রাজন্য সরকার ফাইল ছবি
আট বছর আগে এক পড়ুয়ার মৃত্যুর ঘটনায় এ বার সাউথ পয়েন্ট স্কুলের অধ্যক্ষা এবং এক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে জুভেনাইল জাস্টিস অ্যাক্ট-এ সমন জারি করার নির্দেশ দিল আদালত। সম্প্রতি আলিপুরের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট (এসিজেএম) সুতীর্থ বন্দ্যোপাধ্যায় এই নির্দেশ দিয়েছেন।
২০১৪ সালের ৮ মে প্রথম শ্রেণির ছাত্র রাজন্য সরকার স্কুলেই অচেতন হয়ে পড়েছিল। পরে গড়িয়াহাট এলাকার এক নার্সিংহোমে নিয়ে গেলে মৃত্যু হয় তার। এই ঘটনায় মামলা হয়েছিল। কিন্তু তদন্তে পুলিশ কোনও ‘অপরাধ’ খুঁজে পায়নি।
আদালতের খবর, পুলিশের রিপোর্টে অনাস্থা প্রকাশ করে ফের আদালতের দ্বারস্থ হন রাজন্যের মা রুচিরা বন্দ্যোপাধ্যায়। আলিপুরের মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ফের তদন্তের আর্জি জানান। নথি খতিয়ে দেখার পরে কোর্ট নির্দেশ দেয় যে, এ ক্ষেত্রে রুচিরাকে অপরাধ প্রমাণ করতে হবে এবং মামলাটি এসিজেএম-এর কাছে বিচারের জন্য পাঠানো হয়। রুচিরা জানান, অধ্যক্ষা দলবীর কৌর চাড্ডা এবং দেবলীনা বসু নামে এক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে সমন জারি করতে বলেছেন এসিজেএম।
আদালতের সওয়ালে রুচিরার আইনজীবী শুভাশিস মুখোপাধ্যায় স্কুলের তরফে দু’টি গাফিলতি তুলে ধরেন। তিনি জানান, সম্ভবত রাজন্য কোনও ভাবে পড়ে গিয়ে চোট পেয়েছিল। সেই অবস্থায় তার দিকে কেউ খেয়াল করেননি। দ্বিতীয়ত, রাজন্যকে যে নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, সেখানে শিশুদের চিকিৎসার পর্যাপ্ত পরিকাঠামো ছিল না। তার ফলে সময়মতো যথাযথ চিকিৎসা মেলেনি। রুচিরা জানান, ওই দিন সকাল ১০টা ২০ মিনিটে তিনি স্কুলের তরফে একটি ফোন পেয়ে ঘটনার কথা জানতে পারেন। পৌনে ১১টা নাগাদ নার্সিংহোমে পৌঁছে জানতে পারেন, রাজন্য মারা গিয়েছে।
কোর্টে সাক্ষীদের যে বয়ান পেশ করা হয়েছে, তা থেকে জানা গিয়েছে, ঘটনার দিন রাজন্য মিউজ়িক ক্লাস থেকে শৌচাগারে গিয়েছিল। তার পরে প্রায় দেড় ঘণ্টা সে নিখোঁজ ছিল। বিচারকের পর্যবেক্ষণ, ছ’বছর বয়সি একটি শিশুকে তাঁর বাবা-মা স্কুলের হেফাজতে দিয়ে গিয়েছিলেন। ক্লাসের মাঝে সে শৌচাগারে গিয়েছিল। কিন্তু দেড় ঘণ্টা নিখোঁজ থাকার পরেও কেন তার কোনও খোঁজ করা হয়নি? এ ক্ষেত্রে স্কুলের কয়েক জন দায়িত্ব এড়াতে পারেন না। তাই জুভেনাইল জাস্টিস অ্যাক্টের ২৩ নম্বর ধারায় সমন জারিও যুক্তিসঙ্গত মনে করেছে কোর্ট।
প্রসঙ্গত, রুচিরা নিজেও আইনজীবী। তাই গোড়া থেকেই সন্তানের মৃত্যু নিয়ে আইনি লড়াই লড়ে যাচ্ছেন তিনি। কোর্টের সাম্প্রতিক নির্দেশের পরে বলছেন, ‘‘এর শেষ আমি দেখেই ছাড়ব।’’ যদিও সাউথ পয়েন্ট স্কুলের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য কৃষ্ণ দামানি বলছেন, ‘‘পুলিশ দু’বার তদন্ত করেও কোনও দোষ খুঁজে পায়নি। তার পরেও যখন ফের উনি কোর্টে গিয়েছেন, তখন আমরাও আইনি পথেই লড়ব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy