Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Kasba Harassment case

কসবার নিগ্রহে নাম জড়াল পুরপ্রতিনিধি ও তাঁর গাড়িচালকের

এই ঘটনার পিছনে স্থানীয় ১০৭ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি লিপিকা মান্না ও তাঁর গাড়িচালক সঞ্জয় মল্লিক জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন নবীন সঙ্ঘ নামে ওই ক্লাবের সদস্যেরা।

হালতুর ক্লাবে ভাঙচুরের পরে। রবিবার।

হালতুর ক্লাবে ভাঙচুরের পরে। রবিবার। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০২৪ ১০:০২
Share: Save:

কলকাতা পুরসভার এক পুরপ্রতিনিধির গাড়িচালকের বিরুদ্ধে এক নাগরিককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। সেই ঘটনা ধামাচাপা দিতে নিগৃহীতকে টাকা দিতে চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বয়ং পুরপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে। দক্ষিণ কলকাতার হালতুর ঘটনা। সেখানে শনিবার গভীর রাতে একটি ক্লাব ও সংলগ্ন স্থানে ভাঙচুর চালানো হয়। মারধর করা হয় এক দম্পতিকে। অভিযোগ ওঠে পুরপ্রতিনিধির গাড়িচালকের বিরুদ্ধে। রবিবার রাত পর্যন্ত অভিযুক্তেরা কসবা থানা তথা কলকাতা পুলিশের নাগালের বাইরে রয়েছে। এ নিয়ে কথা বলতে চাইলেও ফোন ধরেননি পুরপ্রতিনিধি।

এই ঘটনার পিছনে স্থানীয় ১০৭ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি লিপিকা মান্না ও তাঁর গাড়িচালক সঞ্জয় মল্লিক জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন নবীন সঙ্ঘ নামে ওই ক্লাবের সদস্যেরা। তাঁরা জানান, গত ডিসেম্বর থেকে পুরপ্রতিনিধির সঙ্গে ক্লাবের টানাপড়েন চলছে। অভিযোগ, লিপিকা চেয়েছিলেন নির্বাচন না করিয়ে ক্লাবের সঙ্গে তাঁর মনোনীত লোকজনকে জুড়তে।
ক্লাবের কর্মকর্তা উত্তম মণ্ডলের কথায়, ‘‘ডিসেম্বরে পুরপ্রতিনিধি দুষ্কৃতীদের নিয়ে ক্লাবের ভোট নিয়ন্ত্রণ করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু পারেননি। কলকাতা পুলিশের নজরদারিতে ক্লাবের ভোট হয়। তার পর থেকেই টানাপড়েন শুরু।’’

ঘটনাচক্রে সেই সময়েই সেখান দিয়ে ফিরছিলেন ক্লাবের সদস্য তিন দম্পতি। তাঁদের মধ্যে সমীরণ সাহা নামে এক জন ভাঙচুরের প্রতিবাদ করেন। অভিযোগ, এর পরেই সমীরণের উপরে চড়াও হয় দুষ্কৃতীরা। তাঁকে রাস্তায় ফেলে মুখে, বুকে-পেটে লাথি মারা হয়। চোখ-মুখে আঘাত লাগে সমীরণের। স্বামীকে বাঁচাতে গিয়ে প্রহৃত হন সমীরণের স্ত্রী মৌ-ও।

হালতুর ওই ক্লাবের অদূরেই বাড়ি সমীরণদের। এ দিন ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, মারের চোটে ফুলেছে চোখমুখ। আঘাত লেগেছে মৌয়ের চোখেও। তিনি বলেন, ‘‘ওরা ক্লাবের দরজায় লাথি মারছে, ভাঙচুর করছে দেখে সমীরণ ওদের বারণ করেছিল। তখনই ওকে রাস্তায় ফেলে মারধর করে। এলোপাথারি লাথি মারে। আমাদের তিন মহিলাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়। আজ যখন স্বামীকে হাসপাতালে নিয়ে যাই, তখন পুরপ্রতিনিধি টাকা দিতে চেয়েছিলেন। আমরা প্রত্যাখ্যান করি।’’

এ দিন ওই ক্লাবের সদস্যেরা জানান, অনাদিরঞ্জন দাস নামে এক সদস্যকেও হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছিল। এ দিন তিনি ছাড়া পেয়েছেন। এ দিকে, ঘটনার পরে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও কেউ গ্রেফতার না হওয়ায় হতাশ ক্লাবের সদস্যেরা ও ওই দম্পতি। পুলিশের দাবি, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখা হচ্ছে। প্রহৃতদের দাবি, তাঁরা অভিযুক্তদের নাম, ছবি সবই কসবা থানায় দিয়েছেন।

এ দিকে পুরপ্রতিনিধি লিপিকা মান্না জানান, ভাইফোঁটার জন্য তিনি মেদিনীপুরের বাড়িতে গিয়েছেন। তাঁর দাবি, তাঁর নিজস্ব গাড়িচালক নেই। কোনও কোনও সময়ে তাঁর সঙ্গে থাকা ছেলেদের কেউ গাড়িটা চালান। লিপিকা বলেন, ‘‘যাঁর কথা বলা হচ্ছে, সেই সঞ্জয় জানান, তিনিই মারামারি থামিয়ে সমীরণকে বাড়ি পৌঁছে দিয়েছেন। হাসপাতালেও সমীরণ ও তাঁর স্ত্রী আমাকে জানান, যারা মারধর করেছে তাদের ওঁরা চেনেন না। ওয়ার্ডে কারও কিছু হলে যে ভাবে হাসপাতালে যাই, সে ভাবেই গিয়েছিলাম। টাকা দিতে নয়।’’

অন্য বিষয়গুলি:

kasba Sexual Harassment
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE