টিকিট কেটেও আতান্তরে বহু প্রবাসী। প্রতীকী ছবি।
কোভিড পর্ব পেরিয়ে আবার স্বাভাবিক পুজোর গন্ধ বাঙালির নাকে। সারা বছর যে যেখানেই থাকুক, পুজোর ক’টা দিন সবারই গন্তব্য সেই কলকাতা। কিন্তু ঘরে ফেরার মুখেই বড়সড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ট্রেনের জোড়া-গোলমাল। এক দিকে লাইন সারাই, অন্য দিকে রেল অবরোধ। জোড়া বিপত্তিতে বিপদে পড়েছেন বহু মানুষ।
মুম্বই থেকে হাওড়া পর্যন্ত রেলপথে যে দু’টি জায়গায় এখন সমস্যা, তার একটি হল দক্ষিণ-মধ্য রেলের বিলাসপুর ডিভিশন। রায়গড় ও ঝাড়সুগদার মধ্যে লাইনের কাজের জন্য বহু দূরপাল্লার ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। কিছু ট্রেনের যাত্রাপথ সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। ছত্তিসগঢ়ের এই সমস্যার মধ্যেই নতুন বিপত্তি খাস বাংলাতেই। গত মঙ্গলবার সকাল থেকে কুড়মালি আন্দোলনের জেরে দক্ষিণ-পূর্ব শাখায় থমকে গিয়েছে ট্রেন চলাচল। এর ফলে একাধিক ট্রেন বাতিল করতে হয়েছে। বহু ট্রেনের যাত্রাপথ সংক্ষিপ্ত হয়েছে। অবরোধ কবে উঠবে, কেউ জানে না।
করোনা পর্ব থেকেই বিমানের টিকিটের দাম বাড়ছে চড়চড়িয়ে। অগত্যা, ট্রেনই মধ্যবিত্ত প্রবাসীর ফেরার ভরসা। সেই ট্রেনেই মুম্বই, পুণে বা নাগপুর থেকে কলকাতা ফেরা আদৌ হবে কি না তা নিয়েই চিন্তায় স্মরজিৎ, অনুত্তমা, অম্লানের মতো বহু প্রবাসী। অনেক দিন আগে থেকেই বাড়ি ফেরার টিকিট কেটে বসে আছেন সবাই। কিন্তু ট্রেনের সাম্প্রতিক গোলযোগে তাঁরা অনেকেই এখন আতান্তরে।
সল্টলেকের বাসিন্দা অম্লান কর্মসূত্রে মুম্বইয়ে। এ বার পুজোয় সস্ত্রীক বাড়ি ফিরবেন বলে ২৮ সেপ্টেম্বর এবং ১ অক্টোবর, দু’দিনের ট্রেনের টিকিট কেটে রেখেছিলেন। ২৮ তারিখের ট্রেন বাতিল হয়েছে। এ বার অম্লানের আশঙ্কা, ১ অক্টোবরের ট্রেনটাও বাতিল হবে না তো? মধ্য তিরিশের অম্লান বলেন, ‘‘অনেক দিন আগে থেকে টিকিট কাটা। কিন্তু ২৮ তারিখের ট্রেন বাতিল হয়ে গিয়েছে। এই সমস্যার কথা শুনে বিমানের টিকিট খোঁজ করেছিলাম। কিন্তু যা দাম তা আমার সাধ্যের বাইরে। এখন একমাত্র আশা-ভরসা পয়লা অক্টোবরের ট্রেন। সেটাও বাতিল হলে কী করব জানি না।’’
পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক আদিত্য চৌধরি আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘বিলাসপুরে লাইনের কাজ আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে বলে আশা করছি। তখন পূর্ণ গতিতে ওই লাইনে ট্রেন ছুটবে। পুজোর সময়ের কথা ভেবে আমরা ঘুরপথে ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা রেখেছি। কিন্তু অবরোধের জেরে সমস্যা বেড়েছে। অবরোধ কবে উঠবে তা এখনও অজানা। শুধু বিলাসপুরে লাইনের কাজের জন্য খুব অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। রেলকর্মীরা যাত্রীদের সহায়তা করতে সদা প্রস্তুত আছেন। পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা করা হবে।’’
মুম্বই, পুণে, নাগপুর থেকে ট্রেনের টিকিট কেটে বাড়ি ফেরার অপেক্ষায় থাকা কয়েক জন যেমন বলছেন, তাঁদের রেলের তরফে ট্রেন বাতিলের কথা জানানো হয়েছে ঠিকই কিন্তু সেই সংক্রান্ত বিশদ তথ্য দেওয়া হয়নি। ফলে তাঁদের ট্রেন যে বাতিল হয়েছে, তা জানতে পারলেও কবে নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আশা করছেন রেল আধিকারিকরা, তা জানা যাচ্ছে না। পরিস্থিতি এমন যে ট্রেনের মায়া ছেড়ে গাঁটের বাড়তি কড়ি খরচ করে অনেকেই বিমানের টিকিটের খোঁজখবর শুরু করে দিয়েছেন। বাড়তি চাহিদার ফলে এমনিতেই দামি বিমানের টিকিট আকাশ ছুঁয়ে ফেলেছে। স্বভাবতই, টাকা ফেললেও সবাই বিমানের টিকিট পাবেন না। তা হলে বাড়ি ফিরবেন কী উপায়ে? প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাচ্ছেন না পুজোয় মুম্বই থেকে কলকাতা ফিরতে চাওয়া প্রবাসীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy