—ফাইল চিত্র।
সোমবার, সপ্তাহের প্রথম কাজের দিন যানজটের হাল দেখে টালা ব্রিজে আবার বাস বা মিনিবাস চালানোর সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে নবান্ন। প্রশাসনের অন্দরের খবর, ঝুঁকি খুব বেশি না হলে, পুজো শেষ হওয়া পর্যন্ত অন্তত বাস চালানো যায় কি না, তা-ই দেখতে চাইছে তারা। সে কারণে আজ, মঙ্গলবার মুখ্য সচিব রাজীব সিংহের নেতৃত্বে আবার প্রশাসনিক বৈঠক হবে।
সন্ধ্যায় দক্ষিণ কলকাতার একটি পুজোর উদ্বোধনের পরে টালা ব্রিজের যামুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আগে তো কেউ দেখেনি। আমরাই দেখতে শুরু করেছি। দেখতে গিয়ে বলে দিচ্ছে, সবটাই খারাপ। সবই একসঙ্গে খারাপ হয়ে গেলে সেগুলি একসঙ্গে মেরামত করতে গেলে তো পুরো এলাকাটাই স্তব্ধ হয়ে যাবে। আমরা না পারছি ওগড়াতে, না পারছি গিলতে।’’
সেতু বন্ধ থাকায় যানজটও যে পোহাতে হচ্ছে, সে প্রসঙ্গে মমতার মন্তব্য, ‘‘যানজট তো ইচ্ছে করে করছি না! একে বর্ষা। তার উপর মাঝেরহাট ব্রিজ বন্ধ থাকায় সমস্যা বাড়ছে। মানুষের দিকেও দেখতে হচ্ছে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ রেখে কাজ করতে হচ্ছে।’’ মাঝেরহাট সেতু মেরামতির অনুমতি দু’তিন দিন আগে মিলেছে জানিয়ে মমতা বলেন, ‘‘আগে অনুমতি পেলে কাজটা আগেই হয়ে যেত। ওখানকার জন্য সব মালপত্র আনা আছে। খালি অনুমতির জন্য আমরা এক বছর ধরে অপেক্ষা করছি।’’
প্রসঙ্গত, টালা ব্রিজের হাল দেখে তা পুরোপুরি বন্ধ করার পক্ষেই প্রাথমিক সুপারিশ করেছিল রেলের আওতাধীন সমীক্ষক সংস্থা ‘রাইটস’। যদিও তাদের সঙ্গে কথা বলার পর পুজোর মুখে ব্রিজে লরি, বাস বন্ধ করে ছোট গাড়ি চালাচ্ছে রাজ্য।
সোমবার টালা ব্রিজ নিয়ে নবান্নের বৈঠকে এ দিনের যানজট পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন প্রশাসনিক কর্তারা। এ দিন ওই রাস্তায় গাড়ির চাপ রবিবার ছুটির দিনের তুলনায় অনেক বেশি ছিল। সরকারের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘যাত্রীদের হয়রানির কথা মাথায় রেখে সব দিক বিবেচনা করা হচ্ছে। তবে কোনও ঝুঁকি নেওয়া হবে না। বাস চলবে কি না, চললে কত দিনের জন্য— ট্র্যাফিক পরিস্থিতি ফের খতিয়ে দেখে সরকার সেই সিদ্ধান্ত নেবে।’’
একের পর এক সেতুর স্বাস্থ্য খারাপের কারণ হিসেবে মমতা প্রকারান্তরে বাম জমানাকে দায়ী করে বলেন, ‘‘অনেক সেতু তৈরি করে রেল। আর রাস্তাটা করে রাজ্য সরকার। মাঝেরহাট ব্রিজে রেলের তৈরি অংশটাই ধসে পড়েছে। দীর্ঘদিন এগুলি রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়ার ফলেই এমন হচ্ছে।’’ চেতলা, তালতলা, চিৎপুর ব্রিজেরও অবস্থা খারাপ বলে জানিয়ে মমতা বলেন, ‘‘আগে কেউ দেখেনি। এখন আমি কী করব? সব ক’টা ভেঙে দেব? তা হলে মানুষ যাতায়াত করবে কী ভাবে? আর রাজ্য সরকারেরও কিছু বাধ্যবাধকতা আছে। রেখে দিলেও কেউ মারা গেলে তখন তো আমাকেই ধরবে!’’ আস্তে আস্তে সবক’টার মেরামতির কাজ করার চেষ্টা হচ্ছে বলে মমতা জানান। তাঁর কথায়, ‘‘৫০, ৬০, ৭০ বছর আগে সেতুগুলো তৈরি করে গিয়েছে। তার পর কেউ দেখেনি। রক্ষণাবেক্ষণও হয়নি। রক্ষণাবেক্ষণের একটা প্রক্রিয়াও তো থাকা দরকার। রক্ষণাবেক্ষণের কাগজপত্রও তো পাওয়া যায় না। ভিতরে কী আছে, বাইরে কী আছে, দেখা যাচ্ছে না!’’
এ দিন রেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও বৈঠকে আলোচনা করেছেন প্রশাসনিক কর্তারা। রেলওয়ে ওভারব্রিজগুলির (আরওবি) রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে কথা হয়েছে। টালা ব্রিজ পুরোপুরি বন্ধ করে সংস্কার করতে বা ভেঙে ফেলতে হলে, সংলগ্ন এলাকায় একটি লেভেল ক্রসিং তৈরি করতে হবে বলে মনে করছেন প্রশাসনের অনেকেই। সেই প্রসঙ্গে শিয়ালদহ শাখার ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার (ডিআরএম) প্রভাস দানসানা এ দিন বলেন, ‘‘ব্রিজ সম্পর্কে সরকার কী সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, তা দেখেই পদক্ষেপ করা হবে।’’ তবে ওই এলাকায় প্রচুর লাইন থাকায় সেখানে লেভেল ক্রসিং তৈরি করা মুশকিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy