Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Crime

গেঞ্জি কারখানায় শ্রমিকের দেহ উদ্ধার ঘিরে রহস্য

পুলিশ জানায়, মৃতের নাম সিদ্ধার্থ সাহানা (২৬)। তিনি বেনিয়াটোলার একটি গেঞ্জির কারখানায় কাজ করতেন।

মর্মান্তিক: এই ধরনের মেশিনের ব্লেডেই গলা কেটেছে সিদ্ধার্থ সাহানার (উপরে)। নিজস্ব চিত্র

মর্মান্তিক: এই ধরনের মেশিনের ব্লেডেই গলা কেটেছে সিদ্ধার্থ সাহানার (উপরে)। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০২:২৮
Share: Save:

এক শ্রমিকের অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে রহস্য তৈরি হয়েছে।

ময়না-তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট দেখে পুলিশ ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলে মনে করছে। যদিও মৃতের পরিবারের দাবি, ওই যুবক খুন হয়েছেন। তবে মৃতের পরিবারের তরফে থানায় কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।

পুলিশ জানায়, মৃতের নাম সিদ্ধার্থ সাহানা (২৬)। তিনি বেনিয়াটোলার একটি গেঞ্জির কারখানায় কাজ করতেন। বৃহস্পতিবার ওই কারখানায় গেঞ্জি কাটার যন্ত্রের ব্লেডে গলা কাটা অবস্থায় সিদ্ধার্থের দেহ উদ্ধার হয়। তিনি আদতে বাঁকুড়ার ইন্দপুর থানার নিয়ামতপুর গ্রামের বাসিন্দা।

ঘটনার পরে তাঁর পরিবারের অভিযোগ, গেঞ্জি কাটার ব্লেডে গলা কেটে কোনও ভাবেই তিনি আত্মহত্যা করতে পারেন না। সিদ্ধার্থের পরিবার ও বাবা মৃত্যুঞ্জয়বাবুর দাবি, জোড়াবাগান থানার পুলিশের ফোন পেয়ে তাঁরা শুক্রবার কলকাতায় আসেন। তাঁদের দাবি, পুলিশ জানিয়েছিল সিদ্ধার্থ অসুস্থ। এ দিন শহরে পৌঁছে তাঁরা ছেলের মৃত্যুর খবর পান।

মৃত্যুঞ্জয়বাবুর দাবি, বৃহস্পতিবারই তাঁর ছেলের বাঁকুড়ার বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল। তিনি বলেন, ‘‘যে ছেলের বাড়ি ফেরার কথা ছিল, সে কী ভাবে আত্মহত্যা করতে পারে!’’

ময়না-তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টের পরে পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের গলায় যে আঘাত মিলেছে, সেটির ধরন দেখে মনে হচ্ছে তিনি নিজেই গলা কাটার চেষ্টা করেছিলেন। পাশাপাশি কোনও কারণে সিদ্ধার্থ গত দু’-তিন সপ্তাহ ধরে খাবার খাচ্ছিলেন না। কারখানার অন্য শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে তা জানা গিয়েছে বলে পুলিশের দাবি। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই কারখানার মালিকের সঙ্গেও কথা বলেছেন তদন্তকারীরা।

শুক্রবার বেনিয়াটোলা স্ট্রিটের গেঞ্জি কারখানায় গিয়ে দেখা গেল পুলিশ সেটি বন্ধ করে দিয়ে গিয়েছে। ওই জায়গায় একাধিক গেঞ্জি কারখানা রয়েছে। মূলত গেঞ্জির সুতো তৈরি এবং বোনার কাজই হয় ওই সব কারখানায়। তবে যে কারখানায় সিদ্ধার্থ কাজ করতেন সেখানে গেঞ্জি কাটাও হত। স্থানীয় সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার দুপুরে সিদ্ধার্থের হাতে চাবি দিয়ে কারখানার মালিক বাড়িতে খেতে চলে গিয়েছিলেন। অন্য শ্রমিকেরাও সে সময়ে ছিলেন না। কিছু ক্ষণ পরে দাদাকে ফোন করে মালিকের ভাই জানান, সিদ্ধার্থ রক্তাক্ত অবস্থায় কারখানায় পড়ে রয়েছেন।

সিদ্ধার্থের পরিজনদের দাবি, তাঁরা জেনেছেন, ওই কারখানার শ্রমিকেরা সেখানেই থাকেন। সেখানেই তাঁরা রান্না করে খান। ফলে সিদ্ধার্থের আত্মীয়দের প্রশ্ন, সিদ্ধার্থকে একা কারখানায় রেখে বাকি শ্রমিকেরা কোথায় গিয়েছিলেন? তাঁরা জানান, সিদ্ধার্থদের পরিবার খুব গরিব। কার্যত তাঁর আয় থেকেই সংসার চলত। তাঁর মা অসুস্থ।

সিদ্ধার্থের গ্রামের লোকজনও এখন কলকাতায়। তাঁদের অভিযোগ, পুলিশ অভিযোগ নিতে চায়নি। উল্টে হুমকি দিয়ে মুখ বন্ধ করার চেষ্টা হচ্ছে। তাঁরা আইনজীবীরও দ্বারস্থ হয়েছেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Death Labour
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy