Advertisement
১৮ নভেম্বর ২০২৪

বায়ুদূষণে উদ্বিগ্ন কোর্ট, জারি নতুন নির্দেশিকা

কলকাতার বেলাগাম বায়ুদূষণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করল আদালত। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য বৃহস্পতিবার জাতীয় পরিবেশ আদালতের পূর্বাঞ্চলীয় শাখার বিশেষ বেঞ্চ নির্দিষ্ট নির্দেশিকা জারি করেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০১৫ ০০:১৬
Share: Save:

কলকাতার বেলাগাম বায়ুদূষণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করল আদালত। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য বৃহস্পতিবার জাতীয় পরিবেশ আদালতের পূর্বাঞ্চলীয় শাখার বিশেষ বেঞ্চ নির্দিষ্ট নির্দেশিকা জারি করেছে। তাতে বলা হয়েছে, কলকাতা এবং হাওড়ায় প্রতি তিন কিলোমিটার অন্তর ধোঁয়া পরীক্ষাকেন্দ্র তৈরি করতে হবে। কলকাতা ও হাওড়া মিলিয়ে বর্তমানে বাতাসের দূষণ-মাত্রা পরীক্ষার যে সমস্ত কেন্দ্র আছে, সেগুলির প্রতিটিকে পুরোদস্তুর সক্রিয় করতে হবে এবং পর্যায়ক্রমে তার সংখ্যা বাড়াতে হবে। বাতাসের মান ও দূষণের মাত্রা সম্পর্কে নিয়মিত ওয়েবসাইটে ঘোষণা করতেও আদালত নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে।

কলকাতা-হাওড়ায় এখন কত কিলোমিটার অন্তর ধোঁয়া পরীক্ষাকেন্দ্র আছে, তার সুস্পষ্ট হিসেব নেই। তবে, ধোঁয়া পরীক্ষার কেন্দ্র রয়েছে ৬০টি। এ ছাড়াও, বাতাসের গুণগত মান মাপতে কলকাতার ১৫টি জায়গায় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ অনুমোদিত কেন্দ্র রয়েছে। অভিযোগ, এগুলির কয়েকটি কাজ করছে না। যেগুলি করছে, তার কয়েকটির কার্যকারিতা নিয়ে আদালতেই প্রশ্ন তুলেছিলেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। এ বিষয়ে আদালত দূষণ পর্ষদকে রিপোর্ট দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছিল। বৃহস্পতিবার সেই রিপোর্ট পেশ করা হয়।

কলকাতার বাতাসে দূষণের পরিমাণ সহ্যমাত্রার তুলনায় অনেক বেশি। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের ওয়েবসাইটে এই সব দৈনিক হিসেব দেওয়া হচ্ছে না বলেও পূর্বাঞ্চলীয় পরিবেশ আদালতে অভিযোগ তুলেছিলেন সুভাষবাবু।

ধোঁয়া পরীক্ষাকেন্দ্রগুলির তদারকির দায়িত্ব দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের। বৃহস্পতিবার তাদের আইনজীবী অর্পিতা চৌধুরী যে রিপোর্ট পেশ করেন, তাতে স্বীকার করা হয়েছে এই মুহূর্তে তিনটি ধোঁয়া পরীক্ষাকেন্দ্র কাজ করছে না। বিচারপতি প্রতাপ রায় এবং বিশেষজ্ঞ সদস্য পি সি মিশ্রের পূর্বাঞ্চলীয় বেঞ্চ ধোঁয়া পরীক্ষাকেন্দ্র এবং বাতাসের গুণগত মান মাপার কেন্দ্রগুলিকে পূর্ণমাত্রায় কার্যকর এবং পর্যায়ক্রমে এগুলির সংখ্যা বৃদ্ধির নির্দেশ দেন।

রাজ্য ইতিমধ্যে আরও ধোঁয়া-পরীক্ষাকেন্দ্র চালু করার প্রস্তুতি নিয়েছে। এর বিরোধিতা করে সেগুলির মালিক-সংগঠন আদালতে আর্জি জানিয়েছিল যে, পরীক্ষাকেন্দ্রের সংখ্যা বাড়লে তাদের ব্যবসা মার খাবে। কার্যত যা তারা নিজেদের অস্তিত্বের সঙ্কট বলে মনে করে। কিন্তু সংগঠনের এই আর্জি আদালত এ দিন খারিজ করে দেয়। এর সঙ্গে বিচারপতি বলেন, গাড়ির ধোঁয়া পরীক্ষা করাতে যাতে কাউকে বেশি দূরে না যেতে হয়, তার জন্য প্রতি তিন কিলোমিটার অন্তর পরীক্ষাকেন্দ্র খুলতে হবে।

ধোঁয়া পরীক্ষাকেন্দ্রের শংসাপত্র ছাড়া বেঙ্গালুরুর পাম্পে গাড়ির জ্বালানি বিক্রি করা হয় না। যান-দূষণ নিয়ন্ত্রণের স্বার্থে বিচারপতি এ দিন এ শহরেও এ রকম ব্যবস্থা করার কথা বলেন। এ ব্যাপারে আগামী ৭ অগস্ট রাজ্য সরকারের বক্তব্য পেশের নির্দেশও দেয় আদালত। ৬ মাস মেয়াদী এই শংসাপত্রের মেয়াদ কমিয়ে তিন মাস করার আর্জি জানিয়েছিলেন সুভাষবাবু। রাজ্যের তরফে আদালতে বলা হয়, পরিবেশ-বিধিতে এই সময়সীমার উল্লেখ আছে।

আদালতের এ দিনের নির্দেশিকা সম্পর্কে জানতে পর্ষদের চেয়ারম্যানকে ফোন করলে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। পরিবহণ দফতরের এক পদস্থ অফিসার বলেন, ‘‘পাম্পে বেঙ্গালুরু মডেল চালু করতে গেলে প্রশাসনিক এবং পরিকাঠামোগত একগুচ্ছ ব্যবস্থা নিতে হবে। এখনই তা সম্ভব নয়।’’ বাতাসের গুণগত মান এবং ধোঁয়া-পরীক্ষার কেন্দ্রগুলির বিষয়ে আইনি নির্দেশ ও সুপারিশ মানা হবে বলে জানান ওই অফিসার।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy