দুর্যোগে গাছ উপড়ে বন্ধ রাস্তা। শনিবার, সল্টলেকের বিএফ ব্লকে। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য।
একে হঠাৎ নিম্নচাপের জেরে বৃষ্টি, সঙ্গে আবার ধর্মতলায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সমাবেশ। শনিবার রাস্তায় বেরোনো অনেক শহরবাসীই এই দুয়ের জেরে প্রবল ভোগান্তির আশঙ্কা করেছিলেন। কিন্তু বাস্তবে তেমন সমস্যা পোয়াতে হয়নি সাধারণ মানুষকে।
পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার বৃষ্টিতে শহরের রাস্তায় গাড়ি চলাচল কিছুটা ধীরে হলেও তার জেরে খুব একটা সমস্যা হয়নি। আগের রাত থেকে একটানা বৃষ্টি কোনও জায়গায় জল জমার সমস্যা দেখা দেয়নি বলে পুরসভা সূত্রের খবর। তবে শনিবার সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ ট্যাংরা থানা এলাকার পুলিন খটিক রোডে হঠাৎই একটি গাছ ভেঙে আহত হন মা-ছেলে। অন্য দিকে, সল্টলেকে বিএস ব্লকে ২২ নম্বর বাড়ির সামনের রাস্তাতেও ভেঙে পড়ে একটি গাছ। সেখানে অবশ্য কেউ আহত হয়নি। পরে দু’টি গাছই সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ ও পুরসভা সূত্রে খবর, এ দিন সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ পুলিন খটিক রোড দিয়ে যাওয়ার সময়ে হঠাৎই গাছ ভেঙে পড়ে জখম হন মা ও ছেলে। গাছের ডালে আটকে থাকা ওই দু’জনকে স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদের বার করে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে দু’জনকেই ছেড়ে দেওয়া হয়। এ দিকে, গাছ পড়ে যাওয়ার ফলে ওই রাস্তায় যানজট তৈরি হয়। গাছ পড়ার খবর পেয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর স্বপন সমাদ্দার ঘটনাস্থলে যান। ইতিমধ্যে স্থানীয় বিধায়ক স্বর্ণকমল সাহাও কলকাতা পুরসভার উদ্যান দফতরের সঙ্গেও
যোগাযোগ করেন।
পরে কলকাতা পুরসভার উদ্যান দফতরের কর্মীরা এবং দমকলের বিপর্যয় মোকাবিলা দল ঘটনাস্থলে গিয়ে গাছটি কেটে সরিয়ে দেয়। ঘণ্টা খানেক পরে এই রাস্তায় যানজট স্বাভাবিক হয়। পুরসভার উদ্যান দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, এই কাঠবাদাম গাছটি অনেক দিন ধরেই সেখানে ছিল। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, বৃষ্টিতে গাছের গুঁড়ি আলগা হয়ে যাওয়ায় এই ঘটনা ঘটেছে। পুর কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, বর্তমানে এই ধরনের গাছ লাগানো হয় না। পুরসভার উদ্যান দফতরের মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার বলেন, ‘‘যে সমস্ত গাছ পড়ে বিপদ হতে পারে, সেই ধরনের গাছ লাগানো কয়েক বছর ধরেই বন্ধ। দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য ইতিমধ্যে যে সমস্ত গাছের গুঁড়ি আলগা, সেগুলি সমীক্ষা করে সরানোর কাজও শুরু করা হয়েছে।’’
অন্য দিকে, একটানা বৃষ্টি হলেও কোথাও জল জমে ভোগান্তি পোয়াতে হয়নি শহরবাসীকে। কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, ঝিরিঝিরি বৃষ্টি হওয়ার ফলে জল জমতে পারেনি। পুরসভার নিকাশি দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘শুক্রবার রাত থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত শহরে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল গড়ে ১১ মিলিমিটার। এই পরিমাণ বৃষ্টিতে জল দাঁড়ায় না।’’ তবে পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, নিম্নচাপের জন্য শহরে শনি এবং রবিবার ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকায় সমস্ত পাম্পিং স্টেশনগুলিকে সজাগ থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সবক’টি পাম্পই ঠিকঠাক চলছে বলেও
তাঁরা জানিয়েছেন।
শনিবার দুপুর ১টা নাগাদ রানি রাসমণি অ্যাভিনিউতে একটি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সভা ছিল। লালবাজার সূত্রের খবর, সমাবেশ উপলক্ষে শনিবার সকাল ১০টা থেকে শিয়ালদহ হয়ে এস এন ব্যানার্জি রোডে এবং হাওড়া থেকে মহাত্মা গাঁধী রোড দিয়ে বেশ কিছু গাড়ি এলেও তার জেরে শহরের ট্র্যাফিক ব্যবস্থা সামলাতে খুব অসুবিধে হয়নি। তবে দুপুর ১টা থেকে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউতে সমাবেশ শুরু হলে তার জেরে কিছু গাড়ি ঘুরিয়ে দিতে হয় পুলিশকে। জওহরলাল নেহেরু রোড এবং মেয়ো রোডে গাড়িগুলিকে সোজা পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তার উপরে সমাবেশে আসা লোকজন টিপু সুলতান মসজিদ-সহ ধর্মতলার বাজারে ঘুরতে ব্যস্ত হয়ে যাওয়ায় সমাবেশের জেরে ভোগান্তি আরও কমে গিয়েছে বলে পুলিশের একাংশের দাবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy