কথা: আনন্দবাজার পত্রিকা আয়োজিত ‘শহর কী বলছে?’ অনুষ্ঠানের মঞ্চে (বাঁ দিক থেকে) জয়দীপ কুণ্ডু, সুব্রত পালচৌধুরী, কোয়েল মল্লিক ও অরিন্দম শীল। ছবি: রণজিৎ নন্দী।
মানুষের থেকে দূরে থাকতেই ভালবাসে বন্যপ্রাণীরা। তবুও কিছু মানুষের ‘লোভের’ নাগাল এড়াতে পারে না ওরা। গুলি, তির বা বর্শার আঘাতে প্রাণ দেয়। খুনিরা বন্যপ্রাণীর দেহাংশ নিয়ে ব্যবসা করে লাভের গুড় বাড়াতে চায়। বছরের পর বছর ধরে চোরাশিকারের এই সামাজিক ব্যাধি চলে আসছে। প্রশাসন, বন্যপ্রাণপ্রেমী সংগঠনগুলি নানা উদ্যোগ নিলেও এই ব্যাধি নির্মূল হয়নি। তবুও একবিংশ শতকের দুই দশক পেরিয়ে এসে প্রশ্ন তো উঠতেই পারে, এই চোরাশিকার কি আদৌ নির্মূল হবে কোনও দিন?
এই প্রশ্ন নিয়েই শুক্রবার, গোলপার্ক রামকৃষ্ণ মিশনের শিবানন্দ প্রেক্ষাগৃহে আনন্দবাজার পত্রিকা আয়োজন করেছিল ‘শহর কী বলছে?’ অনুষ্ঠানের। আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন চলচ্চিত্র পরিচালক অরিন্দম শীল, অভিনেত্রী কোয়েল মল্লিক, বন দফতরের উপদেষ্টা সুব্রত পালচৌধুরী এবং বন্যপ্রাণ সংরক্ষণের সঙ্গে যুক্ত জয়দীপ কুণ্ডু। উপস্থিত ছিলেন পরিবেশপ্রেমী সংগঠনের সদস্য, একাধিক কলেজের পড়ুয়াদের পাশাপাশি সেন্ট অ্যাগনেস কনভেন্ট স্কুলের ছাত্রীরাও। অরিন্দমের আগামী ছবিতে মিতিন মাসির সঙ্গে চোরাশিকারিদের দ্বৈরথ দেখানো হয়েছে। সেই সূত্র ধরে বক্তব্য শুরু করলেও সিনেমার পরিসরে আটকে থাকেননি পরিচালক। বরং প্লাস্টিক দূষণ থেকে শব্দের দাপট, সার্বিক পরিবেশ রক্ষাই ভবিষ্যতের সুদিনের জন্য যে জরুরি, সে কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন। বলেছেন, ‘‘পরিবেশ ও বন্যপ্রাণী বাঁচাতে সামাজিক সচেতনতা জরুরি। সেখানে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে নবীন প্রজন্ম।’’
আদতে চোরাশিকারের ব্যাধি যে শুধু জন্তু শিকারে নয়, বরং সার্বিক ভাবে বনাঞ্চল ধ্বংসের মধ্যেই রয়েছে, সে কথা বলেছেন জয়দীপ। তাঁর মতে, চোরাশিকারের বিপদ তো আছেই। কিন্তু যে হারে বৃক্ষচ্ছেদন হচ্ছে, তাতে আগামী দিনে বনাঞ্চল থাকবে কি না— সেটাই
বড় প্রশ্ন হয়ে উঠছে। জয়দীপের বক্তব্যের মূল সুর, বনাঞ্চল যদি না বাঁচে তা হলে বন্যপ্রাণীদেরও বাঁচানোর উপায় নেই। অরণ্য শুধু যে বন্যপ্রাণীদের নয়, অক্সিজেনের উৎপাদক হিসাবে মানুষেরও দরকার, আলোচনার ফাঁকে সে কথাও মনে করিয়েছেন জয়দীপ।
আলোচনায় চোরাশিকার কেন হয়, কী ভাবে এর জাল বিস্তারিত, তা ছোট ছোট উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে দেন বন দফতরের উপদেষ্টা সুব্রত। চোরাশিকারি ধরলে বাজেয়াপ্ত করা দেহাংশের কী করা হয়, সে সবও পড়ুয়াদের বুঝিয়ে দেন তিনি। তবে এ সব শুনলেও
চোরাশিকারি নিয়ে সিনেমার ‘মিতিন মাসি’ কোয়েল কী বলেন, তা নিয়ে ছোটদের আগ্রহ ছিল অনেক বেশি। কোয়েল অবশ্য চোরাশিকার বা অপরাধী পাকড়াও নিয়ে বেশি কথা বলেননি। বরং কী ভাবে সচেতন হয়ে পরিবেশ, প্রাণী বাঁচানো যায়, সে কথাই ছোটদের সহজে বুঝিয়ে দিয়েছেন। আলোচনার বক্তাদের পাল্টা প্রশ্ন করেছে খুদেরাও। সভা শেষে কার্যত সবাই একমত যে, শুধু বিচ্ছিন্ন ভাবে পুলিশ বা গোয়েন্দা নয়, সমাজের সবাই একত্র না হলে এ ব্যাধি সারানো সম্ভব নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy