দিলীপ এবং স্বপ্না মুখোপাধ্যায়।
নেতাজিনগরের দম্পতি দিলীপ মুখোপাধ্যায় এবং স্বপ্না মুখোপাধ্যায়কে খুনের ঘটনায় বিহার থেকে এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতের নাম মহম্মদ হামরুজ আলম (৩৮)। বিহারের কাটিহারে এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে শনিবার রাতে তাকে ধরা হয়। উদ্ধার হয়েছে লুঠ হওয়া কিছু টাকা এবং গয়না। তদন্তকারীদের দাবি, জেরায় দোষ স্বীকার করেছে অভিযুক্ত।
গত ৩০ জুলাই সকালে নেতাজিনগরের অশোক অ্যাভিনিউয়ের দোতলা বাড়ির একতলায় সিঁড়ির কাছে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়েছিলেন স্বপ্নাদেবী। দোতলার একটি শোয়ার ঘরের বিছানায় মুখে বালিশ চাপা দেওয়া অবস্থায় উদ্ধার হয় দিলীপবাবুর দেহ। এর পরেই ওই খুনের তদন্তে নেমে পুলিশ প্রাথমিক ভাবে জানায়, ২৯ জুলাই রাতে খুন হয়েছেন ওই দম্পতি এবং লুটের উদ্দেশেই তাঁদের খুন করেছে আততায়ীরা। কারণ তদন্তকারীরা আরও জানতে পারেন, দিলীপবাবু ও স্বপ্নাদেবীর দু’টি শোয়ার ঘরের এগারোটি আলমারির মধ্যে দশটি আলমারিই চাবি দিয়ে খুলেছিল দুষ্কৃতীরা এবং সেখান থেকে খোয়া গিয়েছে প্রায় ৫০ হাজার থেকে এক লক্ষ টাকা এবং কিছু গয়না। শুধু তা-ই নয়, খুনের পরে দিলীপবাবুর মোবাইল থেকে সিম কার্ডটি খুলে নেওয়া হয়। মেলেনি স্বপ্নাদেবীর মোবাইলও। সেই নিখোঁজ মোবাইল বন্ধ করা হয়েছিল খুনের রাতে, ঘটনাস্থল থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে।
এর পরেই খুন এবং লুটের ধরন দেখে গোয়েন্দারা প্রাথমিক ভাবে নিশ্চিত হন, এই ঘটনায় রাজমিস্ত্রি কিংবা রঙের মিস্ত্রিদের হাত থাকতে পারে। কারণ খুনের কয়েক দিন আগেই ওই বাড়িতে রং এবং মেরামতির কাজ হয়েছিল। তখন কোন কোন মিস্ত্রি ওই বাড়িতে কাজ করেছিলেন, শুরু হয় তাঁদের খোঁজ। খোঁজ করা হয় ঠিকাদারেরও। আর সেই ঠিকাদারের মাধ্যমেই জানা যায়, তিনি রাস্তা থেকে মিস্ত্রিদের এনেছিলেন।
ঠিকাদারের মাধ্যমে ওই মিস্ত্রিদের খোঁজ শুরু করে পুলিশ। তখন জানা যায়, মহম্মদ হামরুজ নামে এক মিস্ত্রি ওই বাড়িতে সারাইয়ের কাজ করেছিল। কিন্তু ঘটনার পর থেকে সে বেপাত্তা। এর পরেই হামরুজের সন্ধানে নামে পুলিশ। জানা যায়, আদতে বিহারের বাসিন্দা হলেও সে বাঁশদ্রোণী থানা এলাকায় একটি ভাড়া বাড়িতে থাকত। আর স্বপ্নাদেবীর মোবাইলের টাওয়ারের শেষ অবস্থানও দেখায় ওই এলাকাতেই। যা দেখে গোয়েন্দারা এক রকম নিশ্চিত হয়ে যান, খুনের ঘটনায় হামরুজের হাত রয়েছে।
যে বাড়িতে ভাড়া থাকত অভিযুক্ত, সেখান থেকেই প্রাথমিক ভাবে তথ্য জোগাড় করেন গোয়েন্দারা। মেলে হামরুজের বেশ কয়েক জন আত্মীয়-পরিজনের ঠিকানা। এর পরেই লালবাজারের গোয়েন্দাদের একটি দল রওনা দেয় বিহারের উদ্দেশে। শনিবার রাতে কাটিহারে এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে ধরা পড়ে হামরুজ। উদ্ধার হয়েছে ওই দম্পতির আলমারি থেকে লুট হওয়া টাকা এবং গয়নার একাংশ।
তদন্তকারী এক কর্তা জানান, গ্রেফতারের পরে জেরায় হামরুজ স্বীকার করেছে সে খুনে জড়িত ছিল। তবে সে একাই এই কাণ্ড করেছে না কি তার সঙ্গে আরও কেউ ছিল, সে সব খতিয়ে দেখছে পুলিশ। পাশাপাশি দেখা হচ্ছে খুনের কারণও। শুধুমাত্র লুট না এর পিছনে বড় কোনও চক্রান্ত রয়েছে, তা হামরুজকে জেরা করে জানার জন্য আজ, সোমবার ট্রানজিট রিমান্ডে তাকে কলকাতায় আনা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy