তানিয়া অগ্নি আলি
দু’বছর হতে চলল। কিন্তু এখনও রাজারহাটের অগ্নিদগ্ধ তরুণী তানিয়া অগ্নি আলির মৃত্যু-মামলার চার্জ গঠন হল না। অভিযোগ, এর জেরে এখনও শুরুই হয়নি মামলার বিচার-প্রক্রিয়া।
২০১৭ সালের ৮ সেপ্টেম্বর রাজারহাটের একটি ফ্ল্যাটের শৌচাগার থেকে দগ্ধ অবস্থায় তানিয়াকে উদ্ধার করেন পড়শিরা। তাঁরা জানিয়েছিলেন, ঘটনার সময়ে ওই ফ্ল্যাটেই ছিলেন তানিয়ার স্বামী। কিন্তু তিনি স্ত্রীকে বাঁচানোর কোনও চেষ্টা করেননি বলে অভিযোগ। পরে তানিয়ার বাবা গোলাম সাত্তারের অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁর স্বামী, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ইকবাল আলিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অভিযোগে গোলাম জানিয়েছিলেন, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনে স্নাতকোত্তর পাশ তাঁর মেয়ে বিয়ের পরে গবেষণা করতে চেয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘বিয়ের কথাবার্তা চলার সময়ে তানিয়ার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তাঁরা মেয়ের পড়াশোনার ব্যাপারে সহযোগিতা করবেন।’’ কিন্তু অভিযোগ, বিয়ের পরে ওই তরুণী গবেষণা করার কথা শ্বশুরবাড়িতে জানাতেই শুরু হয় শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার। এমনকি পণের দাবিতেও ওই তরুণীর উপরে অত্যাচার করা হত।
গোলামের আরও অভিযোগ, তানিয়াকে যখন অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়, তাঁর শরীরের বেশিরভাগই পুড়ে গিয়েছিল। স্ত্রী শৌচাগারে পুড়ছেন, অথচ পাশের ঘরে থাকা সত্ত্বেও জামাই তাঁকে বাঁচানোর বিন্দুমাত্র চেষ্টা করলেন না কেন, সেই প্রশ্নও গত দু’বছর ধরে তুলে আসছেন তিনি। নিয়ম মেনে এই মামলায় পুলিশ আদালতে চার্জশিট জমা দিলেও এখনও চার্জ গঠন না হওয়ায় হতাশ ওই তরুণীর মা-বাবা।
এমন পরিস্থিতি হল কেন? তানিয়ার হয়ে নিযুক্ত আইনজীবী চন্দ্রশেখর দে জানিয়েছেন, আদালত চার্জ গঠনের দিন ধার্য করলেও সরকারি আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না। ফলে ফের নতুন দিন ধার্য করে আদালত। কিন্তু দ্বিতীয় দিনেও আসেননি সরকারি আইনজীবী। মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ১৮ ডিসেম্বর। চন্দ্রশেখরবাবুর অভিযোগ, ‘‘মামলার গুরুত্বের কথা বার বার বলা সত্ত্বেও আদালত লম্বা সময়ের ব্যবধানে শুনানির তারিখ ফেলছে। ফলে কিছুই করার থাকছে না।’’
যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে বারাসত আদালতের মুখ্য সরকারি কৌঁসুলি শান্তময় বসু বলেন, ‘‘এক জন সরকারি আইনজীবী হাজির না
হলে মামলার ভার অন্য কৌঁসুলিকে দেওয়া হয়। সেটা যদি আমার নজরে কেউ না আনেন, জানা সম্ভব নয় যে সরকারি কৌঁসুলি না থাকায় চার্জ গঠন হয়নি।’’ এ বিষয়ে তিনি খোঁজ নেবেন বলেও জানিয়েছেন মুখ্য
সরকারি কৌঁসুলি।
এ দিকে, দু’বছর পরেও চার্জ গঠন না হওয়ায় মেয়ের অস্বাভাবিক মৃত্যুর আদৌ কোনও কিনারা হবে কি না, তা নিয়ে চিন্তিত তানিয়ার মা-বাবা। আপাতত মেয়ের দুই সন্তানকে নিয়ে এখন দিন কাটছে তাঁদের। তারই মধ্যে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন মেয়ের মৃত্যুর সুবিচার পাওয়ার আশায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy