প্রতীকী ছবি।
বন্ধুকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল আর এক বন্ধুর বিরুদ্ধে। রবিবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে উল্টোডাঙা থানা এলাকার তেলেঙ্গাবাগানে। মৃতের নাম লোকনাথ দত্ত (৩২)। তাঁর বাড়ি ক্যানাল ইস্ট রোডে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত যুবক গোপাল ভাদুড়ীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে। নিহত লোকনাথের স্ত্রী ২৬ দিন আগে সন্তান প্রসব করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ক্যানাল ইস্ট রোডে বাড়ির কাছেই ফুটপাতে একটি ছোট দোকান রয়েছে লোকনাথের। গোপাল পেশায় অটোচালক। রবিবার রাতে দুই বন্ধু একটি অনুষ্ঠান বাড়িতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে গভীর রাতে তাঁরা আসেন তেলেঙ্গাবাগানের দত্তবাগানে একটি কালীপুজোর মণ্ডপে। অভিযোগ, দু’জনেই নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, রাত তিনটে নাগাদ গোপাল ও লোকনাথের মধ্যে কোনও বিষয়ে বচসা শুরু হয়। তা গড়ায় হাতাহাতিতে। অভিযোগ, লোকনাথকে মারতে মারতে নিয়ে গিয়ে একটি ভ্যানের উপরে ফেলে দেয় গোপাল। ঘটনার সময়ে আশপাশে কেউ ছিলেন না। পরে চিৎকার শুনে ছুটে এসে তাঁরা দেখেন, কালীপুজোর মণ্ডপের পিছনে একটি টিনের ঘরের পাশে অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে আছেন লোকনাথ। রাতেই তাঁকে আর জি করে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
স্থানীয়েরা জানিয়েছেন, দুই বন্ধুর মধ্যে প্রায়ই ঝামেলা লেগে থাকত। তবে গোপাল কেন লোকনাথকে মেরে ফেলল, তার নির্দিষ্ট কারণ জানাতে পারেননি তদন্তকারীরা। পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে আমাদের ধারণা, পুরনো কোনও শত্রুতার জেরে এই ঘটনা। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’’
সোমবার ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, গোটা এলাকা থমথমে। মোতায়েন রয়েছে প্রচুর পুলিশ। যে ভ্যানটির উপরে লোকনাথ পড়েছিলেন, সেটির গায়ে তখনও লেগে রক্তের দাগ। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে একটি মদের বোতল এবং এক জোড়া চটি মিলেছে। স্থানীয়েরা জানিয়েছেন, ওই চটিজোড়া লোকনাথের। এ দিন ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা।
স্থানীয় সূত্রের খবর, বাবা দুলাল দত্তের সঙ্গে ফুটপাতে একটি দোকান চালাতেন লোকনাথ। নিরীহ ছেলে হিসাবে এলাকায় পরিচিত ছিলেন তিনি। আচমকা তাঁর এমন মৃত্যুতে এলাকায় নেমেছে শোকের ছায়া। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, দু’বছর আগে বিয়ে হয়েছিল লোকনাথের। ২৬ দিনের একটি সন্তান রয়েছে তাঁর। স্ত্রী পূজা দত্ত কথা বলার অবস্থায় ছিলেন না। দুলালবাবু ও তাঁর স্ত্রী অনিতা দত্তের তিন ছেলের মধ্যে সবার ছোট ছিলেন লোকনাথ। এ দিন
দুলালবাবু বলেন, ‘‘রবিবার রাতে ছেলে বিয়েবাড়িতে গিয়েছিল। রাতেই ফিরে আসার কথা ছিল। কিন্তু ভোরে মেজো ছেলে ফোন করে জানায়, লোকনাথকে আর জি কর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’’ ছোট ছেলের মৃত্যুর খবরে বার বার সংজ্ঞা হারাচ্ছিলেন মা অনিতাদেবী। তিনি বলেন, ‘‘শুনেছি, এক জন ধরা পড়েছে। ওকে চাপ দিলেই পুরো ঘটনা জানা যাবে। পুলিশ ঠিক মতো তদন্ত করুক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy