লি ওয়ান সং
চায়না টাউনের একটি বাড়ি থেকে শুক্রবার রাতে রক্তাক্ত অবস্থায় হাউ মি হা (৬০) নামে এক প্রৌঢ়া ও তাঁর শ্বশুর, বৃদ্ধ লি কা সিয়ং (৮৯)-কে উদ্ধার করেছিল পুলিশ। এন আর এসে ওই প্রৌঢ়াকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। মাঝরাতে সেখানে মারা যান লি-ও। এই ঘটনায় শুক্রবার রাতেই গ্রেফতার করা হয় হাউয়ের স্বামী লি ওয়ান সংকে। তদন্তকারীদের দাবি, জেরায় ধৃত স্বীকার করেছে, সে-ই স্ত্রী ও বাবাকে খুন করেছে। ধৃতকে শনিবার শিয়ালদহ আদালতে তোলা হলে ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজত দেন বিচারক।
পুলিশি জেরায় ওয়ান দাবি করেছে, ২০০৯ সালে তার মায়ের মৃত্যু হয়। এর পর থেকেই সে বিবাহ-বহির্ভূত একাধিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে বলে সন্দেহ করতে শুরু করেন হাউ। ওয়ানের দাবি, শুক্রবার রাতে মহিলাঘটিত সম্পর্ক নিয়ে তাকে কটূক্তি করেন স্ত্রী। তখনই মাথা গরম করে সে ওই কাজ করে।
তদন্তকারীরা জেনেছেন, স্ত্রী এবং বাবাকে খুন করার পরে বেরিয়ে একটি রেস্তরাঁয় বন্ধুর সঙ্গে মদ্যপান এবং রাতের খাবার খেয়েছিল ওয়ান। শুধু তা-ই নয়, খুনের কথা যাতে কেউ টের না পান, সে জন্য বাড়ির দরজায় ভিতর থেকে তালা দিয়ে বেরিয়েছিল। সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিল ডুপ্লিকেট চাবি। ঘণ্টাখানেক পরে রেস্তরাঁ থেকে ফিরে চাবি দিয়ে দরজা খোলেনি। উল্টে স্থানীয়দের ডেকে ওয়ান দেখায়, দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। কেউ খুলছেন না। সন্দেহ নিরসনের জন্য এক রিকশাওয়ালাকে পাঁচিল টপকে ভিতরে ঢুকে অবস্থা দেখে আসতে বলে।
কী ঘটেছিল ওই দিন? পুলিশ জেনেছে, শুক্রবার সন্ধ্যা সওয়া ছ’টা নাগাদ কাজ শেষ করে বাড়ি ফেরে ওয়ান। আগে থেকেই এক বন্ধুর সঙ্গে তার খেতে যাওয়ার কথা ছিল ধাপার কাছে একটি রেস্তরাঁয়। ওয়ানের অভিযোগ, সে রেস্তরাঁয় যাওয়ার কথা বলতেই স্ত্রীর সঙ্গে বচসা শুরু হয়। তখনই হাউ তাকে কটূক্তি করেন। ধৃতের দাবি, এর পরেই সে স্ত্রীকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়। প্রথমে লোহার বালতি দিয়ে তাঁর মাথার পিছনে আঘাত করে। এর পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে তাঁর মুখ এবং কপালে অ্যালুমিনিয়ামের মগ দিয়ে মারে। পুত্রবধূর চিৎকার শুনে বৃদ্ধ লি ছুটে এলে ওয়ান তাঁকেও বালতি এবং মগ দিয়ে আঘাত করে।
পুলিশের দাবি, এর পরে পোশাক পাল্টে, দরজায় ভিতর থেকে তালা দিয়ে সওয়া সাতটা নাগাদ বেরোয় ওয়ান। তালার চাবি রাখে নিজের কাছে। আটটার পরে বাড়ি ফিরে পরিকল্পনামাফিক সে দরজা ধাক্কায়। কিছু পরে পড়শিদের ডেকে বলে, তাঁর স্ত্রী এবং বাবা দরজা খুলছেন না। এক তদন্তকারী জানান, অনেক ডেকেও দরজা না খোলায় মই লাগিয়ে এক রিকশাওয়ালাকে ভিতরে ঢোকায় ওয়ান। ওই ব্যক্তি এসে জানান, বাড়ির উঠোন রক্তে ভেসে যাচ্ছে। এর পরেই আচমকা চাবি বার করে দরজা খোলে ওয়ান।
পুলিশ তদন্তে নেমে প্রত্যক্ষদর্শীদের থেকে এই তথ্য জানতে পারে। এর পরেই অভিযুক্তকে চেপে ধরায় দোষ স্বীকার করে সে। পুলিশ জানিয়েছে, ওয়ান এবং হাউয়ের দুই মেয়ে, এক ছেলে। তাঁরা কানাডায় থাকেন। পুরো ঘটনা জানানো হয়েছে তাঁদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy