Advertisement
E-Paper

আবর্জনা বা চুলকানির পাউডার ছিটিয়ে লুট সর্বস্ব, ধৃত ৩

গত ১৭ মার্চ এমনই একটি অভিযোগ পাওয়ার পরে জোরদার তদন্ত চালিয়ে অভিযুক্ত তিন কেপমারকে গ্রেফতার করল কলকাতা পুলিশ।

উদ্ধার: ধৃতদের কাছে মিলেছে ছিনতাই হওয়া ব্যাগ, টাকা ও অন্যান্য নথি।

উদ্ধার: ধৃতদের কাছে মিলেছে ছিনতাই হওয়া ব্যাগ, টাকা ও অন্যান্য নথি। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০২১ ০৬:২৭
Share
Save

টাকা তুলে ব্যাঙ্ক থেকে বেরোলেই গায়ে উড়ে আসতে পারে আবর্জনা বা চুলকানি উদ্রেককারী কোনও পাউডার। আর তখন সে দিকে মন দিলেই হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে টাকা ভর্তি ব্যাগ। মুহূর্তের অন্যমনস্কতার সুযোগ নিয়ে সেই ব্যাগ হাতিয়ে চম্পট দেবে কেপমারের দল!

গত ১৭ মার্চ এমনই একটি অভিযোগ পাওয়ার পরে জোরদার তদন্ত চালিয়ে অভিযুক্ত তিন কেপমারকে গ্রেফতার করল কলকাতা পুলিশ। হুগলির ব্যান্ডেলের বাসিন্দা ওই ধৃতদের নাম বাবু মুদালিয়া, রবি প্রসাদ এবং জগন স্বামী। কলকাতার পাশাপাশি একাধিক শহরে এ ভাবেই তারা কেপমারি চালিয়েছে বলে তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিশ। বুধবার আদালতে তোলা হলে ধৃতদের জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

পুলিশ সূত্রের খবর, জাননগর রোডের বাসিন্দা নসিম আখতান নামে এক ব্যক্তি পুলিশে অভিযোগ দায়ের করে জানান, গত ১৭ মার্চ শিয়ালদহের কাছে একটি ব্যাঙ্কের শাখায় টাকা তুলতে গিয়েছিলেন তিনি। ১ লক্ষ ৯০০ টাকা তোলার পরে তা একটি ব্যাগে ভরে ব্যাঙ্ক থেকে বেরিয়েছিলেন তিনি। শিয়ালদহের শিশির মার্কেটের কাছে একটি শৌচাগার থেকে বেরোনোর সময়ে হঠাৎ তাঁর গায়ে কিছুটা আবর্জনা এসে পড়ে। এর পরে শৌচাগারের কলের কাছে ব্যাগটি রেখে নিজের শার্টটি পরিষ্কার করছিলেন তিনি। কিছু ক্ষণ পরেই হঠাৎ দেখেন, ব্যাগটি উধাও। মুচিপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন নসিম।

তদন্তে নেমে পুলিশ ওই শৌচাগারের আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে। সংগ্রহ করা হয় নসিমের ব্যাঙ্কের ওই দিনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজও। দু’টি জায়গাতেই দুই যুবকের ছবি ধরা পড়ে। এর পরে সূত্র মারফত তদন্তকারীরা এক জনের হদিস পান। হুগলির ব্যান্ডেল চার্চের কাছে ওই সন্দেহভাজনের বাড়িতে গিয়ে আটক করা হয় তাকে। সেই সূত্রেই খোঁজ মেলে অন্য দু’জনের। এর পরে সকলকেই লালবাজারে নিয়ে এসে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ধৃতদের মধ্যে রবি নামের এক যুবক জেরার মুখে প্রথমে অপরাধের কথা স্বীকার করে নেয়। এর পরেই তাদের গ্রেফতার করা হয়।

তদন্তকারীরা জানতে পারেন, দেশের একাধিক শহরে একই কায়দায় অভিযান চালিয়েছে ওই যুবকেরা। ব্যাঙ্কের মধ্যে ঢুকে বেশি টাকা তুলছেন, এমন কাউকে চিহ্নিত করত দু’জন। এর পরে শুরু হত ওই ব্যক্তির উপরে নজরদারি। তিনি টাকা নিয়ে বেরিয়ে আসার পরে ফাঁকা জায়গা দেখে তাঁর গায়ে ছুড়ে দেওয়া হত আবর্জনা। কোনও কোনও ক্ষেত্রে চুলকানি হবে, এমন পাউডারও ব্যবহার করা হত। ‘শিকার’ অন্যমনস্ক হলেই তাঁর টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে চম্পট দিত তারা। পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার রাতেই ধৃতদের বাড়ির কাছের একটি ডেরা থেকে নসিমের কেপমারি হওয়া টাকার মধ্যে ৯০ হাজার উদ্ধার হয়েছে। বাকি টাকা ধৃতেরা খরচ করে ফেলেছে বলে জানিয়েছে। পুলিশ অবশ্য এই খরচ করে ফেলার তত্ত্বটিও খতিয়ে দেখছে।

প্রসঙ্গত, কলকাতা পুলিশই দিন কয়েক আগে একই রকম একটি চক্রকে ধরেছিল। তারা নিশানা করত চালক একাই রয়েছেন, এমন গাড়িকে। যানজটে বা পার্কিংয়ে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ির বনেটের উপরে আঠালো কিছু লাগিয়ে দিয়ে সে দিকে চালকের দৃষ্টি আকর্ষণ করত তারা। চালক গাড়ি ছেড়ে নেমে গেলেই উধাও হয়ে যেত গাড়িতে থাকা সব কিছু।

Crime Crime Cases

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}