ছবি:শাটারস্টক
নিউ টাউনে ইউনিটেকের কাছে ঝুপড়ি দোকান থেকে এক মহিলা ও তাঁর সদ্যোজাত পুত্রসন্তানকে উদ্ধার করে বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করেছিল টেকনো সিটি থানার পুলিশ। প্রায় ১৮ দিনের মাথায় শুক্রবার তাঁদের পরিবারের হাতে তুলে দিল বিধাননগর পুলিশ। পুলিশ সূত্রের খবর, মহকুমা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, সেখানকার চিকিৎসক থেকে শুরু করে শীর্ষ আধিকারিকদের প্রচেষ্টায় মা-সন্তানকে সুস্থ অবস্থায় তাঁদের পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া সম্ভব হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, ১৭ অগস্ট অনেক রাতে খবর আসে এক ভবঘুরে মহিলা প্রসব যন্ত্রণায় ছটফট করছেন। পুলিশ পৌঁছনোর আগেই পুত্রসন্তানের জন্ম দেন ওই মহিলা। দ্রুত দু`জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতাল সূত্রের খবর, মহিলার মানসিক সমস্যা থাকায় প্রথম দু`দিন বাচ্চাকে তিনি নিতে চাইছিলেন না। সেই সময়ে বাচ্চাকে খাওয়াতে সমস্যা হয়। তখন হাসপাতালে ভর্তি অন্য মহিলাদের সাহায্য নেওয়া হয়। কোভিড পরিস্থিতি-সহ বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতায় শিশুটির খাওয়ার পৃথক ব্যবস্থাও করা হয়। দু’দিন পরে কিছুটা সুস্থ হয়ে মা সন্তানকে কাছে নেন। কিন্তু তখন শিশুটির জন্ডিস ধরা পড়ে। মা তাকে কিছুতেই ছাড়তে চাইছিলেন না।
সূত্রের খবর, এক সময়ে শিশুটিকে কলকাতার একটি হাসপাতালে রেফার করার কথা ভাবা হয়। তবে হাসপাতালের সুপার নিজে উদ্যোগী হয়ে শিশুটিকে সেখানেই রেখে দেন। মা ও সন্তানের সুরক্ষার দিকে নজরদারি জোরদার করা হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, মানসিক সমস্যার কারণে মহিলা তাঁর পরিচয়, বাড়ির ঠিকানা, কিছুই বলতে পারছিলেন না।
টেকনো সিটি থানার আইসি পার্থ শিকদার ও অন্য পুলিশকর্মীরা মহিলার ঠিকানা খুঁজতে গিয়ে জানতে পারেন, মহিলা সম্প্রতি নিউ টাউনে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। পুলিশের ধারণা হয় মহিলা নিউ টাউনের বাইরের বাসিন্দা।
হাসপাতালে ভর্তি করার পরে ক্রমশ মহিলা সুস্থ হতে থাকায় চিকিৎসকেরা বুঝতে পারেন যে, মায়ের মানসিক সমস্যা সাময়িক। সারিয়ে তোলা সম্ভব। সেই চেষ্টা শুরু হয়। সম্প্রতি মহিলা নিজের নাম, বাড়ির ঠিকানা জানালে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তী থানার সঙ্গে যোগাযোগ করে টেকনো সিটি থানার পুলিশ। পুলিশ জানায়, বাসন্তী থানা ওই মহিলার পরিবারকে খুঁজে পায়। বাসন্তীর খেরিয়া গ্রামে তাঁর বাড়ি। কী করে তিনি নিউ টাউনে গেলেন তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।
পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের হাসপাতালে যেতে বলা হয়। কোভিড পরিস্থিতি এবং আর্থিক কারণে মহিলার পরিবার হাসপাতালে আসতে পারেনি। হাসপাতাল এবং পুলিশের উদ্যোগে এবং বাসন্তী থানার সহযোগিতায় মহিলাকে ফিরে পায়
তাঁর পরিবার।
বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালের সুপার পার্থপ্রতিম গুহ জানান, সন্তান এবং মাকে সুস্থ করে পরিবারের কাছে ফেরত দেওয়া গিয়েছে। এটাই প্রাপ্তি। এর আগে ২০১৭ সালেও মানসিক সমস্যা থাকা এক মহিলাকে ভর্তি করা হয়েছিল হাসপাতালে। ওই মহিলার মানসিক সমস্যা কাটানো যায়নি। প্রয়োজনীয় অনুমতি নিয়ে তাঁকে মানসিক চিকিৎসার জন্য পাভলভে ভর্তি করা হয়। সন্তানকে উত্তর ২৪ পরগনা শিশু কল্যাণ সমিতির মাধ্যমে হোমে পাঠানো হয়েছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy