এমন ভাবেই চলে ‘জরুরি বিভাগ’। নিজস্ব চিত্র
ঘরের এক কোণে পুরু ধুলোয় ঢাকা সবুজ রঙের একটি টেবিল। দু’টি বাঁশ দড়ি দিয়ে বাঁধা সেই টেবিলের পায়ার সঙ্গে। টেবিলের উপরে ইতস্তত ছড়ানো স্যালাইনের বোতল, কিছু কাগজপত্র আর কয়েকটি চটের ব্যাগ। আদতে এটি ‘হাসপাতালের জরুরি বিভাগ’! গুরুতর অস্ত্রোপচার করাতে ওই বাঁশের সঙ্গেই দড়ি দিয়ে রোগীদের হাত বেঁধে নেওয়া হয়।
নিউ আলিপুর থানার সারোগেসি-প্রতারণা মামলার তদন্তে নেমে এক ভুয়ো চিকিৎসকের খোঁজ করতে গিয়ে এমনই ‘হাসপাতালের’ হদিস পেয়েছেন তদন্তকারীরা। ডায়মন্ড হারবারের মন্দিরবাজার এলাকার যে ছ’কামরার বাড়িতে ‘হাসপাতাল’টি রয়েছে তার লোহার গ্রিলের গায়ে এক দিকে লেখা ‘মাতৃ সেবাসদন’।
অন্য দিকে, ‘ডাঃ গোপাল মালিক’। এলাকার লোকজন বাড়িটিকে চেনেন ‘গোপাল ডাক্তারের হাসপাতাল’ নামে। পুলিশ জানায়, ২৬ সপ্তাহ ধারণের পরে ওই বাড়িতে গিয়েই গর্ভস্থ সন্তানকে হত্যা করিয়েছিল সারোগেসি মামলায় অভিযুক্ত গর্ভদাত্রী মা (সারোগেসি মাদার) কাশ্মীরা মোল্লা।
শুধু জরুরি বিভাগ নয়, ছ’কামরার ওই বাড়ি ঘিরে নানা অনিয়ম। হাসপাতাল চালানোর কোনও রকম পরিকাঠামোই সেখানে নেই বলে পুলিশের দাবি। উচ্চ মাধ্যমিক পাশ গোপাল জরুরি বিভাগের পাশেই একটি ঘরে ‘জেনারেল ওয়ার্ড’ বানিয়ে ফেলেছেন। সেখানে কম্বল গায়ে এক ব্যক্তিকে চৌকিতে শুয়ে থাকতে দেখে পুলিশের প্রশ্ন, কী হয়েছে? রোগী বলেন, ‘‘খুব পেটে ব্যথা। ডাক্তারবাবু দেখেছেন সকালে। অস্ত্রোপচার করবেন বলেছেন।’’
ওই ঘরের পাশেই করা হয়েছে ওষুধের দোকান। সেখানে এমন প্রচুর ওষুধ দেখা গেল, যার কোনওটির নথি নেই। নিউ আলিপুর থানার এক তদন্তকারী আধিকারিক বলেন, ‘‘গোটা হাসপাতালটিই বেআইনি। ওখানে গর্ভপাত করানোর জন্য এক-এক জনের থেকে এক-এক রকম টাকা নেওয়া হয়। গর্ভস্থ সন্তানের বয়স কত, তার উপরে নির্ভর করে খরচ। পুলিশি ঝামেলা বা পরিবারে সমস্যা থাকলে সেই খরচ বাড়ে। গোটা বাড়িটাই আমরা বন্ধ (সিল) করে দিয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy