নয়া ঘোষণা কলকাতা পুরসভার। —ফাইল চিত্র।
আসন্ন নির্বাচনের আগে কল্পতরু হয়ে উঠল কলকাতা পুরসভা। তিন কাঠা পর্যন্ত ব্যক্তিগত মালিকানাধীন জমিতে কোনও ‘প্ল্যান’ ছাড়াই বাড়ি তৈরি করার ছাড়পত্র দিল তারা। বেআইনি নির্মাণ নিয়ে এক দিকে যখন ভূরি ভূরি অভিযোগউঠে আসছে, সেইসময় নির্মাণ সংক্রান্ত নিয়মকানুন শিথিল করা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
‘প্ল্যান’ পাশ করানো নিয়ে বিভিন্ন সময় আর্থিক বেনিয়মের অভিযোগ ওঠে। পুরসভা দ্রুত অনুমোদন দেওয়ার কথা বললেও, তা পেতে কালঘাম ছুটে যায় অনেকেরই। ‘বিল্ডিং প্ল্যান’ পাশ করাতে ‘মিউটেশন সার্টিফিকেট’ লাগে। কোনও কর বাকি থাকলে আগে তা মিটিয়ে দিতে হয়। তার পরেই সংশ্লিষ্ট জমিতে ইট গাঁথা যায়। কর না মেটালে কোনওভাবেই প্ল্যান পাশ করানো যায় না। এই জটিলতা থেকে শহরবাসী, বিশেষ করে মধ্যবিত্তদের কষ্ট লাঘব করতেই সোমবার মেয়র পারিষদদের একটি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, তিন কাঠা পর্যন্ত জমির উপর বাড়ি করতে হলে এ বার থেকে আর বিল্ডিং প্ল্যানের জন্য অপেক্ষা করতে হবে না। পুরসভার নিয়ম মেনে প্ল্যান ছাড়াই নির্মাণকাজ শুরু করা যাবে। তবে এ ক্ষেত্রে পুরসভার নথিভুক্ত কোনও ‘লাইসেন্সড বিল্ডিং সার্ভেয়র’(এলবিএস)-কে দিয়ে বাড়ি তৈরি সংক্রান্ত নথি এবং টাকা জমা দিতে হবে আগের নিয়ম অনুযায়ীই। শুধু বিল্ডিং প্ল্যান পাশ করানোর জন্য আর হা-পিত্যেশ করে বসে থাকতে হবে না বলে জানিয়েছেন কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
এ দিন বৈঠকের পর ফিরহাদ বলেন, ‘‘তিন কাঠা পর্যন্ত জমির উপর ব্যক্তিগত মালিকানাধীন বাড়ি তৈরি করতে বিল্ডিং প্ল্যান পাশের জন্য আর অপেক্ষা করার দরকার নেই। সর্বোচ্চ তিন তলা পর্যন্ত বাড়ি করা যাবে। পুরসভার নিয়ম অনুযায়ী, বাড়ি করার জন্য নির্ধারিত টাকাও এলবিএস-এর মাধ্যমেই জমা করতে হবে। বিল্ডিং প্ল্যানে অনুমোদন ছাড়া বাড়ি করলেও, মানতে হবে সব নিয়মই। বাড়ি তৈরি হয়ে গেলে, পুর আধিকারিকারা ইনস্পেকশনে যাবেন। তখন যদি দেখা যায়, নিয়ম মেনে বাড়ি তৈরি হয়নি, তাহলে ওই এলবিএস-এর লাইসেন্স বাতিল হবে। একই রকম ভাবে বেআইনি ঘোষণা করা হবে ওই বাড়িকে।’’
তবে ইতিমধ্যেই এই নিয়মের বিরুদ্ধে বলতে শুরু করেছেন বিরোধীরা। তাঁদের প্রশ্ন, বিল্ডিং প্ল্যান পাশ করে বাড়ি তৈরিতে আপত্তি কোথায়? বিশেষ কিছু লোককে সুবিধা করে দিতেই কি এই পদক্ষেপ? বিরোধী দলনেত্রী তথা বাম কাউন্সিলর রত্না রায় মজুমদার এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘বিল্ডিং প্ল্যান পাশ করার পর বাড়ি তৈরি হলে অসুবিধা কোথায়? এমন তাড়াহুড়ো করা হচ্ছে? আমার তো বিস্ময় লাগছে। আমরা এর বিরোধিতা করছি।’’
কংগ্রেস কাউন্সিলর প্রকাশ উপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই আইন কীভাবে করছে আমার জানা নেই। গরিব মানুষ, যাঁরা বস্তিতে থাকেন, যাঁদের ঠিকা জমি রয়েছে, তাঁরাও কি ওই সুবিধা পাবেন? গরিব মানুষ উপকৃত হলেই ভাল হয়।’’
বিজেপি কাউন্সিলর বিজয় ওঝার বক্তব্য, ‘‘কেন এই নিয়ম করা হল, আমরা তা খতিয়ে দেখছি। এতে মানুষের কী সুবিধা হবে জানা নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy