Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Narkeldanga

Narkeldanga Incident: ‘ফরজ়ান বলেছিল, রবিবার মাঠে খেলতে যাবে’

নারকেলডাঙা থানা এলাকার রাজা রাজনারায়ণ স্ট্রিটে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত ফরজ়ানের বাড়ির উল্টো দিকের বাড়িতে থাকে বছর তেরোর মহম্মদ আসিফ আলি।

ফরজ়ানের পাড়ার বন্ধুরা। রবিবার।

ফরজ়ানের পাড়ার বন্ধুরা। রবিবার। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২২ ০৬:০৩
Share: Save:

শনিবার বেলার দিকে পরীক্ষা দিতে কয়েক জন বন্ধুর সঙ্গে স্কুলে গিয়েছিল বছর তেরোর মহম্মদ ফরজ়ান আনসারি। পরীক্ষার পরে দল বেঁধে বাড়ি ফেরে। বন্ধুদের ফরজ়ান জানিয়েছিল, পরীক্ষা ভালই দিয়েছে। এ-ও জানিয়েছিল, রবিবার সকালে সবাই মিলে মাঠে খেলতে যাবে। কিন্তু সন্ধ্যায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ফরজ়ানের মৃত্যুর খবরে কার্যত বাকরুদ্ধ তার বন্ধুরা। রবিবার সকালে পাড়া ভর্তি ভিড়ের মধ্যে ‘অভিশপ্ত’ সেই বাতিস্তম্ভের সামনে দাঁড়িয়েও ঘুরেফিরে তাই ফরজ়ানের কথাই বলে চলেছে বন্ধু আসিফ-ফারহানেরা।

নারকেলডাঙা থানা এলাকার রাজা রাজনারায়ণ স্ট্রিটে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত ফরজ়ানের বাড়ির উল্টো দিকের বাড়িতে থাকে বছর তেরোর মহম্মদ আসিফ আলি। তার পাশের ঘরেই বসবাস সমবয়সি ফারহান আনসার আলির। দু’জনেই ফরজ়ানের ছেলেবেলার বন্ধু। নারকেলডাঙার মোমিন হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া ওই তিন বন্ধু প্রায়দিনই একসঙ্গে স্কুলে যেত। এ দিন আসিফ বলে, ‘‘পড়াশোনায় ভাল ছিল ফরজ়ান। নানা রকম জিনিসও বানাতে পারত। ওর বুদ্ধির জন্য আমরা ওকে সায়েন্টিস্ট বলে ডাকতাম।’’ আসিফ জানায়, শনিবার দুপুর ১টা থেকে স্কুলে ইতিহাস পরীক্ষা ছিল। তাই সাড়ে ১২টা নাগাদ ফরজ়ানকে স্কুলে যাওয়ার জন্য ডেকেছিল সে। একসঙ্গে স্কুলে গিয়ে অবশ্য দু’জনে আলাদা আলাদা সেকশনের ক্লাসে পরীক্ষা দিতে চলে যায়। আর এক বন্ধু ফারহান বলে, ‘‘শনিবার একই বেঞ্চে বসে দু’জনে পরীক্ষা দিই। পরীক্ষার মধ্যেই ফরজ়ান আমায় বলে, তোর আগে শেষ হয়ে গেলে বাইরে আমার জন্য দাঁড়াবি। আমি বেরোনোর কিছু পরে ও বেরিয়ে আসে। দু’জনে একসঙ্গে বাড়ি ফিরি। ফেরার পথে ফরজ়ান বলেছিল, রবিবার মাঠে খেলতে যাবে।’’

ফরজ়ানের সঙ্গে স্কুলে গেলেও একসঙ্গে ফেরা হয়নি আসিফের। তবে বাড়ি ফিরে দেখা হয়েছিল দুই বন্ধুর। তার পর বৃষ্টি এসে যাওয়ায় টিউশন পড়ার জন্য ফরজ়ান চলে যায়। আসিফের সঙ্গে সেই তার শেষ দেখা।

পরিবার সূত্রের খবর, শনিবার দুপুর ২টো নাগাদ স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে খাওয়াদাওয়া করে টিউশন পড়তে চলে যায় ফরজ়ান। সেখান থেকে ফেরার পথেই ঘটে ওই দুর্ঘটনা। মৃত কিশোরের দুই বন্ধু জানাচ্ছে, ক্রিকেট-ফুটবল দুটোই খেলত ফরজ়ান। বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে গুল ময়দানে খেলত ওরা। বৃষ্টি হলে ফুটবল আর না-হলে ক্রিকেট— ছুটির দিনে এই ছিল তাদের রুটিন। তবে ফরজ়ান ফুটবলের থেকে ক্রিকেটটাই বেশি ভাল খেলত। ‘‘ছুটির দিন ছাড়া ও খেলতে যেত না। মাকে ভয় পেত। রবিবার খেলতে যাওয়া নিয়ে স্কুল থেকে ফেরার সময়ে কত কথা বলল। সেটাই শেষ, আর কথা হয়নি।’’ ছলছল চোখে বলে বন্ধুহারা ফারহান।

অন্য বিষয়গুলি:

Narkeldanga Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy