ছবি: সংগৃহীত
করোনা আক্রান্ত হলে শুধু ফুসফুস নয়, কিডনিরও মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। আর সেটা কখনও কখনও মৃত্যুর কারণ হয়ে উঠছে। ব্রজ রায়ের পরে আরও দু’টি প্যাথলজিক্যাল অটোপসি রিপোর্ট জমা পড়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে। সেই রিপোর্টে কিডনির বিষয়টিও ভাল ভাবে উল্লেখ করেছেন চিকিৎসকেরা।
গত ১৬ মে সল্টলেকের বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় খড়্গপুরের চক্ষু চিকিৎসক বিশ্বজিৎ চক্রবর্তীর। তিনি ভেন্টিলেশনে ছিলেন। ওই দিনই করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় বেলেঘাটার বাসিন্দা ৯৩ বছরের জ্যোৎস্না বসুরও। প্যাথলজিক্যাল অটোপসির জন্য দুই পরিবারই দেহ দান করেন। সেই মতো গত ১৭ মে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দেহ দু‘টির অটোপসি করেন ফরেন্সিক মেডিসিন অ্যান্ড টক্সিকোলজ়ি বিভাগের প্রধান চিকিৎসক সোমনাথ দাস, প্যাথলজি বিভাগের প্রধান চিকিৎসক তুষারকান্তি দাস ও হাসপাতালের সুপার তথা মাইক্রোবায়োলজির শিক্ষক মানস বন্দ্যোপাধ্যায়।
সম্প্রতি ওই দু’টি রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ব্রজবাবুর মতো দু’জনের ফুসফুসের ‘অ্যালভিয়োলাই’ বা ফুসফুসীয় থলির ভিতরে জল জমার ফলে ঝিল্লিগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ফলে অক্সিজেন সঞ্চালন বাধাপ্রাপ্ত হয়েছিল। আবার বিশ্বজিৎবাবুর ফুসফুসের রক্তবাহী নালির মধ্যে খুব সামান্য পরিমাণে রক্ত জমাট বেঁধে থাকতে দেখা গিয়েছে। এ সবের পাশাপাশি জ্যোৎস্নাদেবী ও বিশ্বজিৎবাবুর কিডনির মারাত্মক ক্ষতি হয়েছিল। চিকিৎসকেরা তাঁদের রিপোর্টে জানিয়েছেন, কোভিডের কারণে দু’টি কিডনির-ই অসংখ্য কোষের মৃত্যু ঘটেছিল। রক্ত থেকে নাইট্রোজেনঘটিত বর্জ্য, বিভিন্ন টক্সিক পদার্থ, রঞ্জক, ভেষজ পদার্থ, অতিরিক্ত জলে দ্রাব্য ভিটামিনের মতো বিবিধ অপ্রয়োজনীয় বস্তু কিডনির মাধ্যমে বেরিয়ে যায়। কিন্তু সেখানকার কোষের মৃত্যুর কারণে সেই কাজ ব্যাহত হয়েছে। ফলে শরীরে সেই সব দূষিত পদার্থের পরিমাণ বেড়ে গিয়েছে।
সোমনাথবাবু জানাচ্ছেন, বিদেশে যে প্যাথলজিক্যাল অটোপসি হয়েছে, তাতে ফুসফুসের ক্ষতির কথা উল্লেখ থাকলেও কিডনির সমস্যা চিহ্নিত হয়নি। তিনি বলেন, “কোনও কোনও রোগ, নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর মধ্যে বেশি মাত্রায় প্রভাব ফেলে। অর্থাৎ, বিদেশে কোভিডের কারণে শরীরে যে ক্ষতি হচ্ছিল, তার সবটাই আমাদের দেশে এক রকম নাও হতে পারে। যার পরিণতিতে এখানে ফুসফুসের পাশাপাশি কিডনির ক্ষতিও কোভিডে মৃত্যুর কারণ হিসেবে উঠে আসছে।’’
অন্য দিকে আজ, সোমবার আর জি করে অটোপসি হবে নদিয়ার বাসিন্দা পেশায় চাষি শুকদেব মণ্ডলের। করোনা আক্রান্ত হয়ে গত ১৭ জুন তিনি ওই হাসপাতালেই ভর্তি হয়েছিলেন। পরদিন মারা যান। ‘গণদর্পণ’-এর সম্পাদক শ্যামল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রৌঢ়ের ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিস্তারিত ভাবে অটোপসির গুরুত্ব ব্যাখ্যা করি। তাতে ওই কৃষক পরিবার রাজি হয়ে অটোপসিতে সম্মতি দেয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy