—ফাইল চিত্র
এক বছরে সার্বিক দুর্ঘটনাই শুধু নয়, কমেছে আহত ও মৃতের সংখ্যাও। বছরের শুরুতেই এই পরিসংখ্যানের কথা জানিয়েছে লালবাজার। তাদের দাবি, ২০১৯ সালে শহরের রাস্তায় মোট ২৬৭ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা কলকাতা পুলিশের ইতিহাসে সর্বনিম্ন। লাগাতার প্রচার এবং যান শাসনে কড়াকড়ির ফলেই এই সাফল্য বলে মনে করছেন পুলিশের কর্তারা। তবে এ সবের মধ্যেও উল্লেখযোগ্য তথ্য হল, ২০১৮ সালের তুলনায় বাস দুর্ঘটনা এবং পথচারীর মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে। অনেকেরই বক্তব্য, সাফল্যের মধ্যেও এ দু’টি বিষয় কাঁটার মতো বিঁধে রয়েছে।
পুলিশের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৬ সালে শহরে পথ দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিলেন ৪০৭ জন। তার পর থেকে ধাপে ধাপে সেই সংখ্যা কমেছে। ২০১৮ সালে কলকাতা পুলিশ এলাকায় ২৮৩টি দুর্ঘটনা ঘটেছিল, যাতে ২৯৪ জন মারা যান। ২০১৯ সালে ২৬৭ জন মারা যান এবং মৃত্যু ঘটানো দুর্ঘটনা ঘটে ২৬০টি। কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (ট্র্যাফিক) সন্তোষ পাণ্ডের বক্তব্য, ‘‘লাগাতার প্রচার চলেছে এবং বেপরোয়া যান শাসনেও রাশ টানা হয়েছে। তাতেই এই সাফল্য।’’
লালবাজারের একটি সূত্রের দাবি, হেলমেট ছাড়া মোটরবাইকে চড়ায় লাগাম টানার ফলেই মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে। ২০১৮ সালে মোটরবাইক দুর্ঘটনায় ৫০ জন হেলমেটবিহীন আরোহী মারা গিয়েছিলেন। এ বার সংখ্যাটি কমে হয়েছে ২০।
তবে বাসের দুর্ঘটনা বেড়েছে। কলকাতা পুলিশের হিসেব বলছে, ২০১৮ সালে মোট বাস দুর্ঘটনা ঘটেছিল ৪৭০টি। ২০১৯ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৪৯৭। মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে, এমন বাস দুর্ঘটনার সংখ্যা ২০১৮ সালে ছিল ৮৫টি। ২০১৯ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৯৭। ২০১৮ সালে ১৪৬ জন পথচারী পথ দুর্ঘটনায় মারা যান। ২০১৯ সালে সেটাও বেড়ে হয়েছে ১৫১। মোট দুর্ঘটনার মধ্যে শতকরা হিসেবে পণ্যবাহী গাড়ির দুর্ঘটনাও অপরিবর্তিত রয়েছে।
পুলিশ আধিকারিকদের অনেকেই বলছেন, বহু ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, চলন্ত বাস থেকে বিপজ্জনক ভাবে ওঠানামা করতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে যাত্রীদের আরও সচেতন করা প্রয়োজন। কিছু ক্ষেত্রে বেপরোয়া বাসের ব্যাপারে আরও কড়া হওয়া প্রয়োজন। সন্তোষ জানান, বাসন্তী হাইওয়ে-সহ কলকাতার বিভিন্ন রাস্তায় অন্তত ২২টি দুর্ঘটনাপ্রবণ জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে। ওই সমস্ত জায়গায় কী ভাবে দুর্ঘটনা কমানো যায়, তা দেখা হচ্ছে। পুলিশ সূত্রের খবর, ‘রোড ইঞ্জিনিয়ারিং’ সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নিয়ে নানা পন্থা প্রয়োগ করা হতে পারে।
পুলিশ জানিয়েছে, গত এক বছরে বেপরোয়া চালকদের বিরুদ্ধে নানা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত করা এবং জরিমানাও রয়েছে। এক বছরের ফারাকে দুর্ঘটনাগ্রস্তদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য তৎপরতা বেড়েছে পুলিশের ‘কর্ম’ অ্যাম্বুল্যান্সের। ২০১৮ সালের তুলনায় বেপরোয়া হর্ন বাজানোর জন্য জরিমানার সংখ্যা প্রায় তিন গুণ বেড়েছে। লালবাজারের কর্তারা বলছেন, দুর্ঘটনার সংখ্যা কমাতে চলতি বছরে পুলিশি সক্রিয়তা আরও বাড়বে। তার পাশাপাশি সচেতনতার প্রচারও বাড়ানো হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy