবে। সেই ঝুঁকি কে নেবে?’’ নিউ আলিপুর কলেজের অধ্যক্ষ জয়দীপ ষড়ঙ্গী অবশ্য জানাচ্ছেন, পুজো নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেননি তাঁরা।
ক্যানিংয়ের বঙ্কিম সর্দার কলেজের অধ্যক্ষ তিলক চট্টোপাধ্যায় আবার জানালেন, ক্যাম্পাসে এ বার পুজো হলেও সেখানে ‘ব্রাত্য’ করেই রাখা হবে পড়ুয়াদের। এর কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলছেন, ‘‘আমাদের কলেজ ক্যাম্পাসের মধ্যে স্টাফ কোয়ার্টার্স রয়েছে। সেখানেই পুজো হবে।’’ উলুবেড়িয়া কলেজে আবার খুব ছোট করে পুজোর আয়োজন করার কথা ভাবছেন কর্তৃপক্ষ। ওই কলেজের অধ্যক্ষ দেবাশিস পাল জানালেন, প্রতি বছর সরস্বতী পুজোর দিনে কলেজে প্রায় তিন হাজার ছাত্রছাত্রীর পাত পড়ে। কিন্তু এ বার সেই ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়। কম বাজেটের মধ্যে ছোট করেই পুজোর আয়োজন করার কথা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে যে পড়ুয়ারা কলেজের কাছাকাছি থাকেন, শুধু তাঁদেরই পুজোয় আসার অনুমতি দেওয়া হবে বলে জানাচ্ছেন অধ্যক্ষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy