বিপজ্জনক: ধাপার জমা জঞ্জাল থেকে ছড়ায় দূষণ। ফাইল চিত্র
ধাপার একটি অংশে এখন জমে রয়েছে ৪০ লক্ষ মেট্রিক টন জঞ্জাল। প্রতিনিয়ত ওই জঞ্জালের জেরে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। আগামী বছরের অক্টোবরের মধ্যে জমে থাকা ওই জঞ্জাল সরানোর নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় পরিবেশ আদালত। পুর সূত্রের খবর, এর জেরে রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়েছে কলকাতা পুর প্রশাসন। পুরসভা সূত্রে বলা হচ্ছে, জঞ্জাল অপসারণের কাজে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না করার জন্য সম্প্রতি বিধাননগর পুরসভাকে ২ কোটি টাকা জরিমানা করেছে পরিবেশ আদালত। তাই নিজেদের মাথায় শাস্তির খাঁড়া যাতে না পড়ে, তার জন্য কলকাতা পুর প্রশাসন ধাপার ওই অংশ থেকে জঞ্জাল সরানোর তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছে। বিষয়টি দেখভালের জন্য পুরসভার বিশেষ কমিশনারের নেতৃত্বে একটি কমিটি গড়া হয়েছে। ১০ জনের ওই কমিটিতে রয়েছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক অমিত দত্তও। বুধবার সেই কমিটির জরুরি বৈঠক হল পুরভবনে।
পুরসভা সূত্রের খবর, কলকাতা শহর থেকে রোজ প্রায় ৪ হাজার মেট্রিক টন জঞ্জাল ফেলা হয় ধাপার মাঠে। এর জেরে সেখানে দু’টি পাহাড় গড়ে উঠেছে। একটির আয়তন ১২ একরের মতো, অন্যটি ৬০ একরের। পুরসভার এক অফিসার জানান, ১২ একরের পাহাড়টি আপাতত সিল করা হয়েছে। সেখানে আর জঞ্জাল ফেলা হয় না। ৬০ একর অংশে জমা জঞ্জালের পরিমাণ ৪০ লক্ষ মেট্রিক টন ছাড়িয়ে গিয়েছে। সেখান থেকেই জঞ্জাল সরাতে হবে।
কী বলেছে জাতীয় পরিবেশ আদালত?
পুরসভার জঞ্জাল দফতর সূত্রের খবর, বায়ো রেমিডিয়েশন এবং বায়ো মাইনিং— এই দুই পদ্ধতিতে বিজ্ঞানসম্মত ভাবে জঞ্জাল পরিশোধন এবং নিষ্কাশন করা হয়। জমা জঞ্জাল থেকে নির্গত গ্যাস জলের সংস্পর্শে এসে লিচেট নামে ভয়ঙ্কর বিষাক্ত পদার্থ তৈরি করে। এটি আনাজের মাধ্যমে মানুষের শরীরে ঢুকলে চর্মরোগ থেকে ক্যানসার পর্যন্ত হতে পারে। বায়ো রেমেডিয়েশনের মাধ্যমে লিচেট শোধন করা হয়। এক পুর আধিকারিক জানান, ১২ একর অংশে আগেই লিচেট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট করা হয়েছিল। তাই সেখানে সমস্যা নেই। তবে ৬০ একরের পাহাড়ে এখনও জঞ্জাল ফেলার কাজ চলছে। পরিবেশ আদালত নির্দেশ দিয়েছে, দ্রুত সেখানে বায়ো মাইনিং করতে হবে, অর্থাৎ জমা জঞ্জাল সরাতে হবে। পুরসভা সূত্রের খবর, ১২ একরের লিচেট ট্রিটমেন্ট প্লান্টটি এখন ব্যবহার করা হচ্ছে ৬০ একর অংশের লিচেট শোধনের কাজে। পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মতো এ বার ওই পাহাড় থেকে জঞ্জাল সরিয়ে ফেলতে হবে।
কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, মাত্র ১১ মাসে ৪০ লক্ষ মেট্রিক টন জঞ্জাল সরানো কি সম্ভব? অত পরিমাণ জঞ্জাল ফেলাই বা হবে কোথায়?
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকে একটি বিশেষজ্ঞ সংস্থাকে ডাকা হয়েছিল। তারা দরপত্র দিয়ে ওই কাজের বরাত পেতে আগ্রহী। দরপত্র ডাকার আগে পরিবেশ আদালতের নির্দেশ নিয়ে বিস্তারিত জানানো হয়েছে ওই সংস্থাকে। বৈঠকে বলা হয়েছে, প্লাস্টিক, লোহার মতো পুনর্ব্যবহারযোগ্য সব উপাদান তুলে নিয়ে যেতে হবে সংশ্লিষ্ট কারখানায়। জৈব বর্জ্য সার তৈরির কাজে লাগাতে হবে। এর জন্য প্লান্ট তৈরি করতে হবে লাগোয়া জায়গায়। অর্থাৎ, শুরুতে জমির যে অবস্থা ছিল, সেই অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে হবে। তাতে ওই এলাকা থেকে যে ভাবে দূষণ ছড়াচ্ছে, তা অনেকটাই কমানো যাবে বলে মনে করছে পরিবেশ আদালত। পুর কমিশনার খলিল আহমেদ বৃহস্পতিবার জানান, জোরকদমে জঞ্জাল সরানোর জন্য দরপত্র ডাকার প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy