মুখ্যমন্ত্রীর দৈনিক যাতায়াতের পথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে বিদ্যাসাগর ট্র্যাফিক গার্ডের। কিন্তু গত চার মাস ধরে কার্যত ‘মাথাহীন’ হয়ে রয়েছে ওই ট্র্যাফিক গার্ড! আগের ওসি জানুয়ারি মাসে পদোন্নতি পেয়ে সহকারী কমিশনার হয়েছেন। কিন্তু নতুন কোনও অফিসারকে ওসি পদে নিয়ে আসা হয়নি।
বড়বাজার ও পোস্তার মতো এলাকার দায়িত্বে রয়েছে জোড়াবাগান ট্র্যাফিক গার্ড। ওই এলাকায় সাধারণ বাস-মিনিবাস-ট্যাক্সি ও ব্যক্তিগত গাড়ির পাশাপাশি পণ্যবাহী গাড়িরও বিপুল চাপ থাকে। অথচ, এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি ট্র্যাফিক গার্ডে গত এক বছর ধরে কোনও ওসি নেই। এ ক্ষেত্রেও আগের ওসি পদোন্নতি পেয়ে সহকারী কমিশনার হয়েছেন। তার পরে তাঁকেই দায়িত্ব সঁপে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অভিজ্ঞ ওই অফিসারকে অন্য দায়িত্বে পাঠানোয় তিনিও পুরোপুরি জোড়াবাগানে সময় দিতে পারছেন না।
পুলিশ সূত্রের খবর, কলকাতায় ট্র্যাফিক গার্ড রয়েছে মোট ২৫টি। তার মধ্যে জোড়াবাগান, মেটিয়াবুরুজ, বেলেঘাটা এবং বিদ্যাসাগর ট্র্যাফিক গার্ডে ওসি পদে কেউ নেই। বিদ্যাসাগর ও জো়ড়াবাগানের মতো মেটিয়াবুরুজের ওসি-ও এক বছর আগে পদোন্নতি পেয়েছেন।
গত ফেব্রুয়ারিতে চিংড়িঘাটা মোড়ে দুর্ঘটনার পরে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল বেলেঘাটা ট্র্যাফিক গার্ডের ওসিকে। এখন ওই চারটি গার্ডেই অতিরিক্ত ওসিদের দায়িত্ব বাড়ানো হয়েছে। সহকারী হিসেবে ডেপুটেশনে পাঠানো হয়েছে এক জন করে ইনস্পেক্টরকে। সহকারী কমিশনারদের মৌখিক ভাবে ওই গার্ডগুলির উপরে অতিরিক্ত নজর দিতে বলা হয়েছে।
লালবাজারের খবর, কলকাতা পুলিশে অফিসারের খামতি নেই। তা হলে ওই সমস্ত পদে স্থায়ী ভাবে নিয়োগ করা হচ্ছে না কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ‘‘কাজের দিক থেকে চারটি গার্ডই খুব গুরুত্বপূর্ণ। ফলে ওসি পদে এক জন অভিজ্ঞ অফিসারের থাকা উচিত,’’ বলছেন এক সহকারী কমিশনার।
পুলিশের একাংশের মতে, ওই চারটি এলাকাতেই অনেক সময়ে পথে দাঁড়িয়েই খুব দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হয়। ওসি পদে দীর্ঘদিন কাজ না করলে এবং দুঁদে অফিসার না হলে তা করা সম্ভব নয়। সহকারী কমিশনারেরা আরও অনেক কাজে ব্যস্ত থাকেন। ফলে পথে দাঁডি়য়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁদেরও কিছু সমস্যা থাকতে পারে। বিশেষ করে বেলেঘাটা ও বিদ্যাসাগর গার্ড দিয়ে অনেক ‘ভিআইপি’ যাতায়াত করেন। সেখানে অভিজ্ঞ ওসি খুবই দরকার। ‘‘জোড়াবাগান গার্ডে এমন ওসি-ও কাজ করেছেন, যাঁর দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাকে শীর্ষ কর্তারাও তারিফ করতেন,’’ বলছেন এক পুলিশকর্তা। কেউ কেউ এ-ও বলছেন, বাহিনীর প্রত্যেক ইউনিটের মাথায় এক জন পদাধিকারী থাকবেন, সেটাই নিয়ম। তা ছাড়া, দেড়শো বছর পেরিয়ে যাওয়া কলকাতা পুলিশের একটা ঐতিহ্যও রয়েছে। সেখানে চারটি গার্ড ওসি-হীন থাকা বাঞ্ছনীয় নয়।
পুলিশের অনেকে আবার এ-ও বলছেন, অতিরিক্ত ওসি-রাও যথেষ্ট অভিজ্ঞ। সহকারী কমিশনারও বাড়তি চাপ সামলাচ্ছেন। বাকি কোনও কর্মী-সংখ্যায় তো বদল হয়নি। ‘‘কলকাতা পুলিশ একটি নির্দিষ্ট ছকে ও নিয়মে কাজ করে। তাই ওসি না থাকলেও জনতার কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়,’’ মন্তব্য এক সার্জেন্টের। ডিসি (ট্র্যাফিক) সুমিত কুমারের বক্তব্য, ‘‘অতিরিক্ত ওসিরা তো দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। সমস্যা তেমন হচ্ছে না। ওসি-দের নিয়োগ করেন পুলিশ কমিশনার। তিনিই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy