Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Barrackpore

ভাগাড়ের দূষণ ঠেকানো যায়নি, রাজ্যকে এক কোটির জরিমানা

রাজ্য যে ভাবে হলফনামা জমা করেছিল, তারও সমালোচনা করেছে আদালত।

পাহাড়: বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের পাশে জমে থাকা এই জঞ্জালের জন্যই জরিমানা হয়েছে রাজ্যের। শুক্রবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

পাহাড়: বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের পাশে জমে থাকা এই জঞ্জালের জন্যই জরিমানা হয়েছে রাজ্যের। শুক্রবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

সুপ্রকাশ মণ্ডল
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০২০ ০৩:০০
Share: Save:

রাস্তার ধারে জঞ্জাল ফেলে লাগাতার তা পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে। বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের দু’ধারে জঞ্জালের পাহাড় তৈরি হয়েছে। তা নিয়ে জাতীয় পরিবেশ আদালতের (এনজিটি) দ্বারস্থ হয় স্থানীয় একটি সংস্থা। সেই মামলায় রাজ্যকে প্রাথমিক ভাবে এক কোটি টাকা জরিমানা করেছে এনজিটি।

মামলায় ঠিক কত টাকা জরিমানা করা হবে, তা ঠিক করার ভারও দেওয়া হয়েছে জাতীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ এবং একটি কেন্দ্রীয় সংস্থাকে। আগামী এক মাসের মধ্যে এই বিষয়ে রাজ্যকে হলফনামা জমা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাজ্য যে ভাবে হলফনামা জমা করেছিল, তারও সমালোচনা করেছে আদালত।

এই নির্দেশের পরে আশার আলো দেখছেন এলাকার বাসিন্দারা। বছরের বেশির ভাগ সময়ে তাঁদের দরজা-জানলা বন্ধ করে থাকতে হয়। কারণ, ফি বিকেলে ওই জঞ্জাল পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ২০১৭ সালে এই মামলা হয়েছিল। লকডাউনের মধ্যেই ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে ১০ জুলাই মামলার শুনানি হয়। দিন কয়েক আগে এই মামলার রায়ের প্রতিলিপি সব পক্ষের হাতে এসেছে। আগামী সেপ্টেম্বরে মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে।

বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে হয়ে দক্ষিণেশ্বর যাওয়ার দু’দিকে দীর্ঘদিন ধরে জঞ্জাল ফেলছে দক্ষিণ দমদম, দমদম, উত্তর দমদম এবং বরাহনগর পুরসভা। তার ফলে রাস্তার দু’দিকে ভাগাড় পাহাড়ের চেহারা নিয়েছে। রাজারহাট-গোপালপুর পুরসভাও আগে এখানে জঞ্জাল ফেলত। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, ভাগাড় থেকে এত দুর্গন্ধ ছড়ায় যে, বাস করা কঠিন হয়ে উঠছে। শুধু তা-ই নয়, ভাগাড় থেকে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে মারাত্মক ভাবে। এখন ওই ভাগাড় অবশ্য টিন দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে।

ওই এলাকার বাসিন্দা, রাজ্য পাবলিক সার্ভিস কমিশনের আধিকারিক নীলাদ্রি রায় আরও কয়েক জনকে নিয়ে একটি সংস্থা চালান। ওই সংস্থা পরিবেশ নিয়ে কাজ করে। নীলাদ্রিবাবু বলেন, “সব ক’টি পুরসভাকে বার বার ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন করেছিলাম। কিন্তু আমাদের আবেদনে ওরা কর্ণপাত করেননি। এমনকি, জঞ্জাল পুনর্ব্যবহারের যে চালু পদ্ধতি রয়েছে, সেগুলির

কোনওটিই অবলম্বন করা হয়নি। জঞ্জাল জ্বালিয়ে পরিবেশকে দূষিত করেছে দিনের পর দিন।”

নীলাদ্রিবাবুর অভিযোগ, তার ফলে কাছাকাছি এলাকার বাসিন্দাদের অনেকেরই শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ শুরু হয়। ২০১৭ সালে নীলাদ্রিবাবুরা রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের প্রাক্তন কর্তা বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনিই জাতীয় পরিবেশ আদালতে মামলার রূপরেখা তৈরি করে দেন। নীলাদ্রিবাবুর দাবি, মামলার বিভিন্ন শুনানিতে রাজ্য হলফনামা দিয়ে জানিয়েছিল, ওখানে একটি বায়োগ্যাস প্রকল্প তৈরি করা হবে। ভাগাড়ের চার পাশের জমিতে ঘাস রোপণ করা হবে। সেগুলির কোনওটাই হয়নি।

রাজ্য সরকার সূত্রে জানা গিয়েছে, লকডাউনের সময়ে ‘নোটারি পাবলিক’ পাওয়া যায়নি বলে এনজিটির কাছে নিজেদের বক্তব্য রিপোর্ট আকারে পেশ করার অনুমতি চেয়েছিল তারা। আদালত নির্দেশিত সময়ের মধ্যেই তারা হলফনামা জমা দেবে। জরিমানা নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি কোনও আধিকারিকই।

এনজিটি তার রায়ে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে নির্দেশ দিয়েছে জরিমানার এক কোটি টাকা এক মাসের মধ্যে জমা দিতে হবে। আরও এক কোটি টাকার বিশেষ তহবিল তৈরি করতে হবে। যা দিয়ে ভাগাড়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা যেতে পারে। জাতীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ সরেজমিন পরিবেশের ক্ষতির পরিমাণ খতিয়ে দেখবে, তার জন্য সব রকম সহযোগিতা করতে বলা হয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

National Green Tribunal Barrackpore Belgharia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy